২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০১:৩৬:৫৯ অপরাহ্ন


হোটেলে গোলাপের সাথে অশোভন আচরণ : রনেল বহিষ্কার
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০৯-২০২২
হোটেলে গোলাপের সাথে অশোভন আচরণ : রনেল বহিষ্কার দরুদ মিয়া রনেল


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘে আগমনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে চরম বিরোধ এবং বিভক্তি দেখা দেয়। এর মূল কারণ হচ্ছে দীর্ঘ দিন থেকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটি না হওয়া। এই বিরোধ এবং বিভক্তি শুধুই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটি কেন্দ্রিক। সারা বছর বিভক্ত গ্রুপ যার যার মত করে অনুষ্ঠান করে। কিন্তু কখনো চরম বিরোধে জড়ায় না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আমেরিকায় আসলেই বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক এলেই নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা থাকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির এবং প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা সাক্ষাতের। যে কারণে তারা অনুষ্ঠানাদি শেষ করেই প্রধানমন্ত্রী যে হোটেলে ওঠেন সেখানে অবস্থান করেন। বলতে গেলে রাত দিন প্রায় ২৪ ঘন্টা সেখানেই তাদের অবস্থান। লক্ষ্য কোনভাবে নেত্রীর দর্শন।

গত কয়েক বছর ধরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন জাতিসংঘে আসেন দলের বিরোধ মিটানো এবং সবার সাথে সমন্বয় করার দায়িত্ব দেয়া হয় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও মাদারিপুর-৩ আসনের এমপি আব্দুস সোবহান গোলাপকে। এবারো তার উপরই ছিলো অলিখিত দায়িত্ব। অন্যান্য বারের মত এবারো তিনি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গ্রুপের সাথে বৈঠক করেছেন এবং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু গোল বাধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কিছু নেতার সাক্ষাতের ব্যবস্থা নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ম্যানহাটানের নিউইয়র্ক লোটে প্যালেস হোটেলে উঠেছিলেন। অপ্রীতিকর এবং অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি ঘটে গত ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৮টা ১৫ মিনিটের সময়। এই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাত করে যুক্তরাষ্ট্র হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ। ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ যখন প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে যান তাদের সাথে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাও যান। ঐক্য পরিষদের নেতাদের সাথে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা কীভাবে গেলেন তা নিয়েই মূলত ক্ষোভের মুখে পড়েন আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি। তিনি তার কক্ষ থেকে লবিতে আসতেই আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের কয়েকজন নেতা তার উপর ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। তার সাথে তারা আশোভন আচরণ করেন। কেউ কেউ অশ্লীল ভাষায় গালাগালও দিয়েছেন। যে সব বিশ্রি গালাগাল দেয়া হয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয় বলে প্রত্যক্ষদর্শী অনেকেই এই প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন।

এই পরিস্থিতিতে আব্দুস সোবহান এমপি হোটেল লবি থেকে চলে যান। ঘটনা এখানেই শেষ নয়। আব্দুস সোবহান এমপির সাথে অশোভন আচরণের বিষয়টি উপস্থিত কেউ কেউ ভিডিও করেন। তার অংশ বিশেষ দিয়ে দেয়া হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেখানে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি দরুদ মিয়া রনেল বলেন, আমরা গোলাপের রাজনীতি করি না, আমরা জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি করি, আমি এমপি, মন্ত্রী হবো না, গোলাপ ভাই এমপি মন্ত্রী হবেন। অন্য একজন বুঝানোর চেষ্টা করে রনেল ক্ষেপে বলেন, গোলাপ ভাই’র...। আরেক জন বললেন, তাকে ভাই বললেন না, আসলে সে একটা (গালি)।

এই অপ্রীতিকর ঘটনার পর দুরুদ মিয়া রনেলকে যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতির পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের দপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক আজিজ গত ২৬ সেপ্টেম্বর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ নেতার নামে অশোভন ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার বর্হিভূত বাক্য বিনিময় করে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি দুরুদ মিয়া রুনেলকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার। অদ্য ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, সোমবার বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজি মেজবাউল হোসেন সাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু এই নির্দেশ প্রদান করেন।

এ ব্যাপারে দুরুদ মিয়া রনেল বলেন, আসলে এটা আমার করা ঠিক হয়নি। কিন্তু অনিয়ম দেখলেই আমার মাথা গরম হয়ে যায়, নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি না। যে কারণ এমনটি হয়েছে। আমি এ জন্য দু:খিত। আরেকেটি সূত্রে জানা গেছে, আরো যারা অশোভন আচরণ এবং গালি দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন