১৬ এপ্রিল ২০১২, মঙ্গলবার, ১০:৫৭:২১ পূর্বাহ্ন


১০ ডিসেম্বর : কী ঘোষণা আসছে বিএনপির
মাসউদুর রহমান
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-১০-২০২২
১০ ডিসেম্বর : কী ঘোষণা আসছে বিএনপির


ঢাকায় ১০ ডিসেম্বর মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। এটা পুরোনো খবর। কিন্তু এ সমাবেশ ঘিরে সরকার ও  বিরোধীপক্ষে নতুন উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন এসেছে, বিএনপি মহাসমাবেশ করবে এটাতে এমন আর কী। রাজনীতিতে সভা-সমাবেশ গণতান্ত্রিক অধিকার। যে কেউই সেটা করতে পারেন। এর আগে বিএনপিও বহুবার করেছেন। ক্ষমতাসীনরাও বহু সমাবেশ করে আসছেন। বাংলাদেশের রাজনীতির ধারা এমনই। কিন্তু হঠাৎ এমন কী হলো ১০ ডিসেম্বরের মহাসমাবেশ ঘিরে ওই উত্তেজনার সৃষ্টি? 

কেন ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ  

বিএনপি দেশে চলমান নানা সংকটের প্রতিবাদে যে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে তৃণমূল থেকে সর্বস্তরে। তার একটা পরিসমাপ্তি বা একটা স্তরের শেষ হলো ১০ ডিসেম্বরের ওই সমাবেশ। 

বর্তমানে দলটি ঢাকা মহানগরীর ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ধারাবাহিক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করছে বিএনপি। এতে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ কর্তৃক বাধাগ্রস্ত হয়েছে। সংঘর্ষ হয়েছে। ধরপাকড়ও আছে, মামলাও খেয়েছে। তবু এ কর্মসূচি স্থগিত বা বন্ধ করেনি। যতোদূর সম্ভব চালিয়ে গেছে তারা। মহানগরীর ওয়ার্ড সমাবেশ, বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে দেশের আট বিভাগে গণসমাবেশ করার কর্মসূচি দিয়েছে দলটি। আর এ বিভাগীয় গণসমাবেশ শেষে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় ওই মহাসমাবেশ করার ঘোষণা ও প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। এ ব্যাপারে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয় দলের নীতিনির্ধারকরা। 

কী ঘোষণা আসতে পারে ওই সমাবেশ থেকে 

আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ থেকে যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা ঘোষণার প্রস্তুতির কথা শোনা যাচ্ছে। এর মধ্যে সংসদ থেকে নিজ দলের এমপি (৭) পদত্যাগ। পরবর্তীতে করণীয় বা যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা ঘোষণা এবং নির্দলীয় সরকারের রূপরেখা তৈরি করে তা জাতির সামনে তুলে ধরা এবং সেটা কীভাবে গঠনতন্ত্র অনুসারে হতে পারে সে উপায় বের করে উপস্থাপন করা। 

সরকারের বাকি ১৩ মাস। এ সময়ের মধ্যে আন্দোলনের গতি বাড়াতে সরকার বিরোধী সব দলকে এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসার কাজও দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছেন দ্বিতীয় দফা সংলাপের মাধ্যমে। তবে জানা গেছে, ওই সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা ঘোষণা। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর বিএনপির স্থায়ী কমিটি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের জন্য দ্বিতীয় দফায় সরকার বিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত দলসমূহের সঙ্গে যে দ্বিতীয় দফা বৈঠক করছে সেখানে বিএনপির তৈরি করা ‘৯ দফা খসড়া’ চূড়ান্ত করেছে। ওই দফাগুলো নিয়েই সমমনাদের সঙ্গে আলোচনা এবং সেখানে সংশোধন পরিমার্জনের প্রয়োজন হলে সেটা করেই তার ওপর ভিত্তি করে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়া হবে। এর মধ্যে একটা কথা বেশ শোনা যায়, সেটা হলো ‘একদফা’ (সরকারের পদত্যাগ)। এ বক্তব্য প্রতিটা স্থানেই দিচ্ছেন নেতারা। কিন্তু ১০ ডিসেম্বর মূলত এ একদফা আন্দোলনের ঘোষণাটা দিয়ে দিতে পারেন নেতৃবৃন্দ। এর সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি তো রয়েছেই।  

কেন, কখন, কোন স্থানে ১০ ডিসেম্বরপূর্ব সমাবেশ 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, চলমান আন্দোলনে নেতাকর্মীদের মৃত্যুর প্রতিবাদ, খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে ৮ অক্টোবর থেকে সারাদেশে বিভাগীয় গণসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), যা ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহে বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে দুটি সমাবেশ সম্পন্ন হয়েছে। এখন প্রতিক্ষা ২২ অক্টোবরে খুলনার সমাবেশ ঘিরে। 

এরপর ২৯ অক্টোবর সমাবেশ দেশের উত্তরাঞ্চলের শহর রংপুরে। অক্টোবরে আর কোনো সমাবেশ নেই। নভেম্বরের প্রথম সমাবেশ বরিশালে। ৫ নভেম্বর ওই সভা অনুষ্ঠিত হবে দক্ষিণাঞ্চলের বিভাগটিতে। এরপর ১২ নভেম্বর রাজধানী ঢাকার অদূরে ফরিদপুরে সমাবেশ। বিএনপির পরের সমাবেশটি শাহজালালের পুণ্যভূমি সিলেটে ১৯ নভেম্বর। এরপর ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে নভেম্বরের কর্মসূচি শেষ। ডিসেম্বরে বিভাগীয় পর্যায়ে একটি সমাবেশ রাজশাহীতে ৩ ডিসেম্বর। এরপরই ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণসমাবেশ। 

বিএনপির ৭ এমপি তো এখনো বহাল 

দেশে সরকারবিরোধী একটা জোরদার আন্দোলনের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করার সম্ভাবনা বিএনপির ওই ১০ ডিসেম্বরের সভায়। এর আগে সংসদে থাকা ৭ এমপির পদত্যাগ নিয়ে চলছে আলোচনা। সংসদে নিজ দলের এমপি আর সংসদ ভেঙে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি বিষয়টা একটু অন্যরকম মনে হবে বিধায় এমপিদের ওই পদত্যাগের আলোচনা। তবে জানা গেছে ইতিমধ্যে সংসদে এমপিদের প্রায় সবাই ইতিমধ্যে পদত্যাগে রাজি হয়ে আছেন। বিএনপির কেন্দ্র থেকে সিগন্যাল দিলে তারা পদত্যাগ করে ফেলবে। 

বিএনপি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় কীভাবে? 

বিএনপির দাবি করা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে (তত্ত্বাবধায়ক) নির্বাচন নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলে আসছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এটা আসলেই একটা জটিল পরিস্থিতি। এমনকি সংসদে সংশোধনীর মাধ্যমে বিধান পরিবর্তন না হলে ওই প্রক্রিয়ায় নির্বাচন, তথা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না। ১৯৯৬ সনে আওয়ামী লীগ জামায়াত জোটের কঠোর আন্দোলনের মুখে কেয়ারটেকার সরকারে ক্ষমতা হস্তান্তরে রাজি হয় বিএনপি। কেয়ারটেকার জামায়াতের প্রথম দাবি, যা আওয়ামী লীগ সমার্থন দিয়ে ঐক্যবদ্ধ বা জোট হয়ে সে আন্দোলন করেছিল। বিএনপি ’৯৬-এর ২৭ মার্চ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার-ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে সংসদে ত্রয়োদশ সংশোধনী পাস করে।  

ওয়ান-ইলেভেনের সরকারের পর ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করে দেয়। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আর কোনো বিধান নেই বাংলাদেশে।

তবু কেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারই চায় বিএনপি? এ প্রশ্নটা চলে আসছে। বিএনপি এর জবাবে বলছে, আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক বিধান বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮ সনে নির্বাচন অনুষ্ঠান করেছে। সে নির্বাচনে বিরোধীদলকে দাঁড়াতেই দেয়নি মাঠে। ফলে এক তরফা নির্বাচন হয় যাতে ২০১৪ সনে বিএনপি ও সমমনা দলসমূহ বয়কট করে নির্বাচন। আর ২০১৮ সালেও বিরোধীদলের নেতাকর্মী ও প্রার্থীদের অনেককে হুমকি-ধমকির মধ্যে রেখে তাদের সহযোগীদের ব্যাপক ধরপাকড় চালানো হয়। এতে বিএনপি সমমনারা কোণঠাসা হয়ে যায়। এমনকি ওই ভোট আগের দিন রাতেই বেশিরভাগ স্থানে সম্পন্ন হয় বলে অভিযোগ। ফলে ওই দুইবারই ভোট দিতে কেন্দ্রে যায়নি মানুষ বা ভোটার। বিএনপি ভোটের স্বার্থে সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার ফেরাতে ও নিরপেক্ষভাবে সাধারণ মানুষ যাতে তাদের নেতা নির্বাচন করতে পারে সে গণতন্ত্রের দাবিতে আবারো তত্ত্বাবধায়কে ফিরতে মরিয়া।  এতে করে তারা এবার যে রূপরেখা দিতে চায়, সেখানে ত্রয়োদশ সংশোধনীকে ভিত্তি করে নির্দলীয় সরকারের রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে বলেই জানা গেছে। সেখানে পুরোপুরি ত্রয়োদশ সংশোধনী তুলে ধরা হবে না। সংবিধানের ভেতর থেকেই কীভাবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করা সম্ভব তার কয়েকটি ফরমুলা দেয়া হবে বলে জানা গেছে। 

এতে করে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে এ সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে। সরকারের পদত্যাগের আগেই নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে বলে লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে বিএনপি।

১০ ডিসেম্বর ঘিরে পক্ষ-বিপক্ষে যে হুমকি-ধমকি চলছে 

বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশগুলো এখন ক্ষমতাসীনদের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষমতাসীনদের মধ্যে যারা নিয়মিত বক্তব্য দিয়ে আসছেন, তাদের প্রায় সবাই বিএনপিকে নিয়ে ব্যাতিব্যস্ত। দেশে আরো অনেক সমস্যা বিদ্যমান। বিদ্যুৎ লোডশেডিং বাড়ছে ক্রমশ। বাজার লাগামহীন। সেটা নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ও মানুষকে শান্তনা দেয়ার কথা রেখে বিএনপিকে হুমকি-ধমকি দিয়ে চলছেন তারা। বিএনপি অবশ্য এটাই চাচ্ছে। যাতে তাদের নিয়েই ব্যতিব্যস্ত থেকে জনগণ ও জনগণের চাহিদা পূরণের কাজকর্ম থেকে দূরে চলে আসুক। এটাতে মানুষের তিক্ততা বেড়ে যাবে আওয়ামী লীগের ওপর। 

অনুষ্ঠিত হওয়া চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ জনসভাতে যেতে বাধাদান ও নিরুৎসাহিত করতে উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে কিছু সংখ্যক অতি উৎসাহীদের। এটাতে বরং ক্ষতিটা আওয়ামী লীগেরই হচ্ছে। কারণ ভোটের হিসাব ভোটের আগের দিন বা শেষ রাতে। ফলে গণতান্ত্রিক অধিকারে বাধা দিলে তাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বৃদ্ধি পেয়ে যায় বৈকি! 

বিএনপিও বিভিন্ন বিভাগের সমাবেশে প্রতিপক্ষের বাঁধাদানের ধরনগুলো থেকে শিক্ষা নিচ্ছে। বিভাগীয় পর্যায়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে ১০ ডিসেম্বর তারা যাতে সফল হতে পারে হয়তো সে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কারণ অতীতে দেখা গেছে বিএনপির ঢাকার সমাবেশ কেন্দ্র করে আগের দিন অনেকটাই অঘোষিত হরতাল পালন হয়ে গেছে। স্টেশনগুলো থেকে বাস ছাড়তে বারণ। লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়া। রাস্তায় রাস্তায় আটকে দেয়া। 

ওই সমস্ত লক্ষণ কিছু কিছু চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহে এবারো হয়েছে বলে খবর বেরিয়েছে। ফলে সমাবেশস্থলে আসতে উৎসাহীরা বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করবে বলেই মনে হচ্ছে। ওই দুটি জনসভাতেই প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি জনসমাগম হয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামের সমাবেশ সবাইকে বিস্মিত করেছে। বিএনপি শীর্ষ নেতৃবৃন্দও অবাক হয়েছেন। 

ওবায়দুল কাদের, সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপির সমাবেশ নিয়ে বহু মন্তব্য করেছেন। সর্বশেষ তিনি গত রোববার বলেছেন, ‘বিএনপি ঢাকায় ১০ লাখ জমায়েত করলে আওয়ামী লীগ ৩০ লাখ জমায়েত করবে।’ তিনি মূলত বিএনপির ওই দুই সমাবেশে যে লোক সমাবেশ ঘটেছে, সেটা প্রকৃত অর্থেই বাস্তবটা তুলে ধরেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলনে লোক দেখে আমরা ভয় পাই না। তারা যতো লোকের টার্গেট দেয়, ততো লোক কি হয়? অনেকে বলেছে, ৩০ হাজার, ৩৫ হাজার কিংবা ৫০ হাজার লোক হয়েছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছি। আমি বলেছি, চট্টগ্রামে লাখের কাছে লোক হয়েছে। সত্যকে আড়াল করে তো লাভ নেই। সত্যকে আড়াল করবো কেন? এটা আওয়ামী লীগের বহু লোক স্বীকার করতে চায় না। কেউ বলে ২৫ হাজার, ৩০ হাজার।’ তিনি বলেন, আমরা শুধু বিএনপিকে বলি শান্তিপূর্ণ থাকেন; ঢাকায় ১০ লাখ বসান, আমরাও ৩০ লাখ বসাতে পারি। কিন্তু যানজটের কি অবস্থা হবে? অভাব ও কষ্টে রয়েছে এ ধরনের কিছু মানুষ বিএনপির সভা-সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি। 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মহাসচিব বিএনপি 

চট্টগ্রাম ও ময়নসিংহের জনসভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এই সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করে নিরপেক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। সেই সরকার এখানে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। সেই কমিশন সমস্ত রাজনৈতিক দলকে সম্পৃক্ত করে জনগণের গ্রহণযোগ্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করবে। এর মধ্য দিয়ে একটি পার্লামেন্ট গঠন হবে যেটা হবে জনগণের পার্লামেন্ট। যারা আন্দোলনে অংশ নিয়েছে, তারাই গঠন করবে পার্লামেন্ট। যদি সেই পার্লামেন্ট গঠিত হয় তাহলেই এই দেশের যতো সমস্যা আছে তা দূর করা সম্ভব হবে।’ তিনি বলেন, ‘এই সরকার নির্বাচিত সরকার নয়, জনগণের ভোটের সরকার নয়। তারা ২০১৪ সালে বিনা ভোটে ১৫৪ জনকে নির্বাচিত করে সরকার গঠন করে। পরের বার তারা আগের রাতে ভোট গ্রহণের মাধ্যমে সরকার ঘোষণা করেছে। আওয়ামী লীগ গত ১৪-১৫ বছরে এই বাংলাদেশকে শ্মশান করে দিয়েছে। তারা সবকিছু লুট করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা ১০ টাকায় চাল খাওয়াবে বলেছিলেন, এখন চালের দাম ৭০ টাকা। আবার নাকি বিদ্যুতের দাম বাড়াবে। কেন? লুট করার জন্য? ডাকাতি করার জন্য? অথচ আজ দেশের মানুষ না খেয়ে মরছে। আজকে কোনো নিরাপত্তা নেই। দিনেদুপুরে ডাকাতি হয়। র‌্যাবের মতো একটি প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। র‌্যাবকে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কিছু হবে না, নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে এই সরকারকে। কারণ এই সরকারের নির্দেশে গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- ঘটেছে। জাতিসংঘ পরিষ্কারভাবে বলেছে, বাংলাদেশে মানবাধিকার নেই। এখানে গুম হয়, খুন হয়, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- হয়। আমাদের নেতা তারেক জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। আমাদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য এই সরকারকে এখনই পদত্যাগ করতে হবে। শেখ হাসিনা বলছেন- কম খান, কম খরচ করেন। তাহলে আছেন কেন?

শেয়ার করুন