৩০ এপ্রিল ২০১২, মঙ্গলবার, ০১:৪৫:২৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬


একাত্তরের ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না- মেজর (অবঃ) হাফিজ
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-০৩-২০২৪
একাত্তরের ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না- মেজর (অবঃ) হাফিজ


একাত্তরের ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না বলে দাবি করেছেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।

শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে যখন এক দুঃসময় চলছিলো। সেদিন(২৫ মার্চ) পাকিস্তানিরা যে দানবীয় তৎপরতা শুরু করেছে, ভীতি সন্ত্রস্ত্র মানুষ যেভাবে একেবারে আত্মসমপর্ণ জন্য প্রস্তুত… পালিয়ে বেড়াচ্ছে …সেখানে যদি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং ইপিআর মেজর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বিদ্রোহ না করতো তাহলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না। মুক্তিযুদ্ধ না হলে দেশ স্বাধীন হতো না, আজও পাকিস্তান থাকতো।যারা ভারতে পালিয়ে গেছেন সংসদ সদস্যরা তারা ফিরে আসতে পারতো না।”

‘‘ মুক্তিযুদ্ধ ছিলো সাধারণ মানুষের যুদ্ধ। প্রধানত ছাত্ররা যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ রা মার্চ তারিখে স্বাধীন দেশের পতাকা উড়িয়েছিলো … এটাকে আওয়ামী লীগ পাত্তা দেয়নি। ছাত্রদের ভূমিকায় অভিভূত হয়েছি, বিভিন্ন ট্রেনিংয়ে ছাত্র-সাধারণ যুবকদের যুদ্ধে যাওয়ার উৎসাহ আমি স্বচক্ষে দেখেছি।”

গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রী হাছান মাহমুদ জাতীয় প্রেসক্লাবের এক আলোচনা সভায় জিয়াউর রহমানকে পাকিস্তানি চর ও এজেন্ট হিসেবে মুক্তি করেছেন এরকম অভিযোগের পর বিএনপির পক্ষ থেকে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মেজর হাফিজের কাছ থেকে এই ভাষ্য আসলো।

হাফিজ বলেন, ‘‘ যে গণতন্ত্রের জন্য আমরা যুদ্ধ করেছি, এই গণতন্ত্র তারা ধূলিসাৎ করেছে। তার একটা ছদ্মরুপ আমরা এখন দেখতে পারছি… কি ধরণের গণতন্ত্র আওয়ামী লীগ চায়। আজকে মানুষের বাক স্বাধীনতা নাই, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নাই, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নাই।”

‘‘ আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পদলেহনে ব্যস্ত। এজন্য কি আমরা যুদ্ধ করেছিলাম প্রত্যেকটি মুক্তিযোদ্ধার মনে এই প্রশ্ন । আমরা এখনো আশা তরুনদের প্রতি, যুব সমাজের প্রতি তারা আবার জেগে উঠবে। আমি মনে করি, এই ব্যাংক লুট, গণতন্ত্র হত্যা এবং নতজানু পররাষ্ট্র নীতির অবসান একসময় হবেই।”

২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় পাকিস্তানি বাহিনী বর্বরতার কথা উল্লেখ মেজর হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘‘ সেসময় এই যে ঘটনা তারা তখন চিন্তাও করেনি। জনাব শেখ মুজিবুর রহমান এবং আওয়ামী লীগের তারা তখন বিভোর ছিলো পাকিস্তানের রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার জন্যে… । এটা দোষের কিছু নাই তাদের জনগন ভোট দিয়েছে … হতেই পারে। কিন্তু ইতিমধ্যে তাদের(পাকিস্তানি বাহিনীর) প্রস্তুতি নেয়া, তাদের অস্ত্র সম্ভার বৃদ্ধি করা, বিরোধীদেরকে বাঙালিদের বিরুদ্ধে লিপ্ত করা এসব দেখে তাদের(আওয়ামী লীগ) সর্তক হওয়া উচিত ছিলো। কিন্তু তারা এতোই স্বপ্নে বিভোর ছিলেন স্বাধীনতার ডাক তাদেরকে স্পর্শ করেনি।”

‘‘ যখন পাকিস্তান বাহিনী হামলা চালানোর পর  দিক-বেদিক শূণ্য হয়ে যখন লক্ষ লক্ষ মানুষ ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছিলো সেই সময়ে জনগনের পক্ষে দাঁড়ানোর কেউ ছিলো না। রাজনৈতিক নেতারা জনগনকে প্রস্তুত করেন নাই… শুধু বক্তৃতাই দিয়ে গিয়েছিলেন। এই দুঃসময়ে জনগনের ত্রাতা হিসেবে বাঙালির উপযুক্ত সন্তান হিসেবে নির্যাতিত মানুষের হয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন একজন সৈনিক যার নাম মেজর জিয়াউর রহমান। চট্টগ্রাম অষ্ট্ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সামনে তিনি সৈনিকদেরকে একত্রিত করে ঘোষণা দিলেন ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে বলেন যে, আজ থেকে আমরা স্বাধীন, আমার বাংলাদেশকে আমি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করছি এবং এই যুদ্ধে অংশগ্রহন করার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি। এরপরে তিনি ২৭ মার্চে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে আবার স্বাধীনতার ঘোষণা দেন যা সবাই শুনেছেন। এটাই স্বাধীনতা ঘোষণার প্রকৃত ইতিহাস।”

বাংলাদেশে ওই সময়ে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের পাঁচটি ব্যাটেলিয়ানের ৮‘শ বাঙালি সৈনিক যশোর, জয়দেবপুর, গাজীপুর, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের সৈনিকরা বিদ্রোহ ঘোষণার কথাও তুলে ধরেন হাফিজ।

জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলের জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনে উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। আলোচনা সভার ফাঁকে জিয়াউর রহমানের একটি তথ্য চিত্র উপস্থাপন করা হয়।

জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও সদস্য ডা. পারভেজ রেজা কাননের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ঢাকা মহানগর দক্ষিনের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের কাদের গণি চৌধুরী, অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, অধ্যাপক কামরুল আহসান, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী বক্তব্য রাখেন।



শেয়ার করুন