২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০২:৪১:১০ পূর্বাহ্ন


প্রবাসে মুজিবনগর দিবস পালন
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৪-২০২৩
প্রবাসে মুজিবনগর দিবস পালন ওয়াশিংটনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ


প্রবাসে যথাযোগ্য মার্যাদায় মুজিবনগর দিবস পালিত হয়েছে। মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন, ওয়াশিংটন বাংলাদেশ দূতাবাস, জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনসু্যুলেট বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করেছে। এসব অনুষ্ঠানগুলোতে বক্তারা বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে নিতে এ সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন।

ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণের ঐতিহাসিক ঘটনাকে স্মরণ করে ১৭ এপ্রিল ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান কর্তৃক দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু কর্নারে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় দূতাবাসের অন্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনান ডিফেন্স অ্যাটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শাহেদুল ইসলাম ও ফার্স্ট সেক্রেটারি মো. আতাউর রহমান।

পরে ‘মুজিবনগর : বাংলাদেশের প্রথম রাজধানী’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে এক আলোচনা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত ইমরান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা এবং ৩০ লাখ শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, মুজিবনগর দিবস বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অনন্য একদিন এবং মুজিবনগর বাঙালি জাতির বীরত্বের প্রতীক। রাষ্ট্রদূত ইমরান বলেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এ দিন মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা গ্রামের আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে। পরে এই বৈদ্যনাথতলাকেই ঐতিহাসিক মুজিবনগর নামকরণ করা হয়। তিনি আরো বলেন, প্রথম সরকার মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানের ক্ষেত্রে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব অত্যন্ত নিষ্ঠা, দক্ষতা এবং আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করেছে এবং স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক মতামতকে সুসংহত করেছে।

রাষ্ট্রদূত ইমরান মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।

মিনিস্টার (প্রেস) এ জেড এম সাজ্জাদ হোসেনও আলোচনায় অংশ নিয়ে ঐতিহাসিক এই দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন, বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের দীর্ঘ পথচলায় ১৭ এপ্রিল আরো একটি অবিস্মরণীয় দিন।

এর পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চারনেতা এবং মুক্তিযুদ্ধে জীবনদানকারী সব শহিদের আত্মার শান্তি ও মাগফিরাত এবং বাংলাদেশের উত্তরোত্তর শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে একটি বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শেষ হয়। কর্মসূচি পরিচালনা করেন কাউন্সেলর (পলিটিক্যাল-৩) শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি।

নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট

নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে কনস্যুলেটের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। পরে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। 

কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চারনেতার অনন্য অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। মুজিবনগর সরকার গঠনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও ভূমিকা বর্ণনা করেন এবং তা মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বলে তিনি উল্লেখ করেন। মুজিবনগর সরকার দেশে ও বিদেশে মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন ও সমর্থন আদায়ে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখে বলে কনসাল জেনারেল যোগ করেন। কনসাল জেনারেল নতুন প্রজন্মের মাঝে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার ওপর জোর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সবাইকে স্বাধীনতার চেতনা ধারণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করার মধ্য দিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, জাতীয় চারনেতাসহ সব শহিদের রুহের মাগফিরাত ও দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়ার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

শেয়ার করুন