২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৬:২৭:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


সরকারি দল ও বিরোধীদের এক দফায় কি ইঙ্গিত?
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৭-২০২৩
সরকারি দল ও বিরোধীদের এক দফায় কি ইঙ্গিত? বক্তব্য রাখছেন বিএনপি মহাসচিব ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক


১২ জুলাই ২০২৩ ঢাকা মহানগরীর নাভি কেন্দ্রে ১ কিলোমিটার ব্যবধানে সরকারি দল আওয়ামী লীগ এবং প্রধান বিরোধী দল বিএনপি আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বিষয়ে সমাবেশ করে একদফা ঘোষণা করলো। বিরোধী দলের একদফা শেখ হাসিনা নেতৃত্বের বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। 

অন্যদিকে সরকারি দলের একদফা শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে কনস্টিটিউশন অনুযায়ী নির্বাচন। ঢাকা মহানগরীসহ মহানগরের সড়কগুলোতে পাশাপাশি দুই দলের অ্যাকটিভিস্টদের সহিষ্ণু আচরণ করে সভায় যোগদান। কী বিচিত্র বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি? দেশে এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দুটি দল। উদ্দেশ্য দেশের নির্বাচন পরিস্থিতি মূল্যায়ন এটি বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এই দলগুলোর বাংলাদেশে উপস্থিতি পরস্পরবিরোধী দুই রাজনৈতিক দলের আচরণ সংযত হয়েছে বলাই বাহুল্য। কিন্তু দুই দলের সমাবেশের বক্তব্য থেকে জনগণ কোনো সুনির্দষ্ট পথনকশা পেলো না। দেশে এমন পরিস্থিতি নেই যে, আন্দোলন করে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে প্রধান বিরোধী দলসহ সম্মিলিত বিরোধী শক্তি। আর যদি বর্তমান সরকার ছাড়া আলোচনার ভিত্তিতে তথাকথিত দল নিরপেক্ষ নির্বাচনী  সরকার গঠন করা হয় নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন। মানলাম নির্বাচন কমিশনও পরিবর্তন করা হলো। কিন্তু সর্বস্তরে দলীয়করণ হওয়া প্রশাসন দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন এতো কম সময়ে সম্ভব কিনা সন্দেহ আছে। 

এখন জুলাই মাস।  প্রকৃতপক্ষে ডিসেম্বর শেষ বা জানুয়ারি ২০২৪ শুরুতে নির্বাচন করতে হলে সেপ্টেম্বর থেকেই নির্বাচনী সরকার দায়িত্ব নিতে হবে। বাংলাদেশের নির্বাচন কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন নির্ধারণ করে দিবে না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে দেশের প্রভাব সবচেয়ে বেশি সেই ভারত কিন্তু নীরবে কাজ করে চলেছে। রাশিয়া, চীন বা জাপান কিন্তু তাদের বাণিজ্যিক স্বার্থকেই প্রাধান্য দেবে। এমতাবস্থায় সরকারের দেশ শাসন নিয়ে জনগণের একাংশের  মধ্যে বিক্ষোভ থাকলেও নীরব জনগোষ্ঠী ভোট দিতে পারলে সেটি কোন দিকে যাবে বলা মুশকিল। দেশবাসী কিন্তু ১৯৯০ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত বিএনপি, আওয়ামী লীগ দলের শাসন, অপশাসন দেখেছে। কাল দুই দলের কিছু নেতার বাগাড়ম্বর দেখে জনগণ হতাশ হয়েছে।

বাংলাদেশের বাস্তবতা হলো উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। চ্যালেঞ্জ অনেক। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অগ্নিমূল্য, জ্বালানি বিদ্যুৎ সংকট, অর্থনীতি ক্ষয়িষ্ণু।  জনগণ চায় আগামীর চ্যালেঞ্জগুলো কিভাবে মোকাবিলা কীভাবে করা হবে সেই বিষয়ে রাজনৌতিক দলগুলোর পথনকশা জানতে আগ্রহী জনগণ। ২০২৬ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের পর্যায়ে উন্নীত হবে দেশ। মেগা প্রকল্পগুলোর জন্য নেওয়া বিদেশি ঋণের কিস্তি সুদসহ পরিশোধ করতে হবে। জুলাই থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত অনেকগুলো মেগা প্রকল্প চালু হবে। মানুষ উন্নয়নের সুফল পেতে শুরু করেছে। তবে ভোটের ক্ষেত্রে নতুন প্রজনের ভূমিকা কী হবে, তার ওপর নির্ভর করবে আগামীর সরকার। বলতে দ্বিধা নেই বর্তমান অবস্থায় বর্তমান সরকার সুবিধাজনক অবস্থানে আছে।

শেষ কথা

এক দফা হোক আর দশ দফা হোক, কোনো দফা দায়ী নির্বাচন প্রভাবিত করার পরিস্থিতি বাংলাদেশে নেই এখন। রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের কাছে জনঘনিষ্ঠ কর্মসূচি নিয়ে যেতে হবে। তৃণমূলে জনপ্রিয় নেতা-নেত্রীদের মনোনয়ন দিতে হবে। বর্তমান প্রজন্ম অনেক বিচক্ষণ।

শেয়ার করুন