৩০ এপ্রিল ২০১২, মঙ্গলবার, ০৯:০০:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে এবার বন্দুকধারীর গুলিতে তিন আইনশৃংলাবাহিনীর সদস্য নিহত ‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ


প্রধান অতিথি না করলে কনসাল জেনারেল অনুষ্ঠানে যান না
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০৪-২০২৪
প্রধান অতিথি না করলে কনসাল জেনারেল অনুষ্ঠানে যান না কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা


প্রবাসী বাংলাদেশি সেবা দেওয়ার জন্যই নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট প্রতিষ্ঠা করা হয়। সরকার মন্ত্রী বা প্রতিনিধিরা যখনই আসেন তখনই প্রতিশ্রুতি দেন প্রবাসী উত্তম সেবা দেওয়ার জন্য। প্রবাসীদের যেন কোনো অনুবিধা না হয়, সেটি নিশ্চিত করবে বাংলাদেশ কনস্যুলেট। কিন্তু বাংলাদেশ কনস্যুলেটে প্রবাসীদের হয়রানির যেন শেষ নেই। তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হয়েও যারা সেবা নিতে আসেন, তাদের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করেন। তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে মনে হয় প্রবাসীদের উন্নত সেবা দেওয়া তাদের কর্ম নয়, উপরের নির্দেশ পালন করা যেন তাদের একমাত্র ধ্যান এবং কর্ম। এক সময় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ সোসাইটির সহযোগিতায় নিউইয়র্কের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলো ভ্রাম্যমাণ কনস্যুলেট সেবা প্রদান করতেন। বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যালয়, ব্রুকলিন এবং ব্রঙ্কসে এসব সেবা প্রদান করতেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেকেই সপ্তাহে পাঁচ দিন কাজ করেন। তাদের একমাত্র ছুটির দিন শনি এবং রোববার। কিন্তু নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কনস্যুলেট শনি এবং বোরবার বন্ধ থাকে। সুতরাং বাংলাদেশিরা কনস্যুলেট সেবা গ্রহণ করতে পারেন না। কনস্যুলেট সেবা নিতে হলে তাদের ছুটি নিতে হয়। এ বিষয়টি আগের কনসাল জেনারেলদের সঙ্গে বাংলাদেশ সোসাইটির কর্মকতারা বৈঠক করে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন। কনসাল জেনারেলরা ঢাকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করার পর তারা বিষয়টি বুঝতে পারেন এবং ভ্রাম্যমাণ কনস্যুলেট সেবা চালু করেছিলেন। বর্তমা কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা আসার পর এই ভ্রাম্যমাণ কনস্যুলেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কারণ দেখিয়েছেন ঢাকা অডিট কমিটি নিষেধ করেছে। কিন্তু কেন? সেই বিষয়টি কনসাল জেনারেল পরিষ্কার করে বলেননি। অথবা তিন ঢাকার অডিট কর্মকর্তাদের বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন বা বোঝানোর চেষ্টাই করেননি। হয়তো প্রবাসীদের সেবা দেওয়াকে তিনি অহেতুক ঝামেলা মনে করেছেন। সব মন্ত্রী এবং জনপ্রতিনিধই আমেরিকায় এসে বলেন, এই সরকার প্রবাসীবান্ধব সরকার। এটা কী প্রবাসীবান্ধব সরকারের নমুনা? এই প্রবাসীরাই এখন বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। কিন্তু তাদের সেবার ক্ষেত্রে দেখা যায়, নিয়মতান্ত্রিক বা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। কিন্তু কেন? অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, এসব ভ্রাম্যমাণ কনস্যুলেট সেবা থেকে কনস্যুলেটের কোনো গচ্চা হচ্ছে না বা ক্ষতি হচ্ছে না, তাহলে কেন সেবা দেওয়া যাবে না? এমন প্রশ্ন সাধারণ প্রবাসী বাংলাদেশিদের। কনসাল জেনারেলের দায়িত্ব হচ্ছে প্রতিটি প্রাবাসী বাংলাদেশির সেবা নিশ্চিত করা। কিন্তু তিনি সেটা না করে উল্টো হাইকোর্ট দেখানোর চেষ্টা করছেন।

ইদানীং কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদার আরেক বাতিক দেথা দিয়েছে। যত বড় অনুষ্ঠানই হোক না কেন, তাকে প্রধান অতিথি না করা হলে তিনি অনুষ্ঠানে যাবেন না। যে অনুষ্ঠান হাজারের বেশি মানুষের উপস্থিতি সেখানে তাকে প্রধান অতিথি কেন করা হয়নি সেজন্য তিনি যাবেন না। আবার প্রধান অতিথি করলে ২০ থেকে ৫০ জনের অনুষ্ঠানেও তিনি যাবেন। আর আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠান হলে তো কথাই নেই। সেসব অনুষ্ঠানে যখন মন্ত্রী বা এমপি থাকেন, তখন প্রধান অতিথির বিষয়টি আর থাকে না। এমন দ্বিচারিতার অর্থ কি? মন্ত্রী বা এমপি থাকলে অডিয়েন্সে বসে থাকতেও অসুবিধা নেই, কিন্তু অন্য অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি না করলে দিনি সেখানে যাবেন না। অতি সম্প্রতি তাকে বাংলাদেশ সোসাইটি আয়োজিত ইফতার মাহফিল ও কেরাত প্রতিযোগিতায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কনসাল জেনারেলের পক্ষ থেকে তার চামচা মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ফোন করে বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকীর কাছে জানতে চান, আপনাদের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কে? তখন বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক তাকে উত্তর দেন আমাদের অনুষ্ঠানে কোনো প্রধান অতিথি নেই। প্রতি উত্তরে আব্দুল আউয়াল বলতে থাকেন, আমরা শুনেছি আপনাদের অনুষ্ঠানে অন্য একজন প্রধান অতিথি। রুহুল আমিন সিদ্দিকী তাকে বলেন, আমাদের কোনো প্রধান অতিথি নেই, আপনি কার কাছে শুনেছেন আমি বা আমরা জানি না। আমাদের দায়িত্ব ছিল কনসাল জেনারেলকে আমন্ত্রণ জানানো। সেটা আমরা করেছি। বাংলাদেশ সোসাইটি প্রবাসের বৃহৎ সংগঠন সেই অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেলের দেওয়া প্রয়োজন, তাই দাওয়াত দিয়েছি। এখন আপনাদের সিদ্ধান্ত আপনারা কী করবেন। অনুষ্ঠানের দিন দেখা গেল হাজারো মানুষের অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল নেই। একজন সাধারণ কর্মচারীকে পাঠানো হয়েছে। প্রশ্ন হলো, যেখানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনুষ্ঠান সেখানেই সম্ভব হলে কনসাল জেনারেল যাবেন, তাকে প্রধান অতিথি করা না হলে সেই অনুষ্ঠানে যাবেন এটা কেমন কথা? এর ফলে কী সরকারের ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে না ভালো হচ্ছে, এটা প্রশ্নের দাবি রাখে? কনসাল জেনারেলকেই কেন প্রধান অতিথি করতে হবে, এটা বড় প্রশ্ন? সরকারের ভাবমূর্তি যেখানে ভালো হবে, প্রবাসীদের ভালো হবে সেখানেই কনসাল জেনারেলের যাওয়া উচিত বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। আরেক প্রশ্ন অনেকে করেছেন কনসাল জেনারেল কী আব্দুল আউয়ালকে এমন নির্দেশনা দিয়েছেন? নাকি আব্দুল আউয়াল নিজেই এটা করছেন সরকারের ভাবমূর্তি প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে খারাপ করার জন্য তা-ও তদন্তের দাবি রাখে।

শেয়ার করুন