০৩ অক্টোবর ২০২৫, শুক্রবার, ১১:৪৭:৩৯ পূর্বাহ্ন


অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে নাহিদের গুরুতর অভিযোগ
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৯-২০২৫
অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে নাহিদের গুরুতর অভিযোগ নাহিদ ইসলাম


জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী দল এনসিপি এখন খোদ অন্তর্বর্তী সরকারের দিকেই আঙুল তুলছে। সম্প্রতি দলটির কার্যক্রম অনেকটাই স্লো যাচ্ছে। যে স্পিরিট তাদের মধ্যে দেখা গিয়েছিল দল গঠনের পর, সেটা ক্রমশ কমে আসছে। পদত্যাগ করছেন কেউ কেউ, বহিষ্কারও হচ্ছে। ওপেন প্ল্যাটফর্মে যে নাহিদ, সারজিস, হাসনাত, নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী, মাহফুজরা সোচ্চার ছিলেন, তারা এখন কম কথা বলছেন। এর কী কারণ হতে পারে তা ঠাহর করা যাচ্ছে না। নতুন দল গঠন হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ছাত্রদের শক্তির ওপর ভর করেই মূলত এ দলটি।

 কিন্তু ডাকসু ও জাকসুর মতো বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সংসদে তাদের তোড়জোড় নেই বললেই চলে। ফ্রন্টসাইডে থেকে সে লড়াই করেনি তারা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাদের প্রভাব কমে আসছে কি না এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা। এরই মধ্যে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে কঠোর এক বার্তা দিয়েছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সে বার্তা মূলত অন্তর্বর্তী সরকারের দিকে আঙুল তুলে! 

উপদেষ্টা পরিষদে যুক্ত থাকা তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বারবার আওয়ামী ফ্যাসিবাদের টার্গেট হচ্ছেন। তাকে আহত করা হচ্ছে। অপদস্ত করা হচ্ছে। কিন্তু এ ব্যাপারে সরকারের দৃশ্যত কোনো উদ্বেগ নেই, নাহিদ ইসলাম এমন কথাই বলেছেন। সে সরকারে দলটির বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা রয়েছেন সে সরকারের প্রতি অভিযোগ নাকি অভিমান সেটা নিয়েই ব্যাপক আলোচনা। 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সরকার ও উপদেষ্টা পরিষদের ভেতরেও মাহফুজ আলমকে অপদস্থ ও হত্যার মৌন সম্মতি তৈরি করা হয়েছে। এই সরকার ও উপদেষ্টারা মাহফুজদের যথেচ্ছ ব্যবহার করে এখন মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।

ওই পোস্টে নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর লন্ডনে হামলার চেষ্টা হয়েছে। এর আগে আমেরিকায় হামলা ও অপদস্থ করার চেষ্টা করা হয়েছে। বারবার মাহফুজ আলমের ওপর আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের হামলা, কারণ মাহফুজ আলমই টার্গেট। পরবর্তী ধাপে আমরা প্রত্যেকেই টার্গেট হব। আমরা জানি আমাদের জন্য কী অপেক্ষা করে আছে। গোপালগঞ্জে ফ্যাসিস্টদের নৃশংসতা আমরা দেখে আসছি।’ 

তিনি আরো লিখেছেন, ‘মাহফুজ আলমের ওপর হামলার মৌন সম্মতি যারা তৈরি করছে, তারাও ভুগবে। ফ্যাসিবাদ বিভাজনের রাজনীতি করে। মাহফুজ আলম গণঅভ্যুত্থানের পরে অন্তর্ভুক্তি এবং দায় ও দরদের রাজনীতির কথা বলছে। কিন্তু বাংলাদেশ সেই পথে হাঁটেনি। আমরা দেখতে পাইছি ফ্যাসিবাদ বিরোধিতার নাম করে প্রতিক্রিয়াশীল ও প্রতিশোধের রাজনীতি শুরু করছে বিভিন্ন গ্রুপ, যা অবশ্যম্ভাবীভাবে ফ্যাসিবাদকে ফিরায়ে আনবে। সময় প্রমাণ করবে মাহফুজ আলমই সঠিক ছিল, যদি তত দিন উনি বেঁচে থাকার সুযোগ পান।’

এনসিপির আহ্বায়ক আরো লিখেছেন, ‘মাহফুজ আলমের ওপর হামলার ঘটনায় কোনোবারই অন্তর্বর্তী সরকার কোনো স্ট্রং পদক্ষেপ নেয়নি। কোনো শক্ত বার্তা দেয়নি। কোনো উপদেষ্টা বা প্রেস সচিব একটা মন্তব্যও কখনো করেনি। সরকার ও উপদেষ্টা পরিষদের ভেতরেও মাহফুজ আলমকে অপদস্থ ও হত্যার মৌন সম্মতি তৈরি করা হয়েছে। এ সরকার ও উপদেষ্টাগণ মাহফুজদের যথেচ্ছা ব্যবহার করে এখন মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা এগুলো মনে রাখছি। রাজনৈতিকভাবে এর জবাব দেওয়া হবে।’

শেয়ার করুন