০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ৬:৩৬:১৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


প্রেসিডেন্টের বিকল্প কৌশলের ইঙ্গিত
সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতি বাতিলের পথে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-১১-২০২৫
সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতি বাতিলের পথে ইউএস সুপ্রিম কোর্ট


যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে ৫ নভেম্বর ট্যারিফ নীতির বৈধতা নিয়ে বিতর্কের পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৭ নভেম্বর তার বক্তব্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, আদালত তার বিরুদ্ধে রায় দিলে তিনি শুল্ক আরোপের বিকল্প বাস্তবায়ন কৌশল বা ‘গেম টু প্ল্যান’ গ্রহণ করবেন। ১৯৭৭ সালের জরুরি ক্ষমতা আইনের আওতায় ঘোষিত জাতীয় জরুরি অবস্থার মাধ্যমে আরোপিত এসব ট্যারিফ এখন আইনি ঝুঁকিতে পড়ায় আদালতের মতামতকে ট্রাম্প ‘দেশের জন্য ধ্বংসাত্মক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তার বেশির ভাগ হিসেবে, ট্রাম্প এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতিকে কেন্দ্র করে ১৯৭৭ সালের ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ারস অ্যাক্ট অনুযায়ী জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু তিন ঘণ্টার সুপ্রিম কোর্টের বিতর্কের পর তার ট্যারিফগুলো এখন বাতিল হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

তিনজন উদারপন্থী বিচারপতি এলেনা কাগান, সোনিয়া সোটোমেয়র এবং কেটানজি ব্রাউন জ্যাকসন স্পষ্টভাবে ট্রাম্পের জরুরি ক্ষমতার ব্যবহারকে সমর্থন না করার ইঙ্গিত দেন। একই সঙ্গে ছয়জন রক্ষণশীল বিচারপতির মধ্যে অন্তত তিনজন প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস, নিল গোরসাচ এবং অ্যামি কনি ব্যারেট ট্রাম্প প্রশাসনের ট্যারিফের আইনি প্রয়াগের ভিত্তি যুক্তি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। ট্রাম্প তার অর্থনৈতিক ও পররাষ্ট্রনীতির বড় একটি অংশ নির্ভর করিয়েছেন ট্যারিফ ব্যবহারের ওপর। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, আদালত যদি তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে রায় দেয়, তা দেশের জন্য ধ্বংসাত্মক হবে। তবে তিনি বিকল্প কোনো আইন উল্লেখ করেননি যার মাধ্যমে একই ধরনের শুল্ক আরোপ করা সম্ভব।

তিনি বলেন, ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ারস অ্যাক্ট অনুযায়ী জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার ছাড়া অন্য পথগুলো অনেক ধীরগতির হবে। ট্রাম্প সম্প্রতি চীনা আমদানির ওপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ ট্যারিফের হুমকিও দিয়েছেন। ট্রাম্প বলেন, আমি এটি তাৎক্ষণিকভাবে করতে পেরেছি যখন চীনের রেয়ার আর্থ রফতানি নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনার প্রসঙ্গে আমাদের বিরল ধাতু ও ম্যাগনেটের ক্ষেত্রে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তিনি আরো বলেন, এটা দুঃখজনক হবে। আমাদের দেশের জন্য কিছুটা বিপর্যয়করও হবে। আমি যুদ্ধ শেষ করছি এই ট্যারিফগুলোর কারণে। আমেরিকানদের এসব যুদ্ধে লড়াই করতে হতো।

৫ নভেম্বরের মৌখিক শুনানিতে প্রধান বিচারপতি রবার্টস উল্লেখ করেন, আইনে ‘ট্যারিফ’ শব্দটি নেই। ঐতিহাসিকভাবে কোনো প্রেসিডেন্ট বিদেশি দেশগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে এই আইনের আওতায় ট্যারিফ ব্যবহার করেছেন তার নজির নেই। প্রধান বিচারপতি রবার্টস আরো বলেন, ট্যারিফ আসলে একটি কর, যা ট্রাম্প ও হোয়াইট হাউস কর্মকর্তারা এড়িয়ে চলেছেন এভাবে বর্ণনা করতে। এরপর রবার্টস বলেন, কর আরোপের ক্ষমতা সবসময় কংগ্রেসের মূল ক্ষমতা, নির্বাহী শাখার নয়। ট্রাম্পের মনোনীত বিচারপতি গোরসাচ একই মন্তব্য করেন, উল্লেখ করে বলেন, সংবিধান অনুযায়ী জনগণের কাছ থেকে কর আদায়ের ক্ষমতা কংগ্রেসের হাতে। তিনি বলেন, আমেরিকান জনগণের পকেটে হাত দেওয়ার ক্ষমতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এটা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ভিন্ন।

যখন এক প্রতিবেদক রবার্টসের বক্তব্যের প্রসঙ্গে ট্রাম্পকে জিজ্ঞেস করেন যে ট্যারিফ আসলে আমেরিকানদের ওপর কর, তখন ট্রাম্প দাবি করেন, ট্যারিফের খরচ বিদেশি দেশগুলোই বহন করছে। ট্রাম্প বলেন, ‘হ্যাঁ, তারা দিচ্ছে। তারা আমাদের ওপর বিশাল অঙ্কের অর্থের চাপ দিচ্ছে।’

এ মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে এসেছে ট্রাম্প প্রশাসনের আপিলের মাধ্যমে, কারণ একটি ফেডারেল আপিল আদালত গত আগস্টে রায় দেয় যে ট্রাম্পের বেশিরভাগ ট্যারিফ অবৈধ। এ আইনি চ্যালেঞ্জটি এনেছিল ট্যারিফবিরোধী কিছু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। ট্রাম্প আগে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে তিনি ৫ নভেম্বরের মৌখিক শুনানিতে সরাসরি উপস্থিত থাকতে পারেন, তবে শেষ পর্যন্ত যাননি। এর পরিবর্তে ট্রেজারি সচিব স্কট বেসেন্ট শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন