০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ৬:৩৩:২২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


যুক্তরাষ্ট্র ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে আক্রান্তদের ইমিগ্র্যান্ট ভিসা প্রত্যাখ্যান করতে পারে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-১১-২০২৫
যুক্তরাষ্ট্র ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে আক্রান্তদের ইমিগ্র্যান্ট ভিসা প্রত্যাখ্যান করতে পারে ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট


প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট কিছু শারীরিক অবস্থার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলার কর্মকর্তারা অভিবাসী ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যান করতে পারবেন। নতুন এই নীতিমালার আওতায় স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের মতো সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা এখন এমন কারণ হিসেবে গণ্য হবে, যা আবেদনকারীকে ভবিষ্যতে পাবলিক চার্জ বা রাষ্ট্রের ওপর আর্থিক বোঝা হিসেবে পরিগণিত করতে পারে। তবে এই নিয়ম অভিবাসী নয় এমন ভিসা, যেমন বি-২ পর্যটন ভিসা বা স্বল্পমেয়াদি সফর ভিসার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।

স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, এই পরিবর্তন মূলত পূর্ববর্তী আইনকে কার্যকর করার অংশ, যেখানে এমন ব্যক্তিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে যারা সম্ভাব্যভাবে সরকারের আর্থিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল হতে পারেন। কিন্তু অভিবাসন আইনজীবী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই সংজ্ঞা অযৌক্তিকভাবে সম্প্রসারিত করা হয়েছে, যা বহু সাধারণ আবেদনকারীর জন্য অন্যায্য বাধা সৃষ্টি করবে। সাসপেনশন অব এন্ট্রি অব ইমিগ্র্যান্টস হু উইল ফিন্যান্সিয়ালি বারডেন দ্য ইউনাইটেড স্টেটস হেলথকেয়ার সিস্টেম শিরোনামের ঘোষণাটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৯ সালের ৪ অক্টোবর জারি করেন এবং এটি কার্যকর হয় ৩ নভেম্বর ২০১৯ থেকে। এই ঘোষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল এমন অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা, যারা দেশে প্রবেশের পর ৩০ দিনের মধ্যে স্বাস্থ্যবীমা নিতে পারবেন না বা নিজেদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করার মতো আর্থিক সক্ষমতা প্রমাণ করতে পারবেন না। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি ছিল, বীমাহীন অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও করদাতাদের ওপর অতিরিক্ত আর্থিক বোঝা সৃষ্টি করে।

তবে এই নীতিকে ব্যাপকভাবে সমালোচনা করা হয়। মানবাধিকার সংস্থা ও অভিবাসন আইনজীবীরা বলেন, এই পদক্ষেপটি বৈষম্যমূলক এবং অন্যায্য, কারণ এটি মূলত দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভিবাসীদের লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছে। আইনটি পরবর্তীতে বিচারিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে এবং একাধিক ফেডারেল আদালত একে অভিবাসন আইনের সীমা অতিক্রম করেছে ও অসাংবিধানিক বলে রায় দেন। এর ফলে নীতিটি স্থগিত করা হয় এবং কার্যত এটি প্রয়োগ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এই বাতিল আইনের ধারাবাহিকতায় ট্রাম্প প্রশাসন নতুন নির্দেশনা জারি করেছে।

ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক সংগঠন কোয়ালিশন ফর হিউমেন ইমিগ্র্যান্ট রাইটস (চিরলা)-এর আইনজীবী অ্যান্ড্রেস গুয়েরাবলেন বলেন, এ প্রশাসন খুব স্পষ্টভাবে বিশ্বের প্রতি এক বার্তা দিচ্ছে- এখানে আসবেন না। তার মতে, নতুন নিয়মে কনস্যুলার কর্মকর্তাদের এমন চিকিৎসাগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে, যা তাদের পেশাগত দক্ষতার বাইরে। আবেদনকারীরা ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা পাস করেন, তবুও কর্মকর্তাদের এখন অনুমাননির্ভরভাবে আবেদন প্রত্যাখ্যানের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। অভিবাসন অধিকারকর্মীদের মতে, এই সিদ্ধান্ত শুধু আইনি দিক থেকেই নয়, নৈতিক দিক থেকেও উদ্বেগজনক।

অন্যদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র টমি পিগট এক বিবৃতিতে নীতিটিকে সমর্থন করে বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন আমেরিকান জনগণের স্বার্থকেই সর্বাগ্রে রাখছে। আমাদের লক্ষ্য এমন একটি অভিবাসন ব্যবস্থা বজায় রাখা, যা মার্কিন করদাতাদের ওপর বোঝা সৃষ্টি করবে না। এদিকে রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান বায়রন ডোনাল্ডস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা ব্যবস্থা সংস্কারের প্রয়োজন আছে, কারণ এটি দীর্ঘদিন ধরে অকার্যকর ও অপব্যবহারের শিকার। আইনি ব্যাখ্যার বাইরে বৃহত্তর সমস্যা হলো-এই প্রশাসন অভিবাসীদের প্রতি যে প্রজন্মগত বিরূপ মনোভাব তৈরি করেছে, সেটিই সবচেয়ে বড় ক্ষতি। নতুন এই নির্দেশনা কেবল অভিবাসী ভিসার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। অভিবাসন অধিকার সংস্থাগুলো জানিয়েছে, তারা এই নীতিমালার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে।

শেয়ার করুন