১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, শনিবার, ৬:৪২:১৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ত্রোয়েদশ জাতীয় নির্বাচন ও গনভোট ফ্যাক্টচেকিং ও কনটেন্ট মডারেশন কর্মীদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা ৮ ডিসেম্বর থেকে এফ ও এম সাবওয়ে লাইন সপ্তাহের দিনে রুট পরিবর্তন উইন রোজারিওর খুনি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনে লেটিকেয়ার অস্বীকৃতিতে জাপানের প্রথম রাজধানী নারা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া পদত্যাগ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘোষণা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বয়কট নিষিদ্ধ করে অ্যাডামসের বিতর্কিত আদেশ হোয়াইট হাউস প্রেস সেক্রেটারির ভাতিজার মাকে মুক্তির নির্দেশ বিশ্বকাপ ফাইনালে টিকেটের দাম ৬ হাজার ডলার


জুলাই বিপ্লবের পর জামায়াতের ইসলামী ব্যাংক কি দখল নিতে চেয়েছিলো বিএনপি?
মঈনুদ্দীন নাসের
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-১২-২০২৫
জুলাই বিপ্লবের পর জামায়াতের ইসলামী ব্যাংক কি দখল নিতে চেয়েছিলো বিএনপি? ইসলামী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়


বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের এক তরুণ নেতা অগাস্ট বিপ্লবের পর পর শরিয়তের ভিত্তিতে গঠিত ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়েছিল, কিন্তু জামায়াতে ইসলামি বিষয়টাকে সহজভাবে নেয়নি। তারা মনে করছে বিষয়টা তাদের বলয়ের উপর দখল দারিত্বের প্রচেষ্টা। সম্প্রতি ভারতের নয়া দিল্লিস্থ হাই কমিশনে কর্মরত ফয়ছল মাহমুদের ভারতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়।

উল্লেখ্য, আগস্ট বিপ্লবের পর পর জামায়াতের নেতৃবৃন্দ ঘোষণা করেছিলেন যে, বিএনপি’র সাথে তারা আর জোটবদ্ধ থাকবেন না। এরপর বিএনপিও একই পন্থা অবলম্বন করে। বিএনপি সিনিয়র নেতৃত্ব যেমন রুহুল কবীর রিজভি ২০২৪ সালের ২৯ শে ডিসেম্বর যখন ঘোষণা করেন যে, জামায়াতে ইসলামী দুর্নীতিবাজ এস আলম গ্রুপের মত ব্যবহার করছে। তখন দেখা যায় বিএনপি’র তরুণ নেতা সালাউদ্দিন গোপনে এবং তার ছেলে প্রকাশ্যে এস আলম গ্রুপেরই শুধু নয়, সালমান রহমানের সম্পদও রক্ষা করে চলেছেন, তাতে রিজভীর মুখে কুলুপ পড়েছে। তখন তিনি তা নিয়ে আর কিছু বলেননি।

এরপর শুরু হয় বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে রেষারেষি, শুধু তাই নয় মারামারিও চলছে। এ নিয়ে পরের ইস্যুতে লেখা হবে। তবে, বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে বৈষম্য কিভাবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলছে তা নিয়ে কিছুটা আলোকপাত করা যাক।

এক সময় ১৯৯১ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতায় আসলো জামায়াতের সমর্থন নিয়ে, তখন জামায়াত ও আওয়ামী লীগ বিএনপি’র বিরুদ্ধে গাঁটছড়া বেঁধে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করলেন। জামায়াত প্রকাশ্যে ঘোষণা করে, ”আমরা চাই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসুক, কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেও জামায়াতের নিরঙ্কুশ পুনর্বাসন হলো না। পরবর্তিতে জামায়াত ও বিএনপি পুনরায় এক কাতারে দাঁড়ালো। কিন্তু যেভাবে জামায়াত তাদের দেখতে চাইলেন, সেভাবে বিএনপি থাকলেন না। জামায়াতকে আওয়ামী লীগের পতনের পর বিএনপি শত্রু হিসেবে দাঁড় করালো। আওয়ামী লীগ যেভাবে জামায়াতের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় সেভাবে দাঁড়ালো বিএনপি। শুরু হলো কূটকাচালি। জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট নিয়ে সরাসরি মুখোমুখি হয় বিএনপি-জামায়াত। অবশেষে যেন জামায়াতের জয়। কারণ ইউনুস সরকার যেকোনোভাবে জুলাই সনদ নিয়ে গণভোটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তখন নির্বাচনের পথ ও উদ্দেশ্য বদলে গেছে। জুলাই বিপ্লবের পর আওয়ামী লীগের পতন নতুন পথ রচনার সুযোগ এনে দিয়েছে।

এই সুযোগ যুগ যুগ ধরে বিএনপি-জামায়াতের জোটকে ভেঙ্গে দিয়ে পরস্পরের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতির এক নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে। বিএনপি এখন আওয়ামী লীগের শূন্যস্থান পূরণ করে সেকুলার দল সাজতে চাইছে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী তার কোরআন ভিত্তিকআদর্শকে সমুন্নত রেখে পথ চলছে। জামায়াত নতুন জোট করার পরিকল্পনায় রয়েছে। আর বিএনপিও জামায়াত বিরোধীদের এক জোটে নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছে। তবে সব কিছু ছাড়িয়ে আগামী নির্বাচনের পর বাংলাদেশের রাজনীতি নতুন এক পোশাকে সজ্জিত হবে।

বিষয়টা ভাবতে সবকিছু সুখের না মনে হলেও বাংলাদেশের এক নতুন প্রেক্ষাপট সৃষ্টি হবে। সেখানে জামায়াতের অবস্থান নির্ণিত হবে। তবে সবচেয়ে সমস্যার বিষয় হচ্ছে জুলাই বিপ্লবের ধারাকে বাংলাদেশের রাজনীতির ধারা হিসাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তার কারণ বিএনপি আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ যেভাবে কায়মনবাক্যে কামনা করেন, সেভাবে জামায়াত করে না। বিএনপি চায় আওয়ামী লীগকে বিরোধী আসনে বসাতে। আর জামায়াত চায় নিজে ক্ষমতায় এসে বিএনপিকে অপোজিশনে বসাতে। কোনটা আগে হবে তা নিয়ে এখন চিন্তা চলছে।

শেয়ার করুন