১১ ডিসেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৬:০২:৩২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ফ্যাক্টচেকিং ও কনটেন্ট মডারেশন কর্মীদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা ৮ ডিসেম্বর থেকে এফ ও এম সাবওয়ে লাইন সপ্তাহের দিনে রুট পরিবর্তন উইন রোজারিওর খুনি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনে লেটিকেয়ার অস্বীকৃতিতে জাপানের প্রথম রাজধানী নারা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া পদত্যাগ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘোষণা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বয়কট নিষিদ্ধ করে অ্যাডামসের বিতর্কিত আদেশ হোয়াইট হাউস প্রেস সেক্রেটারির ভাতিজার মাকে মুক্তির নির্দেশ বিশ্বকাপ ফাইনালে টিকেটের দাম ৬ হাজার ডলার ট্রাম্প প্রশাসন বিবেচনা করছে আরো ৩৬ দেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সম্প্রসারণ


ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বয়কট নিষিদ্ধ করে অ্যাডামসের বিতর্কিত আদেশ
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-১২-২০২৫
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বয়কট নিষিদ্ধ করে অ্যাডামসের বিতর্কিত আদেশ মেয়র এরিক অ্যাডামস


নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস ২ ডিসেম্বর তার অফিস ত্যাগের কয়েক সপ্তাহ আগে একটি বিতর্কিত নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। এতে স্পষ্টভাবে নিউইয়র্ক সিটির সব এজেন্সি ও পেনশন ফান্ডকে ইসরায়েল বা তার নাগরিকদের বিরুদ্ধে বয়কট, বিনিয়োগ প্রত্যাহার বা নিষেধাজ্ঞায় অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ শহরের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করছে এবং আগামী মেয়র জোহরান মামদানির প্রশাসনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। নির্বাহী আদেশ ৬০ নামের এই নির্দেশটি সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হয়েছে। এর লক্ষ্য হলো শহরের পাঁচটি পেনশন সিস্টেমে থাকা প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলারের ইসরায়েলি বিনিয়োগ ও বন্ড রক্ষা করা এবং বিডিএস আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারি চুক্তি বা ক্রয় ব্যবস্থায় প্রভাব প্রতিরোধ করা। বিডিএস হলো বয়কট, ডাইভেস্টমেন্ট, স্যানকশনস আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি একটি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আন্দোলন যা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বয়কট, বিনিয়োগ প্রত্যাহার ও নিষেধাজ্ঞা আহ্বান জানায়, বিশেষ করে পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরায়েলের নীতি ও কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে।

অ্যাডামসের এই পদক্ষেপটি এমন এক সময়ে এসেছে যখন উদীয়মান প্রতিশোধমূলক মনোভাব এবং উগ্রবাদের বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। পাশাপাশি, মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরে মেয়র নির্বাচিত জোহরান মামদানি, যিনি বিডিএস আন্দোলনের সমর্থক, ১ জানুয়ারি ২০২৬ সালে অফিস গ্রহণ করবেন। অ্যাডামসের এই আদেশ ভবিষ্যতের বিনিয়োগ ও ক্রয় সিদ্ধান্তকে ইসরায়েলের প্রতি বৈষম্যহীন থাকার সঙ্গে যুক্ত করে নতুন প্রশাসনের জন্য একটি স্পষ্ট নীতি চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এছাড়া, এটি শহরের ইহুদি রাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অংশীদারত্বকেও পুনর্ব্যক্ত করছে।

নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সমস্ত শহরের এজেন্সি এবং পেনশন ফান্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, তারা কোনো কোম্পানি বা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করবে না যেগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বয়কট, বিনিয়োগ প্রত্যাহার বা নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করে। একই সঙ্গে, আদেশটি শহরের সরকারি চুক্তি ও ক্রয় প্রক্রিয়ায় বিডিএসকে প্রভাবিত করতে দেওয়া হবে না।

আমেরিকার ইসলামিক সম্পর্ক কাউন্সিল (কেয়ার) এবং নিউইয়র্ক শাখা মেয়র অ্যাডামসকে কঠোরভাবে নিন্দা জানিয়েছে। নির্বাহী পরিচালক আফাফ নাশার বলেন, নিউইয়র্কবাসীর শান্তিপূর্ণ বয়কটে অংশ নেওয়ার অধিকার রয়েছে। কোনো শহর আইন কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির ওপর ভিত্তি করে সরকারি চুক্তি বা সুযোগ সীমিত করতে পারবে না। প্রথম সংশোধনী অধিকার শেষ হয়ে যায় না শুধু নির্বাচিত কর্মকর্তারা বার্তাটির সঙ্গে একমত নয় বলে। মি. অ্যাডামসের নির্বাহী আদেশ শহরের ভোটারদের অবমাননা করেছে, যারা স্পষ্টভাবে দেখিয়েছেন যে তারা নীতি সমর্থক নেতাদের চান, যারা নিউইয়র্কবাসীর সেবা করবে, বিদেশি রাজনৈতিক সুবিধার জন্য নয়।

মেয়র অ্যাডামস আরো উল্লেখ করেছেন যে, নিউইয়র্ক সিটির অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং বাডুজ্যিক অংশীদারত্ব বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, সিটির পেনশন ফান্ড এবং বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা চাই কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন বা বিদেশি চাপের কারণে শহরের আর্থিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা ক্ষুণ্ন না হোক। নিউইয়র্ক সিটির রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অ্যাডামসের নির্বাহী আদেশ আগত মেয়র জোহরান মামদানির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। যেহেতু মামদানি বিডিএসের সমর্থক, তার প্রশাসনের সময় এই আদেশের প্রভাব, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তে কেমন প্রভাব ফেলবে তা বিশেষ নজরদারির বিষয় হবে।

অ্যাডামসের অফিস ত্যাগের পর এই নির্বাহী আদেশ কার্যকর থাকবে, বা নির্বাচিত মেয়র মামদানি তা বাতিল করবেন, এটি নতুন প্রশাসনের অধীনে সিটির বাডুজ্যিক ও আর্থিক নীতির ওপর বড় প্রভাব ফেলবে। শহরের বহু ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে এটিকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হলেও, কিছু রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকার সংস্থা এটিকে সমালোচনার মুখোমুখি করেছে।

শেয়ার করুন