০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৩:২০:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


৫২ বছরে নারীর ক্ষমতায়নে কাঙ্ক্ষিত অর্জন হয়নি
নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-১২-২০২৩
৫২ বছরে নারীর ক্ষমতায়নে কাঙ্ক্ষিত অর্জন হয়নি সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ


স্বাধীনতার ৫২ বছরে নারীর অধিকার ও ক্ষমতায়নে কাঙ্ক্ষিত অর্জন নিশ্চিত হয়নি। আমাদের নারী এবং কন্যাশিদের এখনও বঞ্চনা-বৈষম্য এবং নিপীড়নের থেকে মুক্তি ঘটেনি, বরং তাদের প্রতি সহিংসতা যেন ক্রমাগত বাড়ছে। আর এজন্য সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুরা যাতে আইনের আশ্রয় লাভ করতে পারে সেজন্য যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন শিশুদের জন্য একটি আলাদা অধিদপ্তর গঠন করতে হবে। 

জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘নারী ও কন্যাশিশুদের প্রতি নির্যাতন বন্ধে প্রয়োজন যৌন হয়রানী প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে ফোরাম নেতৃবৃন্দ এই আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন টনি মাইকেল গোমেজ, চাইল্ড রাইটস স্পেশালিস্ট অ্যান্ড অ্যাক্টিভিস্ট। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শাহীন আক্তার ডলি, সহ সভাপতি, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম ও নির্বাহী পরিচালক, নারীমৈত্রী, ওয়াহিদা বানু, সহ-সম্পাদক, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম এবং নির্বাহী পরিচালক, অপরাজেয় বাংলাদেশ, ফারজানা খান, ডিরেক্টর অব প্রোগ্রামস, এডুকো বাংলাদেশ, রাজিয়া সুলতানা, হেড অব এডুকেশন অ্যান্ড হেলথ, গুডনেইবারস বাংলাদেশ। 

মূল প্রবন্ধে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি বলেন, নারী অগ্রগমন এবং অর্জনে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ অনেক ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। রাষ্ট্র পরিচালনার সর্বোচ্চ পদসমূহে নারী নেতৃত্বের উপস্থিতি সারা বিশ্বে একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। সরকারি পর্যায়ে নারী নেতৃত্বের এই উত্তরণের হাত ধরে বিগত তিন দশকে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিতের লক্ষ্যে বিভিন্ন আইন প্রণীত হয়েছে। 

নাছিমা আক্তার জলি বলেন, সহিংসতা, যৌন হয়রানির ঘটনার এই ভয়াবহ বাস্তবতার পেছনে যথাযথ বিচার না হওয়ার বিষয়টি বড় ভূমিকা রাখে। আমরা আরও মনে করি, যৌন হয়রানির ঘটনার বিচারের জন্য সুনির্দিষ্ট আইন না থাকা ন্যায় বিচার পাওয়ার পথে একটি বড় প্রতিবন্ধক। এই সমস্যার কার্যকর সমাধানের জন্য প্রয়োজন একটি যথাযথ আইন। এই বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে আমরা দেশের সকল রাজনৈতিক দলের কাছে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাই। তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এরকম একটি প্রেক্ষাপটে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম মনে করে, সংসদ নির্বাচনের পূর্বে সকল রাজনৈতিক দলসমূহের নিকট নারী ও কন্যাশিশুদের সমস্যার ব্যাপকতা তুলে ধরা প্রয়োজন, যাতে দলসমূহ তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী ইশতেহারে নারী ও কন্যাশিশুদের কল্যাণে প্রয়োজনীয় প্রতিশ্রুতি ও পদক্ষেপ তুলে ধরে এবং বিজয়ী দল সেগুলো বাস্তবায়ন করতে পারে।

প্রবন্ধের শেষভাগে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে দুটি আহ্বান তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা, যার মাধ্যমে সকল ধরণের এবং সর্বস্তরে সংগঠিত এ ধরণের সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুরা আইনের আশ্রয় লাভ করতে পারবে। অন্যটি হচ্ছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন শিশুদের জন্য একটি আলাদা অধিদপ্তর গঠন করা। 

শাহীনা আক্তার ডলি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের প্রতি আমরা ফোরামের পক্ষ দুটো দাবি তুলে ধরেছি। যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আলাদা একটি আইন প্রণয়নের প্রণয়নের লক্ষ্যে উপরোক্ত আইনের খসড়া প্রণয়ন করেছি, আইনটি পাসের জন্য সরকারের সঙ্গে অ্যাডভোকেসি করেছি। শিশুদের জন্য আলাদা একটি অধিদপ্তর গড়ে তোলাও আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। আমরা মনে করি, আলাদা অধিদপ্তর থাকলে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে শিশুদের সার্বিক উন্নয়ন সাধন করা সম্ভব হবে। 

ওয়াহিদা বানু বলেন, নারী উন্নয়নে বাংলাদেশে যত আইন ও নীতিমালা আছে, পৃথিবীর অন্য দেশে আরও কম আছে। কিন্তু আইনগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন হয় না। বলা হয়, নারী ও শিশু হলো একটা দেশের ব্যারোমিটার, উন্নতির সূচক। তাদের অবস্থা ও অবস্থান দেখেই বোঝা যায়, সে দেশের আর্থ-সামাজিক কেমন। কিন্তু বিভিন্ন পরিসংখ্যানে আমরা দেখছি যে নারী ও কন্যাশিশুদের প্রতি নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে দেশে ৪৩ লাখ মামলা চলমান রয়েছে, তার মধ্যে ১১ লাখ মামলা শিশু সংক্রান্ত। আমরা মনে করি, জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে সু¯পষ্টভাবে অঙ্গীকার করতে হবে যে তারা নারী ও কন্যাশিশুদের কল্যাণে কী কী পদক্ষেপ নেবে। 

ফারজানা খান বলেন, আজকে আমাদের কন্যাশিশুরা আগের মতো নিরাপদ নয়। এর বড় কারণ হলো আমাদের মানসিকতা। তাই আমাদের মানসিকতারও উন্নতি ঘটাতে হবে। 

রাজিয়া সুলতানা বলেন, রাজনৈতিক দলের মাধ্যমেই দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত হয়। তাই আমরা আশা করি, নারী ও শিশুদের কল্যাণে রাজনৈতিক দলগুলো সদিচ্ছা প্রদর্শন করবে। যৌন হয়রানি রোধে নির্বাচিত সরকার যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও পাস করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

শেয়ার করুন