০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১০:১৫:৩০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন কোর্টে ৩০ লাখের বেশি মামলা বিচারাধীন
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০১-২০২৪
যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন কোর্টে ৩০ লাখের বেশি মামলা বিচারাধীন


বর্ডার ক্রসিংয়ে অভিবাসীদের ঢল ঐতিহাসিকভাবে বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউএস ইমিগ্রেশন আদালতে বিচারাধীন মামলা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। অভিবাসন-আদালতের ব্যাকলগ ২০২৩ সালে এক মিলিয়নেরও বেশি মামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ১৯ লাখ মামলা ইমিগ্রেশন আদালতে বিচারাধীন ছিল। সীমান্তে অবৈধ অভিবাসীদের আগমনের বন্যা অব্যাহত থাকায় ২০২৩ সালের নভেন্বর মাস পর্যন্ত মামলার সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। যা এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম শহর শিকাগোতে বসবাসকারী মোট জনসংখ্যার তুলনায় বিচারাধীন অভিবাসন মামলার আবেদনকারীর সংখ্যা বেশি।

সিরাকিউজ ইউনিভার্সিটি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক গবেষণা অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ইমিগ্রেশন কোর্টে ৩০ লাখের বেশি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। মামলাগুলোর এক তৃতীয়াংশ ফ্লোরিডা এবং টেক্সাসের ইমিগ্রেশন আদালতে বিচারাধীন। ইউনিভার্সিটির ট্রানজেকশনাল রেকর্ডস অ্যাক্সেস ক্লিয়ারিং হাউজ অনুসারে, ডিসেম্বর ২০২২ থেকে নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত এক বছরে ব্যাকলগ এক মিলিয়ন মামলা বেড়েছে। অতীতে ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বছরগুলোর মধ্যে ব্যাকলগ মামলা গড়ে প্রায় বছরে ৫০ হাজার মামলা বেড়েছে। আসলে যুক্তরাষ্ট্রে বিচারাধীন অভিবাসন আদালতে মামলার সংখ্যা ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩০ লাখের চেয়ে অনেক বেশি। কারণ অনেক অভিবাসীর মামলা এখনো নথিভুক্ত করা হয়নি। এ সংখ্যা ইমিগ্রেশন কোর্টে পেন্ডিং মামলার একটি নতুন রেকর্ড। ২০২৪ সালে জুন পর্যন্ত আরো ৫ লাখ মামলা বাড়বে বলে ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞরা অভিমত দিয়েছেন।

গবেষণা ইনস্টিটিউট অনুসারে, ফ্লোরিডা এবং টেক্সাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি অভিবাসন মামলার ব্যাকলগ রয়েছে। ফ্লোরিডায় ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৪৩৪টি মামলা মুলতবি রয়েছে, পাশাপাশি টেক্সাসে ৪ লাখ ২৬ হাজার ৯০১টি মামলা। এরপর সবচেয়ে বড় মামলার চাপ রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া, নিউইয়র্ক এবং ইলিনয় স্টেটে। বিচারাধীন মামলাগুলোতে সবচেয়ে বেশি আবেদনকারী ভেনেজুয়েলান, মেক্সিকান, হন্ডুরান এবং গুয়াতেমালা থেকে আগত অভিবাসীরা। সবচেয়ে বেশি অভিবাসন আদালতের ব্যাকলগসহ স্টেট হলো : ফ্লোরিডা ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৪৩৪, টেক্সাস ৪ লাখ ২৬ হাজার ৯০১, ক্যালিফোর্নিয়া ৩ লাখ ২৭ হাজার ৭৪৩, নিউইয়র্ক ৩ লাখ ২২ হাজার ২১, ইলিনয় ১ লাখ ৯২ হাজার ৪৪, নিউজার্সি ১ লাখ ৭৬ হাজার ১০৪, ম্যাসাচুসেটস ১ লাখ ৪৪ হাজার ৭২১, নর্থ ক্যারোলিনা ১ লাখ ১৯ হাজার ২৫, জর্জিয়া ১ লাখ ১৭ হাজার ৮৬১, টেনেসি ১ লাখ ১১ হাজার ৮৯৪। যুক্তরাষ্ট্রে সব স্টেটে ইমিগ্রেশন আদালত নেই। পুরো যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ৭০টি ইমিগ্রেশন আদালত রয়েছে। পুয়ের্তো রিকো এবং গুয়ামে মার্কিন অভিবাসন আদালত রয়েছে কিন্তু ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তাদেরও অভিবাসন মামলার ছোট ব্যাকলগ রয়েছে।

যেসব স্টেটে সবচেয়ে কম ব্যাকলগ রয়েছে: নিউ মেক্সিকো ১৭৩, হাওয়াই ৭৪১, নেভাদা ১ লাখ ৬ হাজার ১৭৯, মিশিগান ২০ হাজার ৮২৫, আরিজোনা ২৩ হাজার ১৩২, ওরেগন ২৭ হাজার ৪২৮, মিনেসোটা ৩৫ হাজার ৪৪৩, উটাহ ৩৫ হাজার ৭৫৬, নেব্রাস্কা ৩৭ হাজার ১৯০। জানা গেছে, মামলার সংখ্যার চেযে ইমিগ্রেশন আদালত ও বিচারকের সংখ্যা অনেক কম থাকায় বিচারাধীন মামলার দীর্ঘ ব্যাকলগ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে বিচারকরা প্রত্যেকে বছরে ৪ হাজারেরও বেশি মামলা নিয়ে কোর্ট পরিচালনা করছেন। ২০২০ সালে ৫১৭ জন ইমিগ্রেশন বিচারক ছিলেন। বর্তমানে তার থেকে একটু বেশি ডিসেম্বর-অক্টোবরে পর্যন্ত বেঞ্চে ৭৩৪ ইমিগ্রেশন বিচারক বিভিন্ন ইমিগ্রেশন কোর্টে মামলা পরিচালনা করছেন। কিন্তু আদালত এখনো ডকেটে মামলার সংখ্যার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না। বাইডেন প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আদালতে ৩০২ জন ইমিগ্রেশন বিচারক নিয়োগের মাধ্যমে ব্যাকলগ মোকাবিলা করার চেষ্টা করেছে। ২০২৪ সালের বাজেটে আরো ১৫০ জনকে নিয়োগের জন্য অর্থায়নের অনুরোধ কংগ্রেসকে জানিয়েছেন। অল্প সংখ্যক বিচারক ও অল্প আদালতের মাধ্যমে মামলাগুলো একযুগেও শেষ করতে পারবে না বলে অনেক ইমিগ্রেশন আইনজীবীরা জানিয়েছেন।

শেয়ার করুন