১৫ অক্টোবর ২০১২, মঙ্গলবার, ০৯:৩৪:৩৭ অপরাহ্ন


কনস্যুলেটে রবীন্দ্র-নজরুল জন্মবার্ষিকী পালন
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০৫-২০২৪
কনস্যুলেটে রবীন্দ্র-নজরুল জন্মবার্ষিকী পালন অনুষ্ঠানে নতুন প্রজন্মের পরিবেশনা


নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট গত ১৮ মে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং আনন্দঘন পরিবেশে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন করে। অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধারা, নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কমিউনিটির রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যবসায়িক, সাংস্কৃতিক ও মিডিয়া ব্যক্তিসহ বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। দিবসটি উপলক্ষে কনস্যুলেট অফিসকে দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির আলোকে সুসজ্জিত করা হয়। 

কনসাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে সবাইকে বাংলা নববর্ষের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং পহেলা বৈশাখকে বাঙালির প্রাণের উৎসব বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, নতুন আশা, নতুন উদ্দীপনা আর নতুন প্রতিশ্রুতি নিয়ে নববর্ষ আমাদের মধ্যে এসেছে। বিগত দিনের সব গ্লানি, সব হতাশা আর ব্যর্থতাকে পেছনে ফেলে জীবনের নতুন জয়গানের বার্তা নিয়ে এসেছে নববর্ষ। হাজার বছরের ঐতিহ্যে লালিত বাংলার সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক চেতনার এক মূলস্তম্ভ হচ্ছে আমাদের প্রাণের বৈশাখী উৎসব। গোত্র-বর্ণ-ধর্ম-জাতি নির্বিশেষে বাংলার সব মানুষের সর্বজনীন উৎসবের নাম নববর্ষ। বাঙালির তথা, বাংলাদেশের সব মানুষের ঐকতান সৃষ্টির এ উৎসব তাই আমাদের জাতীয় স্বকীয়তা, সাংস্কৃতিক চেতনা আর বৃহত্তর সামাজিক ঐক্যের, ভ্রাতৃত্বের আর সহমর্মিতার এক শক্তিশালী সূত্র। নববর্ষ উদযাপনের চমকপ্রদ অনুষঙ্গ ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ আজ বিশ্ব ঐতিহ্যের সম্পদ হিসেবে সাদরে স্বীকৃত এবং গৃহীত। এ স্বীকৃতি জাতি হিসেবে আমাদের করেছে গৌরবান্বিত এবং আরো আত্মবিশ্বাসী। 

নববর্ষের উৎসাহ-উদ্দীপনাকে যুক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রক্রিয়াকে আরো বেগবান ও ত্বরান্বিত করতে তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান। 

কনসাল জেনারেল তার বক্তব্যে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং তাদের উভয়কে বাংলাদেশ তথা, বিশ্বসাহিত্যের অমূল্য সম্পদ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির উন্নয়ন ও বিকাশে তাদের অবদান চিরস্মরণীয়। কনসাল জেনারেল পহেলা বৈশাখের মানবতাবাদী সর্বজনীন আবেদন এবং রবীন্দ্র-নজরুলের চিন্তা-চেতনা ও দর্শন বিশ্বশান্তি, সাম্য-ঐক্য প্রতিষ্ঠায় বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ ও আমাদের গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীকার সংগ্রামের প্রতিটি পর্যায়ে রবীন্দ্র-নজরুলের অনুপ্রেরণা শক্তি জুগিয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই দুই প্রধান কবির প্রতি সবিশেষ অনুরক্ত ছিলেন, যার ফলশ্রুতিতে কবিগুরুর লেখা ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’ যেমন স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতে পরিণত হয়, তেমনি অসুস্থ বিদ্রোহী কবিকে বাংলাদেশে এনে তার চিকিৎসাসহ সার্বিক সেবা-যত্নের ব্যবস্থা করেন বঙ্গবন্ধু ও তাকে নাগরিকত্বসহ জাতীয় কবির মর্যাদা প্রদান করেন। 

অনুষ্ঠানে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ওপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা উপস্থাপন করেন যথাক্রমে-ডেপুটি কনসাল জেনারেল এস এম নাজমুল হাসান এবং প্রথম সচিব প্রসূন কুমার চক্রবর্তী। 

অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কস্থ আনন্দধ্বনি, শিল্পকলা একাডেমি ও বাফা কর্তৃক দেশাত্মবোধক গান, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি, গ্রামবাংলার লোকজ গান, আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ হয়।

আমন্ত্রিত অতিথিদের বিভিন্ন প্রকার ঐতিহ্যবাহী দেশীয় খাবার দ্বারা আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।

শেয়ার করুন