০৪ জুলাই ২০১২, বৃহস্পতিবার, ৬:৪৮:৪১ পূর্বাহ্ন


আবারও ভয়াবহ এক বন্যার কবলে সিলেট
নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৬-২০২৪
আবারও ভয়াবহ এক বন্যার কবলে সিলেট সিলেটে বন্যার দৃশ্য


সিলেট আবারও এক ভয়াবহ বন্যার মুখে দাঁড়িয়ে। শুধু দাঁড়িয়েই নয়, বেশ কিছুদিন থেকেই ছিল বন্যার পদধ্বনি। প্রায় দিন ১৫ আগ থেকে এটা ক্রমশ বেড়ে এবার বহু এলাকা ভেসে যাবার উপক্রম। ইতিমধ্যে সিলেট জেলা প্রশাসন সিলেটের সব পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেছে। ১৮ জুন মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য। অথচ এখন ঈদের পর পর্যটকদের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ছুটে বেড়ানোর কথা। মুখরিত হওয়ার কথা ছিল ওইসব বিনোদন স্পটগুলো। কিন্তু বন্ধের নির্দেশে এসব পর্যটন স্পট প্রচণ্ড ক্ষতির সম্মুখীন। সেটা অবশ্য পরের কথা, যেখানে মানুষ এখন ছুটছে ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রপানে। সেখানে পর্যটকদের ঝামেলা কে পোহাবে। 

এর আগে ৩০ মে সিলেটের সব কটি পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া দেওয়া হয়েছিল। পরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলে ৭ জুন থেকে খুলে দেওয়া হয়েছিল। এবার আবারও বন্ধের নির্দেশনা। 

বিগত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে বন্যার পানি বাড়ছে সিলেটে। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও জৈন্তাপুরের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। সেখানকার অধিকাংশ এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রধান সড়কগুলোও পানিতে তলিয়ে গেছে। এ চার উপজেলার পানিবন্দি মানুষ ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। শুধু উপজেলা নয়, নগরীর অবস্থাও নাজুক। অধিকাংশ এলাকার মানুষ পানিবন্দি। সিলেট ছাড়াও সুনামগঞ্জের ছাতক, দোয়ারাবাজার, সদরসহ অন্যান্য উপজেলার অবস্থা নাজেহাল। সর্বশেষ মঙ্গলবার সকাল থেকে নগরীসহ সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলার মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে দেখা যায় বলে জানা গেছে। 

নদ নদীর খবর 

সিলেটের প্রায় সব নদীর পানি বেড়েছে। সুরমা, কুশিয়ারা, সারি, পিয়াইন, লোভা, ডাউকিসহ সবকটি নদীর পানি শুধু বাড়েইনি, দ্রুত বিপদসীমার দিকে যাচ্ছে। ১০টি পয়েন্টের মধ্যে সুরমা ও কুশিয়ারার পয়েন্টসহ ৬টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

সিলেট থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, প্রায় প্রতিটি নদীর তীর উপচে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। ফলে প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, মঙ্গলবার দুপুরে সুরমা নদীর কানাই পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩৬ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার, কুশিয়ার অমলশীদ পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৮০ সেন্টিমিটার, সারিগোয়াইন পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেটের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ জানাচ্ছেন, ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢল নেমে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সিলেটের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি বিষয়ে জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠছেন। এসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্রমশ।

শেয়ার করুন