০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৩:৫৯:৩৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


হাসিনার পলায়ন : প্রবাসে অনেকেই খোলস পাল্টাতে শুরু করেছে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০৮-২০২৪
হাসিনার পলায়ন : প্রবাসে অনেকেই খোলস পাল্টাতে শুরু করেছে হাসিনার পতনে বিজয় উল্লাস


স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এমনভাবে ক্ষমতায় বসেছিলেন কেউ কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবেননি তাকে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হবে। ১/১১-এর অবৈধ সরকার মইন ইউ আহমেদ ও ফখরুদ্দীনের সঙ্গে সমঝোতা করে শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে ক্ষমতায় আসেন। ক্ষমতায় এসেই মইন-ফখরুদ্দীনসহ তাদের সরকারের সবাইকে দায়মুক্ত করেন। এ দুই প্রধানকে বিদেশে পাঠিয়ে দেন। বর্তমানে তাদের দুইজনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। ২০০৯ সালের পর থেকেই শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায়। টানা ১৫ বছর তিনি ক্ষমতায় ছিলেন। ক্ষমতায় থাকার জন্য তিনি প্রথমেই টার্গেট করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর ম্যাসাকারের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫৭ জন দেশপ্রেমিক মেধাবী সেনা অফিসারকে হত্যা করা হয়। অনেক অফিসারকে জোরপূর্বক বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যাতে করে কেউ ভবিষ্যতে ক্যু করার সাহস না পায়। সেই সঙ্গে অবৈধ সংসদের মাধ্যমে আইন করা হয়, ক্যু করে ক্ষমতা দখল করলে ফাঁসি। প্রথমেই সেনাবাহিনীতে শুদ্ধি অভিযান চালানো হয়। অন্যদিকে নিজের ক্ষমতাকে পোক্ত করার জন্য নিজের পোষ্য প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে ব্যবহার করে। তার মাধ্যমেই ২০১১ সালের ১০ মে রায়ের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে। এটা ছিল তার দ্বিতীয় পরিকল্পনার অংশ। ক্ষমতায় থাকার রাস্তা একে একে সূক্ষ্ম পরিকল্পনামাফিক কাজ করতে থাকেন। বিরোধীদলীয় নেত্রীকে প্রতিহিংসার কারণে জেলে রাখেন, দলের সেকেন্ড ইন কমান্ডকে বিদেশে রাখেন। বিচারালায় থেকে শুরু করে প্রতিটি সরকারি প্রতিষ্ঠানকে দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করেন। ভারতের নীলনকশা অনুযায়ী ভোটার বিহীন, প্রার্থী বিহীন এবং ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকেন। রাস্তায় দাঁড়াতে দেননি কোনো শক্তিকে। কেড়ে নেওয়া হয় মানুষের বাক্্স্বাধীনতা। কণ্ঠরোধ করা হয় মিডিয়ার।

অবশেষে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে তিনি গত ৫ আগস্ট ভারত পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এ ১৫ বছরে প্রবাসে নব্য আওয়ামী লীগার, আওয়ামী সাংবাদিক, আওয়ামী সুশীল সমাজ, আওয়ামী বুদ্ধিজীবী, আওয়ামী লেখকদের জন্ম হতে থাকে। সর্বত্রই এদের দাপট ছিল। আওয়ামী লীগের সভা-সমাবেশে তাদেরই রাজত্ব চলতে থাকে। তাদের বক্তব্য, কথাবার্তা এবং লেখনীতে আওয়ামী লীগের লোকজনও লজ্জা পেতেন। চাটুকারিতার এক সীমা থাকে, কিন্তু তারা সব সীমা ছাড়িয়ে গেছেন। বাংলাদেশে একসময় সাংবাদিকদের মধ্যে বিভক্তি ছিল, এখনো আছে। কিন্তু সেই বিভক্তি প্রবাসে চরম আকার ধারণ করে। ভালো করে ইংরেজি উচ্চারণ করতে পারেন না, তারা হয়ে গেলেন দলীয় ভাড়! ওইদিন তাদের ভাড়ে পরিণত হওয়ার কারণেও আছে। তারা নিউইয়র্কের সরকারি দূতাবাস, কনস্যুলেট থেকে মাসোহারা পেতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এদের দাপটে প্রকৃত আওয়ামী লীগ যারা করতেন, তারাও লজ্জা পেতেন। এসব বর্ণচোরারা আবার তাদের খোলস পাল্টাতে শুরু করেছে, কচ্ছপের মতো খোলস থেকে বেরিয়ে আসছেন। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর নিউইয়র্কসহ উত্তর আমেরিকায় ছাত্র-জনতার বিজয় উল্লাসে তাদের অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। অবস্থা দেখে মনে হয়েছে, স্বৈরাচারের পতন দেখে তারাই মহাউল্লসিত, আন্দোলনে যেন তারাই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। অথচ গত ১৫ বছরে তাদের শেখ হাসিনার দুঃশানের বিরুদ্ধে কথা বলতে দেখা যায়নি, বা সত্য লেখার পক্ষে তাদের কলম চলেনি। উল্টো সর্বক্ষণ মিথ্যা লিখেছেন, সাফাই গাওয়ার চেষ্টা করেছেন, সত্য-মিথ্যা প্রমাণে ব্যস্ত ছিলেন। এখন সুর পাল্টাতে শুরু করেছেন। তারাই যেন এখন মহাবিপ্লবী। তাদের চোখে শেখ হাসিনা এখন ঘৃণীত শাসক। সামাজিকমাধ্যমেও তারা এখন সোচ্চার। অনেকেই এদের অবস্থা দেখে বলেছেন, এরা ভয়ংকর, এরা দালাল, এরা সুযোগসন্ধানী। এদের কাছ থেকে সাবধান!

শেয়ার করুন