মিশিগানে মুসলিম আমেরিকান অধিকার সংগঠন কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (কেয়ার)-এর সদস্যদের হত্যার হুমকি দেওয়ার জন্য ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচের ৭২ বছর বয়সী মাইকেল শাপিরো দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এ ঘটনা ঘটে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে, যখন শাপিরো তিনটি ফোনকল করে কেয়ার মিশিগান শাখার সদস্যদের হুমকি দেন। ১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার এক কাউন্ট অভিযোগে মাইকেল শাপিরো দোষী সাব্যস্ত হন। আদালতে তিনি স্বীকার করেন যে, তিনি কেয়ারকে তাদের ধর্ম এবং জাতীয়তার কারণে লক্ষ করেছিলেন, যারা কেয়ারে কাজ করেন, তাদের হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন।
আদালতে অভিযোগ অনুযায়ী, শাপিরো প্রথম কলটি করেন ৮ ডিসেম্বর ২০২৩, যেখানে তিনি বলেন, ‘আমি তোমাদের মেরে ফেলবো, বদমাশদের।’ এরপর ১৪ ডিসেম্বর তিনি আবার কল করে আরো একাধিক হুমকি দেন, ‘আমি তোমাদের মেরে ফেলবো, মাদার ফ...দের। মুসলিমরা! আমি তোমাদের মেরে ফেলবো। আমি তোমাদের মেরে ফেলব! আমি তোমাদের মেরে ফেলবো!’
শাপিরো বিরুদ্ধে তিনটি ফেডারেল অভিযোগ আনা হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল ইন্টারস্টেট বাণিজ্য মাধ্যমে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ। তিনি মঙ্গলবার এক অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন। এফবিআইয়ের মিশিগান শাখার বিশেষ এজেন্ট শেভরি গিবসন এই ঘটনার পর বলেন, মাইকেল শাপিরোর দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং ধর্মীয় বৈষম্য দ্বারা অনুপ্রাণিত হুমকির ঘটনা এফবিআইয়ের অবিচলিত অঙ্গীকারকে দৃঢ়ভাবে প্রতিফলিত করে, যা ঘৃণা ও অসহিষ্ণুতা থেকে ব্যক্তিদের রক্ষার লক্ষ্যে কাজ করে।
এছাড়া কেয়ার মিশিগানের স্টাফ অ্যাটর্নি অ্যামি ডুকৌরে বলেন, তার হুমকি খুবই সিরিয়াস ছিল। আমরা কয়েকদিন ধরে আমাদের অফিস বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছিলাম। তিনি প্রতিদিন ফোন করছিলেন, আমাদের হুমকি দিয়েছিলেন। আমরা জানতাম না তিনি কোথায় এবং তিনি কি সত্যিই তার হুমকি বাস্তবায়ন করবেন।
এফবিআই এবং ক্যানটন পুলিশ বিভাগের মধ্যে সহযোগিতার ফলস্বরূপ এই মামলার সফল সমাধান হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিশেষ করে ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলোর সহায়তায়, ঘৃণাভিত্তিক অপরাধগুলো মোকাবিলা এবং প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
এই ঘটনা আরো একবার প্রমাণ করে যে, ঘৃণাভিত্তিক হুমকি এবং সহিংসতা শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং একটি সম্প্রদায়কে আতঙ্কিত করতে পারে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এবং সম্প্রদায়ের সহায়তায়, এই ধরনের অপরাধের প্রতিরোধে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা না ঘটে এবং সব সম্প্রদায়ের জন্য নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যায়।