০৩ অক্টোবর ২০২৫, শুক্রবার, ০২:৪৫:৪২ পূর্বাহ্ন


জিমি কার্টার আর নেই
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০১-২০২৫
জিমি কার্টার আর নেই জিমি কার্টার


যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার মারা গেছেন। স্থানীয় সময় গত ২৯ ডিসেম্বর রোববার বিকালে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের প্লেইনসে নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শান্তিতে নোবেলজয়ী সাবেক এই প্রেসিডেন্ট। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। জিমি কার্টারের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে তার প্রতিষ্ঠান কার্টার সেন্টার। ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। তিনি অক্টোবরে ১০০তম জন্মদিন উদযাপন করেন। তার প্রতি সম্মান জানাতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। ৯ই জানুয়ারি জাতীয় শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এদিন রাজধানীতে হবে ‘স্টেট সার্ভিস’। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। কয়েকদিন ধরে চলবে আনুষ্ঠানিকতা। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯তম প্রেসিডেন্ট কার্টারকে প্রাইভেট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজের রাজ্য জর্জিয়ার প্লেইনসে তার ৭৭ বছর বয়সী স্ত্রী রোসালিনের পাশে সমাহিত করা হবে। রোসালিন ২০২৩ সালের নভেম্বরে মারা যান। মিডিয়ার খবরে বলা হয়, ১৯৭৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রোসডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন কার্টার। তিনি ডেমোক্রেট দলের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৭৮ সালে প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ক্যাম্প ডেভিড চুক্তির জন্য বেশ আলোচিত হন তিনি। কেননা ওই চুক্তির ফলে মধ্যপ্রাচ্যে কিছুটা স্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছিল। তবে অর্থনৈতিক মন্দা এবং ইরানের সঙ্গে জিম্মি সংকটের কারণে ক্রমাগত অজনপ্রিয় হয়ে উঠছিলেন জিমি কার্টার। ৪৪৪ দিনেই প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন শেষ করেন তিনি। এরপর ১৯৮০ সালে তিনি পুনরায় নির্বাচন করেন, তবে সেবার রিপাবলিকান দলের রোনাল্ড রিগানের কাছে ভরাডুবি হয় তার। বিপুল ভোটে জয় পান সাবেক অভিনেতা এবং ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর রিগান।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউস ত্যাগ করার পর থেকে দেশটির প্রেসিডেন্টদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় বেঁচে ছিলেন কার্টার। তিনি মানবিক কর্মকান্ডের জন্য বেশ প্রশংসিত। একজন প্রেসিডেন্টের তুলনায় সাবেক হিসেবে অধিক সম্মান পেয়েছিলেন তিনি, যা সহজেই স্বীকার করতেন কার্টার। 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কার্টার বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছিলেন। যার মধ্যে ছিল মেলানোমাও। এই রোগটি তার রক্ত এবং মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে। কার্টার অতিরিক্ত চিকিৎসা হস্তক্ষেপের পরিবর্তে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে হসপিস যতœ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার স্ত্রী- রোজালিন কার্টার, ২০২৩ সালের নভেম্বরে ৯৬ বছর বয়সে মারা যান। হুইলচেয়ারে তার স্মৃতিচারণ এবং শেষকৃত্যে যোগ দেয়ার সময় কার্টার বেশ দুর্বল ছিলেন। 

কার্টার বেশ অজনপ্রিয় অবস্থায় প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়লেও মানবিক কাজের জন্য কয়েক দশক ধরে বেশ প্রশংসিত হয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক সংঘাতের সমাধান খুঁজে বের করা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে এগিয়ে নেয়া এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন প্রচারে নিরলস প্রচেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০২ সালে শান্তিতে নোবেল পান জিমি কার্টার। উল্লেখ্য, ৪ সন্তান ও ১১ নাতি-নাতনি রেখে গেছেন তিনি।

শেয়ার করুন