৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৩:০৯:৩১ অপরাহ্ন


কানাডায় ৩৯তম ফোবানার নেতৃবৃন্দ : ইগোর কারণে ঐক্য হচ্ছে না
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০২-২০২৫
কানাডায় ৩৯তম ফোবানার নেতৃবৃন্দ : ইগোর কারণে ঐক্য হচ্ছে না বক্তব্য রাখঝেন জাকারিয়া চৌধুরী


আবহমান কালের বাংলাদেশের কৃষ্টি-সংস্কৃতি প্রবাসে ধারণ করে গত ৩৮ বছরের ধারাবাহিকতায় আসন্ন ফোবানা’র ফেডারেশন অব বাংলাদেশী এসোসিয়েশন্স ইন নর্থ আমেরিকা) ৩৯তম বাংলাদেশ সম্মেলনেও কম্যুনিটির সকলকে ঐক্যের জয়গান গাওয়া হবে। প্রবাস প্রজন্মকে মা-বাবার শেকড়ের সাথে প্রোথিত রাখতে সর্বোচ্চ প্রয়াস রয়েছে। আমেরিকা-কানাডার রাজনীতি ও প্রশাসনের সাথে কম্যুনিটির সম্পর্ক আরো জোরালো করতেও এবারের সম্মেলনে নানা কর্মসূচি যুক্ত হয়েছে। আসছে লেবার ডে উইকেন্ড তথা ২৯, ৩০ ও ৩১ আগস্ট কানাডার মন্ট্রিয়লের ডাউনটাউনে ব্যস্ততম এলাকায় অবস্থিত ‘সেন্টার ল্য প্লাজা’ হোটেলের বলরুমে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ফোবানার এই সম্মেলনের প্রস্তুতির আলোকে ৯ ফেব্রুয়ারি রোববার নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান ফোবানার চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আতিক। চার খন্ডে বিভক্ত ফোবানার ঐক্যের কোন সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান বলেন, আমরা সবসময় ঐক্যের পক্ষে। প্রস্তত রয়েছি যে কোন ত্যাগের বিনিময়ে হলেও ঐক্যবদ্ধ হতে। আমরা সবাই বলি যে ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। কিন্তু সবাই সবার ইগো নিয়ে আছেন। এসব ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করে আসুন সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করি। আর কাজটি হচ্ছে আমার দেশ, আমার সংস্কৃতি, আমাদের প্রজন্ম। এ নিয়ে কার্যকর একটি আলোচনাও সক্রিয় রয়েছে বলে উল্লেখ করেন আতিক। এক্ষেত্রে আমাদেরকে দেশীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠতে হবে। বাঙালি হিসেবে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে পারলেই অনৈক্যের ব্যাপারটি কেটে যাবে। এসময় সাবেক চেয়ারম্যান জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, ফোবানার বাংলাদেশ সম্মেলনের স্পন্সর ছিলেন একসময়, তারাই এখোন ফোবানার পিঠে ছুরিকাঘাতের জন্যে দায়ী। তারা জানেন না ফোবানার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, কিংবা সাংগঠনিক রীতি। জনপ্রিয় শিল্পী নিয়ে গান-বাজনাকে তারা ফোবানা হিসেবে চালিয়ে নিচ্ছেন এবং প্রবাসীদের মহামিলনমেলা হিসেবে পরিচিত ‘ফোবানা’কে ভাঙ্গনের অপবাদ নিচ্ছেন।

ক্রমান্বয়ে প্রবাসে বেড়ে উঠা প্রজন্ম কম্যুনিটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে, এমন অসহনীয় একটি পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কোন প্রয়াস আছে কিনা এমন অপর এক প্রশ্নের জবাবে আতিক উল্লেখ করেন, আমাদের প্রজন্ম আমাদের অহংকার। সমগ্র উত্তর আমেরিকা জুড়ে আমাদের প্রজন্মের অনেকের সাফল্যে আমরা গর্বিত। আমাদের প্রজন্মকে আরো উৎসাহিত করতে হবে এগিয়ে চলতে। ওদের মধ্যে বাংলা সংস্কৃতিতে প্রবাহিত করতে হবে। আতিক উল্লেখ করেন, গত তিন বছর ধরেই আমরা ‘রানী কবির এওয়ার্ড’ দিচ্ছি বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসাধারণ প্রতিভাসম্পন্নদেরকে। সেটি অব্যাহত থাকবে। উল্লেখ্য, নিউইয়র্কে মেডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে ফোবানা সম্মেলনের হোস্ট কমিটির কনভেনর ছিলেন রানী কবির (লীগ অব আমেরিকার প্রেসিডেন্ট)। সম্মেলনের কদিন আগে তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন। ফোবানার জন্যে রানী কবিরের ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা স্মরণ করেই এওয়ার্ডটি চালু করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে ফোবানার সাবেক চেয়ারম্যান জাকারিয়া চৌধুরী জানান, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত বাংলাদেশী বংশোদ্ভ’তদেরকেও আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। শতাধিক সদস্যের একটি ইয়ুথ কমিটি দিন-রাত কাজ করছেন ফোবানাকে আরো সমৃদ্ধি দিতে। সমসাময়িক প্রসঙ্গে তারা আলোচনাতেও অংশ নেবেন।

এ সময় হোস্ট সংগঠন ‘কানাডা-বাংলাদেশ সলিডারিটি’র সভাপতি ও ফোবানা সম্মেলনের আহবায়ক জিয়াউল হক জিয়া এবং সদস্য-সচিব ইকবাল কবির সম্মেলনের নানা পর্ব সম্পর্কে জানান যে, প্রথম দিন জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও গালা নাইট, দ্বিতীয় দিন থাকবে বিজনেস ডেভেলপমেন্ট সেমিনার, উইমেন এ্যাম্পাওয়ারমেন্ট সেমিনার, ইমিগ্রেশন ও নাগরিক সচেতনতা শীর্ষক সেমিনার, প্রবাসে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশ, ইয়ুথ সেমিনার এবং কাব্য জলসা। এদিন আরো থাকবে প্রবাস প্রজন্মের ও বাংলাদেশ থেকে আসা তারকা শিল্পীগনের পরিবেশনায় নৃত্য-গীত-আবৃত্তি ও গীতি আলেখ্যসহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শেষ দিন ফোবানার নির্বাহী কমিটির সভা, নয়া কমিটি নির্বাচনের পাশাপাশি ৪০তম ফোবানার হোস্ট নির্বাচন এবং দেশ ও প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পীগণের পরিবেশনা। ফোবানার এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি রহিম নিহাল ডেমক্র্যাটিক পার্টির কাউন্টি চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, কানাডার এই সম্মেলনে আমরা কানাডা-যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। কানাডা ও আমেরিকায় বেড়ে উঠা বাঙালি প্রজন্মের মধ্যে যারা নিজ মেধাগুণে বিশেষ অবস্থানে উন্নীত হয়েছেন তাদের অভিজ্ঞতা উপস্থাপনের প্রয়য়াস রয়েছে অন্যদেরকে অনুপ্রাণীত করতে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে আরো অংশ নেন ফোবানার সাবেক চেয়ারম্যান বেদারুল ইসলাম বাবলা, জয়েন্ট এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি আমিনুল ইসলাম কলিন্স, আব্দুল কাদের চৌধুরী শাহীন, হোস্ট কমিটির ট্রেজারার বজলুর রশীদ ব্যাপারি এবং উপদেষ্টা কামাল চৌধুরী। তারা সকলেই অতীতের ন্যায় এবারও গণমাধ্যমের আন্তরিক সহায়তা কামনা করেছেন।

শেয়ার করুন