সল্ট লেক সিটিতে হিজাব পরিধান করার কারণে এক মুসলিম মহিলার ওপর ধর্মীয় বিদ্বেষে হামলা এবং ধর্ষণের চেষ্টা করার অভিযোগে ৩৯ বছর বয়সী জ্যাকারি কোল হলম্যানকে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী মহিলা পুলিশকে জানান, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তিনি তার বন্ধুর সঙ্গে সড়কে হাঁটছিলেন এবং শিশুর হাত ধরছিলেন, এমন সময় হলম্যান তাকে যৌন নিপীড়নের হুমকি দেন এবং জ্যাকারি কোল হলম্যান মহিলার ধর্মীয় পরিচিতির প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। হলম্যান তার কাছে এসে প্রশ্ন করেন, ‘তুমি কেন এ পোশাক পরেছো?’ এরপর তিনি মহিলার হিজাব সরানোর চেষ্টা করেন এবং তা না পারলে তার শরীরে হাত দেন। অভিযোগে বলা হয়েছে যে, হলম্যান মহিলার স্তন স্পর্শ করেন এবং তাকে মাটিতে ফেলে দেন। মাটিতে ফেলে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। হলম্যান মহিলাকে মাটিতে ফেলে দেওয়ার পর তার গলায় চাপ দেয়, যাতে মহিলাটি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এ সময় মহিলার সহকর্মী এবং পথচারীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। হামলার পর হলম্যান ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান, তবে পরবর্তী দিন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, এটি একটি অপ্রত্যাশিত হামলা, যেখানে আক্রমণকারী মহিলার ধর্মীয় পরিচিতির ওপর ভিত্তি করে তাকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়। হামলা ছিল সম্পূর্ণ বিনা প্ররোচনায় এবং মহিলাটি তার শিশুসন্তানকে নিয়ে সাধারণভাবে হাঁটছিলেন। পুলিশের মতে, এ ধরনের আচরণ ধর্মীয় পরিচয়ের প্রতি ঘৃণার প্রমাণ এবং এটি সমাজের নিরাপত্তাকে চ্যালেঞ্জ করে। হলম্যানের বিরুদ্ধে প্রথম শ্রেণির ধর্ষণ, দ্বিতীয় শ্রেণির যৌন নিপীড়নÑএ অপরাধের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক অপরাধের মামলা করা হয়েছে। ঘৃণামূলক অপরাধ ইউটা স্টেটের আইন অনুযায়ী একটি গুরুতর অপরাধ। অভিযোগে বলা হয়েছে যে, হলম্যান মহিলাকে ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণ করেছিলেন শুধু তার ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে, যা ঘৃণামূলক অপরাধের শামিল। এছাড়াও হলম্যানের বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধের অভিযোগ রয়েছে এবং তিনি প্রবেশন অবস্থায় ছিলেন। এ ঘটনায় তাকে আরো কিছু গুরুতর অভিযোগের মুখোমুখি করা হতে পারে বলে পুলিশ জানায়।
এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সেজন্য সমাজে সহিষ্ণুতা এবং ধর্মীয় সমবেদনার শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়া জরুরি। ঘৃণামূলক অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া না হলে সমাজে এ ধরনের ঘৃণা এবং সহিংসতার পরিমাণ বাড়তে পারে। মুসলিম মহিলার ওপর এই নির্যাতন শুধু তার ব্যক্তিগত আঘাত নয়, এটি পুরো মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি একধরনের হুমকি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরো সচেতন ও সক্রিয় হতে হবে, যেন প্রত্যেক নাগরিক তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও পরিচিতি নিয়ে নিরাপদে জীবনযাপন করতে পারে।