০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৩:৬:১৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


আদর্শভিত্তিক রাজনীতি ফিরিয়ে আনার অপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৩-২০২৫
আদর্শভিত্তিক রাজনীতি ফিরিয়ে আনার অপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বক্তব্য রাখছেন বদিউল আলম মজুমদার


সুজন সম্পাদক ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্র সংস্কারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিকে পরিশুদ্ধ করে জনকল্যাণমুখী-আদর্শভিত্তিক রাজনীতি ফিরিয়ে আনার এক অপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ সুযোগকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে, যাতে দেশে আর ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা ফিরে না আসে এবং সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্যে দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটে। তিনি আরও বলেন, ‘দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। একইসঙ্গে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে রাখার জন্যও জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।’ 

তিনি গত ১ মার্চ শনিবার রাজধানীতে মানিক মিয়া এভিনিউতে নাগরিক সংগঠন ‘সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন’-এর উদ্যোগে ‘অবনতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং সংস্কারের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ’-এর দাবিতে আয়োজিত এক মানববন্ধনে উপরোক্ত মন্তব্য করেন। 

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সুজন-এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও ঢাকা জেলা কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী মুসবাহ আলীম, সুজন জাতীয় কমিটির সদস্য একরাম হোসেন, সুজন ঢাকা জেলা কমিটির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট রাশিদা আক্তার শেলী, সুজন ঢাকা মহানগর কমিটির সহ-সভাপতি ক্যামেলিয়া চৌধুরী, সুজন ঢাকা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহবুল হক, সুজন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক জুবাইরুল হক নাহিদ, ঢাকা মহানগর কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম, সুজন ঢাকা জেলা কমিটির অর্থ সম্পাদক কানিজ ফাতেমা, সুজন কেরাণীগঞ্জ উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি কাউসার আহমেদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন সুজন-এর কেন্দ্রীয় প্রধান সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।

মানববন্ধনে সুজন নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি যে, সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। চারদিক থেকে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, লুটপাট, নারী ধর্ষণ, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ইত্যাদির খবর আসছে। ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ চলা অবস্থাাতেও সৃষ্ট অরাজকতা নিয়ন্ত্রণে আসছে না। বরং দৃষ্টিভঙ্গিগত সীমাবদ্ধতার কারণে অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে এবং নিরীহ ও নিরপরাধ মানুষকে গ্রেফতার ও হয়রানির শিকার হচ্ছে। অসহনীয় এই অবস্থা ও অরাজকতা থেকে আমরা মুক্তি চাই। একইসঙ্গে সংস্কারের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।’

মানবন্ধন থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি সুজন-এর পক্ষ থেকে কিছু আহ্বান ও দাবি তুলে ধরা হয়। যেমন: ১. অবিলম্বে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে আনা; ২. নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; ৩. সারাদেশে সৃষ্ট অরাজকতা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা; ৪. অপরাধ দমনে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা; ৫. অপরাধীদের রক্ষার বদলে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা; ৬. দল-মত নির্বিশেষে অপরাধীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা; ৭. অবিলম্বে মব-কালচার বন্ধ করা; ৮. নিরপরাধ ব্যক্তিদের গ্রেফতার-হয়রানি বন্ধ করা; ৯. ফ্যাসিবাদ দমনে ফ্যাসিবাদী আচরণ পরিহার করা; ১০. বিশৃঙ্খলা উস্কে না দিয়ে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা; ১১. সংঘাতের বদলে ঐক্যের বাংলাদেশ গড়ে তোলা; ১২. বহুমত ও পথের অনুসারীদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করা; ১৩. সকল ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধ করা; ১৪. গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা; ১৫. দ্রুত সংস্কার করে পরিচ্ছন্ন রাজনীতি ও শোষণমুক্ত দেশ গড়ে তোলা; ১৬. গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা; ১৭. সংস্কারের লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টি করা; ১৮. সংস্কারের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মিলিত অঙ্গীকার নিশ্চিত করা; ১৯. রাজনৈতিক দল স্বাক্ষরিত জাতীয় সনদ (সমঝোতা স্মারক) তৈরি করা, যে জাতীয় সনদই হতে পারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার মূল দলিল; ২০. রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহার নিষিদ্ধ করা; ২১. ধর্মীয় উপাসনালয়ে রাজনৈতিক প্রচারণা নিষিদ্ধ করা; ২২. দ্রুত সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা; ২৩. সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে নাগরিকদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া; ২৪. স¤পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক বৈশিষ্ঠ্যের সংবিধান রচনা করা; ২৫. অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ না করা; ২৬. জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয়করণমুক্ত করা।

উল্লেখ্য, একই দাবিতে সুজন-এর উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শেয়ার করুন