০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১০:০৯:৪৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


জ্বালানি মূল্য পরিশোধে ডলার যোগান মূল সংকট
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৬-২০২৩
জ্বালানি মূল্য পরিশোধে ডলার যোগান মূল সংকট


২০২৪ থেকে বর্তমান সরকার নতুন টার্মে বা নতুন সরকার যারাই আসুক আমদানিকৃত জ্বালানি, বিদ্যুৎ এবং দেশে বেসরকারি বিদ্যুৎ এবং গ্যাস উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর পাওনা পরিশোধ হবে অন্যতম প্রধান সংকট। সাময়িকভাবে সমাধান না টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সুচিন্তিত স্বল্প, মধ্য মেয়াদি পরিকল্পনা করে সমন্বিতভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। বর্তমান সংকট কিন্তু দীর্ঘ দিনের পুঞ্জিত অব্যবস্থাপনা, অবৈধ সিন্ডিকেটদের অশুভ প্রভাব, আমলাদের আনাড়ি নিয়ন্ত্রণের সম্মিলিত ফলাফল। ২০০৯ -২০২৩ বিদ্যুৎ উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধি করেও কেন দেশ এখন জ্বালানি বিদ্যুৎ নিয়ে উৎকণ্ঠায় থাকবে? করোনা এবং রাশিয়ার যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ব জ্বালানি বাজারের অস্থিরতাকে আর কতদিন অজুহাত দেয়া যাবে। যুদ্ধ না হলেও কি বাংলাদেশ নিজেদের জ্বালানি সম্পদ উন্নয়ন অবহেলা করে আমদানি করা জ্বালানির দিকে ঝুঁকে বর্তমান অবস্থায় পড়তো না? এখন বিশ্ব বাজরে জ্বালানি মূল্য অনেক ক্ষেত্রেই করোনা-পূর্ববর্তী স্তরে ফিরেছে। 

কিন্তু এখনো জ্বালানি ক্রয়ের সক্ষমতা নেই বাংলাদেশের। বিপিসির অনেক বকেয়া তরল জ্বালানি সরবরাহকারীদেও কাছে। পেট্রোবাংলার বিপুল বকেয়া আইপিপিগুলোর কাছে, পেট্রোবাংলার বকেয়া আইওসি এবং এলএনজি সরবরাহকারীদের কাছে। সাময়িকভাবে কিছু বকেয়া পরিশোধ করে কয়লা আমদানি করা হলেও অচিরেই কয়লা সংকটে বন্ধ হতে পারে বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন। দেখলাম কাতার গ্যাস এবং ওমান ট্রেডিং কর্পোরেশনগুলোর সঙ্গে ২০২৬ থেকে অধিক হরে এলএনজি আমদানির চুক্তি হয়েছে। এগুলো ২০১৯ করোনা অতিমারীর পর পর করা সম্ভব হলে গ্যাস সংকট অনেকটাই এড়ানো যেত। স্পট মার্কেট থেকে উচ্চ মূল্যের চ্যালেঞ্জ পোহাতে হতো না। বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের বিদ্ধমান পরিস্থিতিতে রিজার্ভ থেকে জ্বালানি ক্রয়ের ডলার সংস্থান সহসা সম্ভব হবে না। অপরদিকে শিল্প কারখানাসমূহে মানসম্পন্ন গ্যাস, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব না হলে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি দূরের কথা বর্তমান হার বজায় থাকবে না।

পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য স্বল্পমেয়াদে ২০০৪-২০২৬ জ্বালানি বিদ্যুৎ ব্যাবহারে কৃচ্ছতা, দক্ষতা, অপচয় সর্বপ্রকারে রোধ করতে হবে। নবায়ণযোগ্য জ্বালানি বিশেষত সৌর বিদ্যুতের অবদান বৃদ্ধির জন্য বাড়তি প্রণোদনা দিতে হবে। এই সময়ের মধ্যে নিজেদের ফসিল ফুয়েল বৃদ্ধি বা জ্বালানি আমদানি বৃদ্ধির সুযোগ নেই। তবে জ্বালানি আমদানি যেন অর্থাভাবে বিঘ্নিত না হয় নিশ্চিত করতে হবে। ২০২৫ নাগাদ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেনা কয়লায় চালু হলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া সহজ হবে।  

মধ্যমেয়াদি ব্যবস্থা হিসাবে নতুন সরকারকে পরিকল্পনা করে নিজেদের কয়লা উন্নয়নের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জলে স্থলে গ্যাস তেল উত্তোলনের জন্য যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতি কখনোই ৫০% অধিক আমদানিকৃত  জ্বালানির চাপ সামাল দিতে পারবে না। টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে বাংলাদেশের ২০৩০ এবং ২০৪১ জাতীয় উন্নয়ন ভিশন অর্জন সম্ভব হবে না। 

মনে রাখতে হবে সবার জন্য সুলভে মানসম্পন্ন জ্বালানি বিদ্যুৎ সরবরাহ  টেকসই উন্নয়ন গোল (এসডিজি) অর্জনের  পূর্বশর্ত। এই বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমত অপরিহার্য।

শেয়ার করুন