যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী হাজার হাজার পোস্টাল কর্মী ইউনাইটেড স্টেটস পোস্টাল সার্ভিস এর বেসরকারীকরণ এবং পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণ করেছেন। ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ লেটার ক্যারিয়ারস এ প্রতিবাদ আয়োজন করে, যা ২০০টিরও বেশি শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মীরা সতর্ক করে বলেছেন যে, পোস্টাল সার্ভিসের বেসরকারীকরণ বা পুনর্গঠন কর্মসংস্থান এবং জনগণের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হবে। গত বছর ডিসেম্বরে দেশ রিপোর্ট করেছিল যে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পোস্টাল সার্ভিসকে কমার্স ডিপার্টমেন্টে স্থানান্তরের পরিকল্পনা বিবেচনা করছেন এবং তার কিছু সহযোদ্ধা পোস্টাল সার্ভিসের বেসরকারীকরণের পক্ষে ইঙ্গিত দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র পোস্টাল সার্ভিস দীর্ঘ সময় ধরে তহবিল সংকটের মুখে পড়েছে, তবে এর কর্মী সংখ্যা ৬ লাখেরও বেশি। যা এটিকে দেশের অন্যতম বৃহৎ নিয়োগকর্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
২৩ মার্চ, বুধবার মার্কিন কংগ্রেসে পোস্টাল সার্ভিসের পোস্টমাস্টার জেনারেল লুইস ডে জয় জানিয়েছিলেন যে, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে ১০,০০০ জন কর্মী স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন, যা এই সেবা পরিষেবার ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে। এই প্রতিবাদ সমাবেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহর, যেমন শিকাগো, বস্টন, লস অ্যাঞ্জেলেস, ন্যাশভিল, হিউস্টন এবং ওয়াশিংটন ডিসিসহ অন্যান্য শহরে হাজার হাজার কর্মী এবং সমর্থকরা একত্রিত হন। শিকাগোতে, কর্মীরা ফাইট লাইক হেল লেখা লাল শার্ট পরিধান করে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও এলন মাস্কের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, পোস্টাল সার্ভিসকে বেসরকারীকরণ করতে দেব না। এই আন্দোলনে অংশ নেয়া আইনপ্রণেতাদের মধ্যে ছিলেন প্রতিনিধি ম্যাক্সিন ওয়াটার্স, সিনেটর ডিক ডারবিন এবং টিনা স্মিথ। সিনেটর ডারবিন জানান, পোস্টাল সার্ভিস কনস্টিটিউশনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এবং এটা দেশের জন্য অপরিহার্য।
গত ২৪ মার্চ, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে নিউ ইয়র্ক শহরের ৫৫ তম স্ট্রিট এবং ৩য় এভিনিউতে ইউনাইটেড স্টেটস পোস্টাল সার্ভিসের কর্মীরা প্রতিবাদ মিছিল আয়োজন করেন। এই প্রতিবাদ মিছিলের মূল দাবি ছিল, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক পোস্টাল সার্ভিস বেসরকারীকরণের চেষ্টা বন্ধ করা। মিছিলের আয়োজন করেছিল ব্রাঞ্চ ৩৬ এবং অন্যান্য মেট্রো এলাকার পোস্টাল ইউনিয়ন। প্রতিবাদ সমাবেশটি শুরু করেন ব্রাঞ্চ ৩৬ এর সভাপতি চার্লস পি হিজি, এরপর সমাবেশটি পরিচালনা করেন প্রথম সহ-সভাপতি ও ট্রেজারার পাস্কাল অরটিজ।
এই প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরাও, যারা পোস্টাল সার্ভিসের পক্ষে সমর্থন জানায়। বাংলাদেশি আমেরিকান পোস্টাল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনও এই সমাবেশে অংশগ্রহণ করে, যেখানে সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক হোসেন মজুমদার, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সনি গোপে, উপদেষ্টা বিপ্লব বমিচক, সদস্য জিয়াউর রহমান জিয়া, গোপাল সেন, বিদ্যা রায়, বোলাসহ ইউনিয়ন নেতা পার্থ তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।
পোস্টাল কর্মীরা সতর্ক করেছেন যে, পোস্টাল সার্ভিসের বেসরকারীকরণ বা পুনর্গঠন কেবল তাদের চাকরি এবং কর্মসংস্থানকেই হুমকি সৃষ্টি করবে না, বরং আমেরিকার জনগণের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেবা বিপন্ন হবে। এই প্রতিবাদী কর্মসূচি অবশ্যই শুধুমাত্র একটি শুরুর অংশ, এবং আগামী দিনগুলোতে এই ধরনের প্রতিবাদ এবং আইনি চ্যালেঞ্জ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।