০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৯:৫৭:২২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


অ্যাডামসের স্বাক্ষরে রিকার্স আইল্যান্ডে আইসির অফিস পুনঃস্থাপন
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৪-২০২৫
অ্যাডামসের স্বাক্ষরে রিকার্স আইল্যান্ডে আইসির অফিস পুনঃস্থাপন রিকার্স আইল্যান্ড কারাগার


নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস স্বাক্ষরিত এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে রিকার্স আইল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অভিবাসন সংস্থা (আইস) ও অন্যান্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার জন্য অফিস পুনঃস্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গত ৮ এপ্রিল মেয়রের এই সিদ্ধান্তে উত্তাল হয়ে উঠেছে নিউইয়র্ক শহর। সিটি হল প্রশাসনের দাবি, এই পদক্ষেপ শহরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাদক, অস্ত্র, হত্যা ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবিরোধী অপরাধমূলক তদন্ত জোরদার করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে। তবে বিশ্লেষক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, এটি শহরের ‘স্যাংচুয়ারি সিটি’ নীতির লঙ্ঘন এবং অভিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ।

মেয়র অ্যাডামসের নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী, এ অফিসগুলো শুধুমাত্র অপরাধমূলক তদন্তের কাজে ব্যবহৃত হবে। প্রথম ডেপুটি মেয়র র‍্যান্ডি মাস্ট্রো, যিনি আদেশটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছেন, জানিয়েছেন যে তিনি রিকার্স আইল্যান্ড পরিদর্শন করে এফবিআই, ডিইএ, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি, এটিএফ ও ইউএসপিএস-এর কর্মকর্তাদের সঙ্গে যৌথ তদন্ত বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল থেকে। সিটি কাউন্সিল স্পিকার অ্যাড্রিয়েন অ্যাডামস এক বিবৃতিতে বলেছেন, এই আদেশ নিউইয়র্কের স্যাংচুয়ারি আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং এটি আমাদের নগরীর স্বাধীনতা ও মানবাধিকার রক্ষার নীতির বিরুদ্ধে যায়। তিনি আরো বলেন, আমরা এই আদেশের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। স্পিকার অ্যাডামস আরো বলেন, এই আদেশটি মেয়র অ্যাডামসের ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত চুক্তির বিষাক্ত ফল’। আমরা শহরের পক্ষে দাঁড়াচ্ছি এবং প্রয়োজন হলে আদালতের দ্বারস্থ হব।

গত ১০ এপ্রিল নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে গৃহীত এক প্রস্তাবনায় স্পিকার অ্যাডামসকে মেয়র অ্যাডামস এবং ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এ সিদ্ধান্ত হয়তো মেয়রের বিরুদ্ধে চলমান ফেডারেল দুর্নীতির মামলার রাজনৈতিক বিনিময়ের অংশ। নিউইয়র্ক সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের জ্যেষ্ঠ নীতিনির্ধারক জ্যাক আহমেদ বলেন, এই সিদ্ধান্ত আইসিকে রিকার্স আইল্যান্ডের ‘চাবি’ দিয়ে দেওয়ার মতো। এটি কেবল অমানবিক নয়, বরং আমাদের অভিবাসী ভাইবোনদের মনে ভয় ও শঙ্কা সৃষ্টি করছে। লিগ্যাল এইড সোসাইটিসহ একাধিক নাগরিক অধিকার সংগঠন ইতোমধ্যেই এই আদেশের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

উল্লেখ্য, এক দশকেরও বেশি সময় আগে রিকার্স আইল্যান্ডে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসি)-এর একটি অফিস ছিল, যা অভিবাসী অধিকার রক্ষার স্বার্থে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০১৪ সালে নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল ‘স্যাংচুয়ারি সিটি’ আইন পাশ করে, যার আওতায় ফেডারেল অভিবাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্থানীয় সংস্থাগুলোর সহযোগিতা সীমিত করা হয়।

নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের মাঝখানে দাঁড়িয়ে, নিউইয়র্ক এখন এক কঠিন দ্বন্দ্বে। মেয়র অ্যাডামসের নেওয়া পদক্ষেপ কতটা টিকবে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে আর শহরের অভিবাসন নীতি কী মোড় নেয় তা নির্ধারণ করবে আসন্ন সময়। তবে অভিবাসী সম্প্রদায়ের মনে ইতোমধ্যেই অনিশ্চয়তা, উদ্বেগ এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সবার নজর এখন আদালত ও প্রশাসনের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।

শেয়ার করুন