নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে ডেমোক্র্যাটিক মনোনয়নে ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট জোহরান মামদানি ১২ পয়েন্টের বড় ব্যবধানে সাবেক গভর্নর এন্ড্রু কুমোরকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। গত ১ জুলাই মঙ্গলবার সিটির বোর্ড অফ ইলেকশনস থেকে প্রকাশিত র্যাঙ্কড-চয়েস ভোটের ফলাফলে মামদানি ৫৬% ভোট পেয়েছেন, আর কুমো পেয়েছে ৪৪%। জোহরান মামদানির ভোটের পরিমাণ ৫৪৫৩৩৪, কুমোর ভোটের পরিমাণ ৪২৮৫৩০। জোহরান মামদানি প্রায় ১ লাখ ১৭ হাজার ভোট বেশি পেয়েছেন।
নিউ ইয়র্কের র্যাঙ্কড-চয়েস ভোটিং পদ্ধতিতে প্রথমে কম পয়েন্ট পাওয়া প্রার্থীরা বাদ পড়ার পর তাদের ভোট স্থানান্তর করা হয়। শেষ পর্যন্ত মামদানির ভোট শতাংশ ৭ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ১২ পয়েন্টে উঠে যায়।
কুমোরের মুখপাত্র বলেন, “আমরা সিটির সর্বস্তরের মানুষের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি এবং আগামী পদক্ষেপ নির্ধারণ করবো। এই ফলাফল শুধুমাত্র আমাদের প্রাইমারি ভোটারের এক অংশের মতামত প্রতিফলিত করেছে, যা সংখ্যাগরিষ্ঠের প্রতিনিধি নয়।”
৩৩ বছর বয়সী মামদানি মূলত এক প্রগ্রেসিভ প্ল্যাটফর্ম নিয়ে নির্বাচনে লড়াই করেছেন- ধনীদের উপর কর আরোপ, বাসা ভাড়ার স্থগিতাদেশ, শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত এবং শহরে বাস ফ্রি করার প্রতিশ্রুতি। তিনি বলেন, “গত ২৪ জুন মঙ্গলবার ডেমোক্র্যাটরা স্পষ্ট ভাষায় তাদের মনোনয়ন দিয়েছেন একটি সাশ্রয়ী শহরের জন্য, ভবিষ্যতের রাজনীতি এবং বাড়তে থাকা স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার সাহসী নেতৃত্বের জন্য।”
এদিকে, কুমোর, যিনি চার বছর আগে যৌন হয়রানির অভিযোগে ক্ষমতা থেকে সরে এসেছিলেন এবং এখন একটি তৃতীয় পক্ষের সমর্থন নিয়ে নভেম্বরের নির্বাচনে লড়বেন, সেই নির্বাচনে প্রার্থিতার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছেন। তাঁর সমর্থকরা এখন হয়তো বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের পক্ষে সরে আসতে পারেন, যিনি সাধারণ নির্বাচনে স্বাধীন প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মামদানির এই জয় নিউ ইয়র্কের রাজনৈতিক ও কর্পোরেট স্থাপত্যকে গভীরভাবে আলোগিত করেছে এবং প্রগ্রেসিভ ডেমোক্র্যাটদের একজন নতুন জাতীয় নেতা হিসেবে পরিচিত করিয়েছে।
নিউ ইয়র্ক মেয়র অ্যাডামস, যিনি দুর্নীতির অভিযোগে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন, এখন কেন্দ্র-বাম এবং রক্ষণশীল ভোটারদের সমন্বয়ে একটি সমর্থন গোষ্ঠি গঠন করতে উদ্যোগ নিচ্ছেন। ট্রাম্প অবশ্য অ্যাডামসকে “খুব ভালো মানুষ” বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং বলেছেন, “আমার সাহায্যও করেছেন।” তবে ট্রাম্প মামদানিকে সতর্ক করে বলেছেন, “আমাদের দেশে কমিউনিস্ট দরকার নেই, তবে যদি থাকে, আমি জাতির পক্ষে খুব কাছ থেকে নজর রাখবো।”