০৩ মে ২০১২, শুক্রবার, ০৩:১৪:০৭ পূর্বাহ্ন


ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন যুযোপযোগী করা সময়ের দাবি
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-০৮-২০২২
ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার  (নিয়ন্ত্রণ) আইন যুযোপযোগী   করা সময়ের দাবি


তামাক ব্যবহারের মাত্রাকে যদি এখনই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হয় তাহলে অদূর ভবিষ্যতে তামাকজনিত রোগের চিকিৎসা ব্যয় সরকারের একার পক্ষে বহন করা দু:সাধ্য হয়ে পড়বে। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনটি সংশোধনের মাধ্যমে যুযোপযোগী করা বর্তমান সময়ের দাবী। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছে। 

আজ তামাক বিরোধী জোটের সচিবালয়ের সভাকক্ষে “ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ এর সংশোধন” বিষয়ক একটি সংবাদ সম্মেলনে এদাবি জানান হয়। তামাক বিরোধী জোটের আয়োজনে এ সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ। মূল পেপার উপস্থাপন করেন এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানা। বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, স্কোপের নির্বাহী পরিচালক কাজী এনায়েত হোসেন।

গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ৭১ টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি সুশান্ত সিনহা, বাংলাদেশ পোস্টের সিনিয়র রিপোর্টার আমিনুর রহমান রনি, মর্নিং গ্লোরি পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসান খতিব, প্রজন্মের আলোর সম্পাদক মো. আব্দুর রহমান রিজভী, সমকাল ও দ্যা নিউ ন্যাশন এর বরগুনা প্রতিনিধি এম এ মতিন আকন্দ, দৈনিক সুপ্রভাত এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. নাসির উদ্দিন অনিকসহ আরো কয়েকজন গণমাধ্যম প্রতিনিধি। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তামাক বিরোধী জোটের সদস্য সংগঠন সিয়াম এর নির্বাহী পরিচালক, মাসুম বিল্লাহ, ব্যুরো অব ইকোনোমিক রিসার্চ এর প্রকল্প কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্টের হেড অব প্রোগ্রাম সৈয়দা অনন্যা রহমান।

বক্তারা বলেন, প্রস্তাবিত খসড়া অনুসারে খুচরা তামাক পণ্য বিক্রয়, ই-সিগারেট, তামাক কোম্পানীর সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কার্যক্রম, ভ্রাম্যমান দোকানের মাধ্যমে তামাক পণ্য বিক্রয় এবং বিনোদন মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার নিষিদ্ধ, তামাকজাত পণ্য বিক্রয়ে বাধ্যতামূলকভাবে লাইসেন্স গ্রহণ, স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং ইত্যাদি বিষয়গুলো অবশ্যই গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এর পাশাপাশি ধূমপানমুক্ত স্থানে তামাক পণ্য বিক্রয় নিষিদ্ধ এবং “এফসিটিসির আর্টিক্যাল ৫.৩ অনুসারে তামাক কোম্পানীর প্রভাব থেকে নীতি সুরক্ষা” প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিধান আইনে থাকা জরুরি। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি যুগোপযোগী না করা গেলে তামাক নিয়ন্ত্রণে কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে না। শুধু মাত্র জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন নয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যয় অনুসারে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলেও আইনটিকে শক্তিশালী করার বিকল্প নেই। আইনের সংশোধন জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যয় অনুসারে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকার বাস্তবায়ন বাংলাদেশকে আরো একধাপ এগিয়ে দেবে। বক্তারা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটির খসড়া, বিধিমালা প্রণয়ন ও প্রবর্তনে গণমাধ্যমকর্মীদের অবদানের কথা তুলে ধরেন এবং বর্তমান আইনটি সংশোধনেও গণমাধ্যমের আন্তরিক সহায়তা প্রত্যাশা করেন।

তামাক বিরোধী জোট এর পক্ষ থেকে সুপারিশে বলা হয় বর্তমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনা এবং বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সুপারিশ অনুযায়ী সংশোধনের মাধ্যমে যুগোপযোগী ও শক্তিশালী করা হোক। তামাক কোম্পানী থেকে সরকারের শেয়ার প্রত্যাহারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। কোম্পানীর প্রভাব থেকে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে সহায়ক নীতিসমুহ সুরক্ষায় এফসিটির আর্টিক্যাল ৫.৩ অনুসারে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন ও কোড অব কন্ডাক্ট প্রণয়ন করা দরকার। তামাক নিয়ন্ত্রণের সাথে সাংঘর্ষিক বাংলাদেশে বিদ্যমান আইন ও নীতিসমুহ যুগোপযোগী করতে হবে। শিল্প উন্নয়ন পুরুস্কারের ন্যায় রাষ্ট্রিয় পুরুস্কার প্রদানের ক্ষেত্রে তামাক উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোকে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। 


শেয়ার করুন