২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৩:৩৩:০৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


দেশকে হীরা : মেয়েদের ক্রিকেটে আমি সন্তুষ্ট
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৩-২০২২
দেশকে হীরা : মেয়েদের ক্রিকেটে আমি সন্তুষ্ট শফিকুল হক হীরা


 মেয়েদের বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে কে উঠবে সে নিয়ে চলছে উত্তেজনা। নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আট দলের এ আসরে শেষ মুহূর্ত বেশ জমজমাট। বাংলাদেশ এ আসরের মাধ্যমে খেলছে প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপ। কেমন পারফরমেন্স দলটির? এ নিয়ে দেশ’কে বিস্তারিত জানিয়েছেন মহিলা দলের সাবেক ম্যানেজার ও এক সময়ের বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় ও ম্যানেজার শফিকুল হক হীরা। 

এ আসরে বাংলাদেশ তাদের প্রথম বিশ্বকাপ ম্যাচে জয়ও পেয়েছে। ১৯৯৯ সনে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদীন নান্নুরা প্রথম জয় পেয়েছিল স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। এরপর পাকিস্তানকেও হারিয়েছিল। মেয়েরা এ আসরে সেই পাকিস্তানকে হারিয়েই বিশ্বকাপে প্রথম জয় তুলেছে। দলের সার্বিক পারফরমেন্স সম্পর্কে বলতে যেয়ে শফিকুল হক হীরা বলেন, ‘আমি ওদের পারফরমেন্সে সন্তুষ্ট। কারণ বিশ্বকাপে যে দলগুলোর বিপক্ষে খেলছে ওরা, এদের মধ্যে ভারত ও পাকিস্তান ছাড়া অন্য দলের বিরুদ্ধে কোনো ওয়ানডে ম্যাচ খেলারই সুযোগ পায়নি। নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে ওরা যা করছে এটা খুবই আশাব্যাঞ্জক। আমার ওদের উপর খুবই আস্থা আছে। আমি খুবই আশাবাদী ওদের নিয়ে।’ বিশ্বকাপে খেলতে হলে ওই আসরের দলগুলোর বিপক্ষে খেললেই তো কেবল তাদের সম্পর্কে জানা যায়। প্লান করা যায়। তাছাড়া প্রতিপক্ষ সব দলই অনেক অভিজ্ঞ, একে অপরের বিপক্ষে অনেক ম্যাচ খেলেছে সেটা বিশ্বকাপের আগের আসরগুলো ছাড়াও দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বা অন্যান্য স্থানে। সে সুযোগ বাংলাদেশের জন্য ছিল খুবই সীমিত। 


হীরা বলেন, ‘যদি ওদের খেলার সময় ধারাভাষ্য শুনতেন, তাহলে বুঝবেন যে ধারাভাষ্যকাররা বাংলাদেশ দলের বোলারদের ভীষণ প্রশংসা করছে। ব্যাটিংয়েও ভাল। ফিল্ডিংও। কিন্তু অভিজ্ঞতা ছাড়া তো ভাল করা যায় না। তবুও পাকিস্তানের মত শক্তিশালী একটা দলকে হারিয়ে দিয়েছে এটা চাট্টিখানি কথা না। যদিও ওই ম্যাচে আমার মনে হয়েছে, পাকিস্তান গুড পজিশনে থেকেও তাদের নিজস্ব কিছু দুর্বলতার জন্য মুহূর্তের মধ্যে এলোমেলো হয়ে হেরে গেছে। কিন্তু জয় তো জয়ই। বাংলাদেশ জিতেছে এটাই বড় কথা।’ 


বিশ্বকাপের অন্য দলগুলোর শক্তি নিয়ে বলতে যেয়ে তিনি বলেন, ‘ভারত, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্টইন্ডিজ এসব দল মূলত চ্যাম্পিয়ন ফাইট দেয়ার জন্যই এসেছে। সে তুলনায় বাংলাদেশ অনেক পেছানো স্বল্প অভিজ্ঞতার দল বলতে পারেন। পরের দুই ম্যাচ অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ওখানে লড়াই করুক এটুকুই আমার প্রত্যাশা। জয় আশা তো করছিই। কিন্তু প্রতিপক্ষরা খুবই শক্তিশালী। জয় না পেলেও লড়াই করতে পারলেও অনেক অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন ওরা। তবে ওদের এ অভিজ্ঞতা খুবই কাজে দেবে পরবর্তিতে। কারণ বাংলাদেশের পরবর্তি দুই বছর অনেক ম্যাচ রয়েছে। সে ম্যাচগুলো ভাল হবে।’   


বাংলাদেশের জাতীয় মহিলা দল : সংগৃহীত 

মেয়েদের বিশ্বকাপ। অথচ এ নিয়ে তেমন হৈ চৈ নেই। পুরুষ বিশ্বকাপে তোলপাড় হলেও মেয়েদের আসর নিয়ে সে পরিমাণ উচ্ছ¡াস না থাকার কারণ হিসেবে তিনি বলেন,‘ দল পারফরমেন্স করলে মানুষও এদের দিকে নজর দেয়। ওরা তো সবে শুরু করলো। তাছাড়া মিডিয়া খুবই সোচ্ছার। তারা ভাল কাভারেজ দিচ্ছে।’ 

পাকিস্তানের সঙ্গে জয়ের পর ভারতের সঙ্গে বেশ বাজেভাবেই হেরেছে দল। ভারতের করা ২২৯/৭ রানের জবাবে বাংলাদেশের স্কোর ৪০.৩ ওভারে ১১৯। এ স্কোরটা মোটেও মানানসই নয়। জাতীয় দলের সাবেক উইকেটরক্ষক কাম ব্যাটসম্যান বলেন, ‘এটলিস্ট ৫০ ওভার খেলে যাওয়ার টার্গেট করা উচিত ছিল। এতে স্কোরটাও বাড়তো। সব ম্যাচেই জয় পাওয়া যাবে এমন না। তবে সম্মানজনক একটা ম্যাচ হওয়া উচিত। এতে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়। সে কাজটা করতে পারেনি। আমার মনে হয় ওরা কিছু শট নিয়েছে সেগুলো বর্জন করে দায়িত্ব নিয়ে খেলে গেলে ভাল হতো। এ ব্যাপারে কোচদেরও ভাল পরামর্শ দেয়া উচিত। অনেক সময় মাঠে প্রতিপক্ষের প্রেসারে প্লান মত সব হয়ও না। তবু ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে মনে রাখা উচিত।’ 

দলের কোচিং স্টাফ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘আমার মনে হয় অভিজ্ঞ কোচিং স্টাফের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা উচিত। যারা রয়েছেন ভাল। কিন্তু এখানে দীর্ঘমেয়াদী ভাল ও অভিজ্ঞ কোচ থাকা প্রয়োজন। দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, জাতীয় দলের পেস বোলার মঞ্জুরুল ইসলাম। ও তো এক সময় চীন দলের কোচ ছিল। ও খুব ভাল। ওকেও দায়িত্ব দেয়া যায়। অন্য যে কেউ হতে পারে। বিশেষ করে মেয়েদেরকে যিনি খুব বুঝবেন, ওরাও সাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন এমন কোচ হওয়া প্রয়োজন। শুধু হেড কোচই নয়, বোলিং, ফিল্ডিং সর্বস্তরেই। একই সঙ্গে ওদের বিভিন্ন ফ্যাসেলিটিজও। বিশেষ করে বিসিবি’র ভালমত দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। তাহলে একদিন ছেলেদের মত ওরাও দেশের জন্য সম্মান বয়ে নিয়ে আসবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এ ব্যাপারে অধৈর্য হওয়াও চলবে না। ওদের সময় দিতে হবে। বাংলাদেশ দলও তিলে তিলে আজ এ পর্যায়ে। সেটা মনে রাখতে হবে। যে মেয়েদেরও সময়, অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ খেলা। বিভিন্ন কন্ডিশনে যেয়ে ম্যাচ খেলারও প্রয়োজন। তাহলেই ওরা একদিন রেজাল্ট নিয়ে আসবে।’

শেয়ার করুন