২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৩:৫৩:৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


পাল্টে যাচ্ছে দেশের দৃশ্যপট
খন্দকার সালেক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৮-২০২৩
পাল্টে যাচ্ছে দেশের দৃশ্যপট কর্ণফুলী টানেল


ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অনেকের অপছন্দ হলেও দীর্ঘ তিন টার্মের যেসব কাজ তাদের দৃশ্যমান, সেগুলোকে অস্বীকার করছে না খোদ তাদের শত্রুরাও। বিশেষ করে দেশের উন্নতিতে ওই সব মেগা প্রজেক্টের সুফল মানুষ পাওয়া শুরু করেছে, পাবেও। সব  প্রজেক্ট এখনো শেষ হয়নি। তবে এ বছরেরই ২০২৩ সনের ডিসেম্বরের মধ্যে এসব বেশকিছু মেগা প্রজেক্টের সুফল পাওয়া শুরু হবে। মানুষ বিগত সময়ের সরকারসমূহকে পছন্দ করলেও যারা দোদুল্যমান তারা ঠিকই আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংকে যুক্ত হবেন এ সফলতা গ্রহণের মাধ্যমে এ প্রত্যাশা করতেই পারে বঙ্গবন্ধু কন্যার দল। 

কোন কোন প্রজেক্ট উদ্বোধনের অপেক্ষায়- 

দেশে এখন অনেকগুলো মেগাপ্রকল্প সমাপ্তির পথে। পদ্মা সেতুর সফল সমাপ্তির পর ওই সেতুতেই যে আরো একটি প্রজেক্ট সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে সেটা রেলপথ। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ চালু হবে পর্যায়ক্রমে পদ্মা বহুমুখী সেতু বরাবর ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা রেলপথ।  

এরপর যেটা বিশেষ আলোচিত সেই মেট্রোরেলের উত্তরা-মিরপুর-ফার্মগেট-শাহবাগ-প্রেসক্লাব-মতিঝিল অংশ। এককথায় বললে উত্তরা থেকে মতিঝিল শাপলা চত্বর পর্যন্ত মেট্রোরেল অক্টোবর নাগাদ শুরু হবে যাত্রী পরিবহেন। ইতিমধ্যে চলছে ট্রায়াল ট্রেন। দেখা হচ্ছে, শেষ মুহূর্তের খটুটিনাটি। 

উত্তরা থেকে আরো একটা প্রকল্পও উদ্বোধনের অপেক্ষায়। সেটা ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে বনানী হয়ে আপাতত তেজগাঁও পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়ের কাজ শেষের পথে। এটাও যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার জন্য দিনরাত কাজ করে চলছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এটা হয়ে গেলে বিমানবন্দর থেকে যানজট এড়িয়ে তেজগাঁও, ফার্মগেট ওইদিকে সাতরাস্তা এমনকি মোটামুটি কাকরাইল বা রাজারবাগ হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত গাড়ি চলাচল নির্বিঘœ হওয়া সম্ভবপর হবে। কারণ সাতরাস্তা বরাবর তেজগাঁও পর্যন্ত গিয়ে নেমে গাড়িগুলো সাতরাস্তা হয়ে বিদ্যমান ফ্লাইওভার ব্যবহার করতে পারবে মতিঝিল, কাকরাইল, প্রেসক্লাবমুখী হতে।  

শেষ মুহূর্তের কাজ সম্পন্ন করার তোড়জোড় আরো একটি মেগাপ্রকল্পের। সেটা হজরত শাহ্জালাল ( রহ.) বিমানবন্দরের তৃতীয় ইউনিট। এটাও এ সময়ের মধ্যে খুলে দেওয়ার কাজ যতদূর জানা গেছে খুলে দেওয়া হবে। শেষ মুহূর্তের ঘষামাজা ও কানেকটিং কাজ চলার দৃশ্য প্রতিনিয়তই দেখা যাচ্ছে, আপডেট দিচ্ছে।  

পূর্বাচল হয়ে মহাসড়কের কাজও প্রায় শেষ। সেখানেও চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ। যদিও ওটা শুধু পূর্বাচলকেন্দ্রিক, তবুও এ রাস্তা ব্যবহার করে ভুলতা গাউছিয়াতে অনায়াসে দ্রুত যাতায়াত করা সম্ভব এখনই। বাকি ওই রোডের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে নেমে আসা মহাসড়ক যেটা গাজীপুর চৌরাস্তা হয়ে এসেছে সেটার কাজও চলছে দ্রুতগতিতে। তবে সেটা সম্পন্ন করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।  

এছাড়াও চট্টগ্রামে কক্সবাজার রেলপথ, দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। এখন সেটাও উদ্বোধনের অপেক্ষায় শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে। সঙ্গে রয়েছে ওই অঞ্চলের কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ। 

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রাস্তাপথে যাবার সহজ পথ হবে কর্তফুলী নদীর তলদেশে সুড়ঙ্গ পথ ধরে। সেটা টানেলের কাজও শেষ। সেটাতেও শেষ মুহূর্তের কাজ করে খুলে দেওয়া হবে শিগ্গিরই যান চলাচলের জন্য।  

এছাড়া মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট, রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের সঙ্গে অনেক অর্থনৈতিক উন্নয়ন কাজ অগ্রবর্তী পর্যায়ে আছে।  

বলার আর অপেক্ষা রাখে না, এগুলো পর্যায়ক্রমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। আমি ২০২২ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত প্রান্তরসমূহে ব্যাপকভাবে সফর করেছি এবং এসব অনেক কর্মযজ্ঞ প্রত্যক্ষ করেছি। 

সত্যিকার অর্থেই এগুলো চালু হলে দেশের অনেক চিত্র পাল্টে যাবে বৈকি। সারাদেশের চিত্র বিপুলভাবে পাল্টে গেছে। আমি পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা, রাজশাহী, দিনাজপুর, খুলনা, ফরিদপুর, কুমিল্লা ঘুরে নানা স্তরের সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। আপামর মানুষ এসব উন্নতিতে খুশি। তাদের চোখেমুখে তৃপ্তির ঢেকুর। 

স্বীকার করি দেশে জ্বালানি সংকট আছে, নিত্যপণ্যের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণহীন। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে না। কিন্তু দেশে এমন  অবস্থা হয়নি যে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে এসে জনমত যাচাই  করুক এটা অনেক মানুষের দাবি। আর দেশের অগণিত মেধাবী নতুন প্রজন্ম সবকিছু বুঝে এবং জানেন। নিঃসন্দেহে সরকার প্রধানও অনুধাবন করছেন যে, তার দলের দুর্নীতি সম্পৃক্ত মন্ত্রী সাংসদদের। যে কোনো ধরনের পরিস্থিতিতে সুস্থ পরিবেশে নির্বাচন হলে আমি সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচিত হওয়ায় কোনো সংকট দেখি না। শুধু সরকার প্রধানকে দলের প্রার্থী নির্বাচনে সৎ, নিষ্ঠাবান প্রার্থীদের প্রাধান্য দিতে হবে এটাই মনে হচ্ছে। চাটুকারদের পরিহার করতে হবে। মাফিয়া সিন্ডিকেট চক্র ভেঙে দিতে হবে।

এ কাজগুলোও কঠিন বিশেষ করে দেশের ওইসব উন্নয়নের চেয়েও। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যার দৃঢ়তার কথা দেশের মানুষ জানেন। ফলে দেশের মানুষের আস্থা শতভাগ তার দিকে নিতে ওই কাজগুলো তিনি করবেন এটা প্রত্যাশা করা যেতেই পারে। আর সেটা করতে পারলে নির্বাচনের প্রাক্কালে বদলে যেতে পারে দেশের সব দৃশ্যপটই!

শেয়ার করুন