১২ এপ্রিল ২০১২, বুধবার, ০৮:২৩:৫০ পূর্বাহ্ন


দেশকে নুরুল হক নুর
সংঘাত- সংঘর্ষ হলে দেশে ব্লাড শেড হবে
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-১২-২০২২
সংঘাত- সংঘর্ষ হলে দেশে ব্লাড শেড হবে ভিপি নুরুল হক নুর


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি এবং গণঅধিকার পরিষদের  সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেছেন, ১০ ডিসেম্বরকে টার্গেট করে আওয়ামী লীগ  ৬ ও ৮ তারিখ ছাত্রলীগের সম্মেলনে নামে আসলে অন্য কিছু করতে চাইছে। ১০ ডিসেম্বরকে মোকাবেলা করতে ছাত্রলীগের সম্মেলনের নাম দিয়ে মূলত সারা দেশে থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঢাকায় এনে জমা করা হচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে, যে বিএনপি’র ১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচিকে টার্গেট করে সরকার দেশকে একটি সংঘাত-সহিংসতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। 

আমেরিকা থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সাথে এক সাক্ষাৎকারে নুরুল হক নুর একথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ। সাক্ষাৎকারটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। 

দেশ: সামনে ১০ ডিসেম্বর। বিএনপি ঢাকায় মহাসমাবেশ ডেকেছে। আপনরাও এসরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। এখন বলুন এ অবস্থায় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি কি? 

নুরুল হক নুর: দেশের পরিস্থিতি দেখে যা বোঝা যাচ্ছে তা হলো একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতির দিকেই আগাচ্ছে। সরকারি ও তার দল একটি সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনকে ব্যবহার করে তারা বিরোধী দলের সভা সমাবেশে বাধা দিচ্ছে, হামলা করছে। বিশেষ করে ডিসেম্বর কেন্দ্রিক সারা দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সভা সমাবেশের কর্মসূচি রয়েছে। বিএনপি’র সমাবেশ আছে ১০ ডিসেম্বর। সরকার কিন্তু এসব কর্মসূচির কাউন্টার দিতে ছাত্রলীগের, মহিলা লীগের সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়েছে। ১০ ডিসেম্বরকে টার্গেট করে তারা ৬ ও ৮ তারিখ তারা ছাত্রলীগের সম্মেলনে নামে আসল অন্য কিছু করতে চাইছে। তারা এসব সম্মেলন ও কর্মসূচি দিয়ে আসলে ১০ ডিসেম্বরকে মোকাবেলা করতে চায়। ছাত্রলীগের সম্মেলনের নাম দিয়ে তারা মূলত সারা দেশে থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঢাকায় আনছে। এতে করে বোঝা যাচ্ছে যে বিএনপি’র ১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচিকে টার্গেট করে সরকারও একটি সংঘাত-সহিংসতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে দেশকে। এতে করে দেশে ব্লাড শেড হবে। এধরনের ঘটনা ঘটে গেলে দেশে একটি অস্বাভাবিক শক্তির উত্থান হতে পারে। তাই স্বাভাবিকভাবে দেশে সার্বিক পরিস্থিতি ভালো বলা যাচ্ছে না। রাজনৈতিক অর্থনৈতিক থেকে নিয়ে সব দিক থেকে একটি উদ্বেগজনক অবস্থায় আছে।  

দেশ : সরকারতো ১০ ডিম্বেরের বিএনপি’র সমাবেশকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা তাদের দু’টি অঙ্গসংগঠনের সম্মেলন আগে ভাগে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করেছেন। এমনকি বিএনপিকে একটি ঐতিহাসিক ময়দানে তাদের মহাসমাবেশ করতে ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তা হলে আপনি কি করে বলেন সরকার একটি সংঘাতমূলক পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে দেশকে? এটা কি ধরে নেয়া যায় না যে সরকার বেশ আন্তরিক বিএনপি’র সভা সমাবেশটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে?

নুরুল হক নুর: বিএনপি ১০ ডিসেম্বরে সমাবেশ করতে চাইছে তাদেরই দলের কার্যালয়ের সামনে। তারা কেনো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাবে? সেখানে সমাবেশ করতে দিলে বিএনপি কেনো সেখানে যাবে? সেখানে (সোহরাওয়াদী উদ্যান) আশে পাশে তো অনেক আগে থেকেই সারা দেশ থেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ঢাকায় নিয়ে আসা হচ্ছে। তারা এর আশে পাশে থাকবে বিএনপি’র সমাবেশের আগেই। এর আগে দেখেছেন ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ মিছিলে ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী ক্যাডারেরা কিভাবে হামলা করেছে, গুলি চালিয়েছে। ঠিক এভাবেই আরেকটি হামলার প্রস্তুতি আছে ছাত্রলীগের। সরকারতো চাচ্ছে বিএনপি’কে সেখানে নিয়ে একটা হামলা মামলা করে একটা আতঙ্কিত পরিবেশ তৈরি করতে। এটা বুঝতে পেরেই বিএনপি সেখানে তাদের মহাসমাবেশ করতে চাচ্ছে না। আর আমি মনে করি সোওয়াওয়াদী উদ্যানে সমাবেশ করতে যাওয়ার ব্যাপারে বিএনপির সম্মতি দেয়াটা ঠিক হবে না। ভালো কাজ হবে না। বরং বিএনপি’র কার্যালয়ের সামনেই তারা মহাসমাবেশ করা ঠিক হবে। কেননা সেখানে তাদের দলের কার্যালয় ছাড়াও অনেক অঙ্গসংগঠনের কার্যালয় আছে। বিএনপির জন্য নয়া পল্টনই সেইফ মনে হচ্ছে। আর সরকার চাচ্ছে বিএনপি একটা সংঘাতের দিকে নিয়ে যেতে। বিএনপি’র বিরুদ্ধে একটা সহিংসতার চিত্র দেশ এবং বিদেশে তুলে ধরতে। সরকার প্রমাণ করতে চায় বিএনপি সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে। একটি বড়ো সহিংসতার ইপ্লিমিন্ট করতে সরকার বিএনপি’কে সোহরাওয়াদী উদ্যানে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। দেখেন একটা দল যদি কমফোর্ড ফিল করে যে তারা তাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে তাতে সরকারের বাধা দেয়ার কি আছে?  

দেশ: রাষ্ট্র ও দেশের জনগণের নিরাপত্তার ব্যাপারে সরকারেরও তো একটা দায়িত্ব আছে। সে দায়িত্ব থেকে তারা যদি মনে করে সোহরাওয়াদীতে সমাবেশ করতে দিতে চায় তাহলে তাতে দলটির মত দিতে অসুবিধা কি? সরকারের বিভিন্ন নেটওয়ার্ক যদি মনে করে সোহরাওয়াদী উদ্যানে সমাবেশ করাই বিএনপির জন্য সেইফ। তাহলে না মানার কি আছে?

নুরুল হক নুর: সরকারতো কোনো সৎ উদ্দেশ্য নিয়েই একাজ করছে না। তারা মূলত বিএনপি’কে ঢাকায় মহাসমাবেশ করতে দিতে চায় না। তারা যদি জনদুর্ভোগের কথা বলে তাহলে দেখেন কয়েকদিন আগে যুবলীগের সম্মেলনে কি হয়েছে? স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদ, মহিলা লীগের সম্মেলন ঢাকায় হয়নি? বা হতে যাচ্ছে না? এতো গুলা সম্মেলনতো এই মাস ও ঢাকায় না-ও দিতে পারতো তারা? এতো কাছাকাছি সময়ে তারা ঢাকায় এতোগুলা সম্মেলনের আয়োজনের কারণ কি? এসব কর্মসূচিতে যানজট লেগেই যায়। যা কয়েকদিন আগে যুবলীগসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে দেখা গেছে। তাছাড়া আমি মনে করি জনগণের যৌক্তিক দাবি আদায়ে রাজনৈতিক দলের একদিনের কর্মসূচির জন্য ত্যাগ স্বীকার করা কোনো ব্যাপরই না। একদিনের ভোগান্তি তারা মেনেই নেয়। এই ধৈর্য জনগণের আছে। তারা এই কষ্ট মেনে নেয়। এনিয়ে সরকারের আসলে উদ্বেগের কারণ নেই। যেকোনো রাজনৈতিক দলের সভা সমাবেশ করলে দুর্ভোগ টুকটাক হবেই। সেটা জনগণ মেনেই নেয়। বিরোধী দলের প্রাসঙ্গিকতা আছে। কিন্তু সরকারি দল যে সভা সমাবেশ করে তার কেনো প্রাসঙ্গিকতা নেই। প্রধানমন্ত্রীর জায়গা থেকে এব্যপারে যে হুমকি দেয়া হচ্ছে তাতো গ্রহণযোগ্য না। খুবই উদ্বেগজনক। 

দেশ: এক্ষেত্রে বর্তমান সঙ্কট নিরসনে আপনার পরামর্শ কি?

নুরুল হক নুর: সরকার যদি আন্তরিক হয় তাহলে এধরনের সঙ্কট নিরসেন সে রাজনৈতিক দলের সাথে বলে আলাপ আলোচনা করবে। সংকট থেকে উত্তোরণের জন্য একটা প্রক্রিয়া বের করতে পারে। প্রক্রিয়াটা কেমন? এখানে সমস্ত রাজনেতিক দল বলছে এখানে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে যে ধরনের নির্বাচন হয়েছে সেখানে জনগণের মতামতের প্রতিফলন হয়নি। ২০১৮ সালে এসরকার তার অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিয়ে বিরোধীদল নির্বাচনে নিয়ে গেছে। কিন্তু সরকার বিরোধী দলের সাথে দেয়া আশ্বাস রাখেনি। দলীয় সরকারের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে না তা এসরকার আবার প্রমাণ করেছে। অর্থ্যাৎ দলীয় সরকারের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না সে কথাটি সরকার আবারো প্রমাণ হয়ে গেছে। এখন বিরোধীদলগুলি বলছে, যে আগের তত্ত্বাবধায় সরকারের আদলে কিংবা সেটার অনুকরণে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করে তার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন দেয়া হোক। আমি মনে করি সেটাই বর্তমান সরকারের জন্য একটি সেইফ এক্সজিট হতে পারে। আসলে এধরনের সরকার কিন্তু পৃথিবীর কেনো দেশেই টিকে না। দু’দিন আগে বা পরে পতন হয়ে যায়। সুতরাং সরকার কিন্তু বিদায় নিতে হবে। তাদের যদি গণঅভ্যুর্থানের মাধ্যমে পতন হয় তা কি যে অবস্থা হবে- শ্রীলকার মতো..পরনের কাপড়-চোপড়ও থাকবে না। সেটাতো ভালো হবে না। 

দেশ: কথায় কথায় আপনারা শ্রীলঙ্কার মতো অবস্থার কথা বলছেন আপনারা ..কই এমনতো কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। 

নুরুল হক নুর: গণঅভ্যুর্ত্থানতো সব সময় হয় না। জনগণতো সব সময় রাস্তায় নেমে আসে না। গত কয়েকবছরের মধ্যে দেখবেন সর্ববৃহৎ ছাত্র আন্দোলন হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোরন, নিরাপদ আন্দোলন। কিশোর তরুণরা রাস্তায় বের হয়েছে। গাড়ি আটকে দিয়েছে। দাবি আদায়ে তারা মহাসড়ক অবরুদ্ধ করে ফেলেছে। দেশের তরুণ সমাজ এরকম করবে তাতো কল্পনায়ই ছিল না। আজকে নির্তপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় যে ক্ষোভ, সমস্ত কাঠামোগুলি দলীয় করণ করে নষ্ট করে সরকার এদেশকে যেভাবে ব্যর্থ অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে এবং যাচ্ছে-সেখানে জনগণ তার অস্থিত্ব রক্ষায়ই এসময়ে নেমে পড়বে। সেটা কখন ঘটবে সেটা তো আমরা বলতে পারি না। আর সেটা যখন ঘটবে তখন ঠিকই এধরনের একটা পরিস্থিতি তৈরি হবে। 

দেশ: দেশের জনগণ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করেছে। কোটা বিরোধী আন্দোলনেও জনগণ স্বত:স্ফূর্তভাবে ঝাপিয়ে পড়েছে। কই আপনাদের ভাষায় দু:শাসনের বিরুদ্ধে বা গণতন্ত্র রক্ষায় কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে জনগণের মধ্যে কি এমনটা দেখা যাচ্ছে ? আপনাদের বা বিএনপি’র সমাবেশে কি সেধরণের জনস্রোত দেখা দিচ্ছে?

নুরুল হক নুর: এখন বিষয়টা গণতন্ত্র বা সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। মানুষের বাঁচা মরার একটা প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজ ঢাকার ক্ষেত্রে দেখুন। বায়ুদুষণে পৃথিবীর সবচেয়ে দুষিতের শীর্ষে আছে দেশটি। আমরা যা খাচ্ছি সবজি মাছ থেকে শুরু করে প্রায় সব কিছুতেই বিষ। মিস ম্যানেজমেন্টের কারণে জনগণের জীবনটাই এখন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে দেশের মানুষের স্বাধীন চেতা মনোভাবের উপরও হস্তক্ষেপ আসছে। মানুষ চায় তার নিজের ভোট নিজে দিতে। সে চায় তার ভোটেই একটি সরকার ক্ষমতায় থাকবে। সে সুযোগটাও নেই। বলা চলে বেঁচে থাকার লড়াইয়ের একটা চূড়ান্ত পর্যায়ের দিকে মানুষ এসে পড়েছে।  মানুষের অস্তিত্বের স্বার্থেই তারা সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামতে বাধ্য। আমারতো মনে হয় এখন একটা উপযুক্ত সময় গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর জন্য। 

দেশ: বলছেন উপযুক্ত? এমন পরিস্থিতিই কি দেখছেন আপনি? দেশের জনগণকে আপনি সে অবস্থায় দেখছেন?

নুরুল হক নুর: মানুষ নামবেই। কখন নামবে তাতো দিন তারিখ হিসাব করে বলা যাবে না। মানুষ তার প্রয়োজনেই নামবে। যেমন আমরা বেশ কিছু সভা সমাবেশ করি। তার আগে কি বলতে পারি? আমরা দুই তিনটা সমাবেশের আগে লিফরেট বিতরণ করি। বিভিন্ন মার্কেট জনসমাগমে আমরা জনদাবি নিয়ে লিফলেট বিরতণ করি। এসময় দেখা যায় মানুষের জনসমর্থন। এবং দেখি আমাদের সভা সমাবেশে কি পরিমাণ লোক সমাগম হচ্ছে। কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে যদি রাস্তায় নামা যায় তাহলে জনগণ রাস্তায় নামবেই। 

দেশ: আপনি এখন বিএনপি’র প্রতি বেশ সহানুভুতিশীলই মনে হচ্ছে। এ-ই আপনিই বলতেন বিএনপি বা আওয়ামী লীগ একিই ধারার রাজনীতি করে। জনগণকে শোষণ করে নিয়ে যায়। সেই বিএনপি’র ডাকে জনগণ আসছে বলে আপনি মনে করেন?

নুরুল হক নুর: এটাতো ঠিক যে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ব্যাপারে জনগণের মধ্যে আস্থার একটা ঘাটতি আছে। বিশেষ করে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে যারাই গত ৩০ বছরে যারাই ক্ষমতায় ছিল তাদের একিই চরিত্র ছিল। বিএনপি’র এখন কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। তারা জনগণের সেন্টিমেন্ট বুঝতে পারছে। সে কারণে তারা তাদের আগের অনেক অবস্থান থেকে সরে আসছে। তারা জাতীয় সরকারের কথা বলছে। বিভিন্ন আইন, রাষ্ট্রীয় সংস্কারের কথা বলছে। সেদিক থেকে বলা চলে ক্ষমতায় থাকতে আওয়ামী লীগ বিএনপি’র চরিত্রের কোনো পরিবর্তন ছিল না। বিরোধে দলে অবস্থান করে বিএনপি এখন অনেক  পরিবর্তন হয়েছে। একটা পরিবর্তন আমরা তাদের মধ্যে লক্ষ্য করছি। 

দেশ: এখন বলছেন বিএনপি’র মধ্যে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ধরেন এই বিএনপি ক্ষমতায় গেলো। তখন আপনি বা আপনাদের মতো দলের সাথে রাজপথে কি প্রতিশ্রুতি ছিল তা মনে রাখবে? সেসময়ে কি পারবেন এই বিশাল ক্ষমতাসীন বিএনপি নিয়ন্ত্রণে রাখতে?

নুরুল হক নুর: বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কোনো দলই আগামীতে ক্ষমতায় যেতে পারবে না। আর যারাই ক্ষমতায় যাক সেখানে আমাদের একটা অবস্থান থাকবেই। ক্ষমতার বাইরে আমরা কিন্তু খুব অল্প সময়ে একটা জনসমর্থন তৈরি বরতে পেরেছি। এবং ভবিষ্যতেও আমরা সেভাবেই প্লান পরিকল্পনা করে আগাবো। 

দেশ: কি রকম দেশ চান আপনি.. নুরুল হক নুর:

নুরুল হক নুর: ৫১ বছর হয়েছে বাংলাদেশের। এখন পর্যন্ত দেশের একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার ব্যবস্থা তৈরি করতে পারিনি। এখন পর্যন্ত স্বাধীন বিচার ব্যাবস্থা গড়ে তুলতে পারিনি। এর পেছনে দায়ি অযোগ্য মানুষের নেতৃত্বই দায়ি। আমরা চাই রাজনীতিতে যে পরিবারতন্ত্র চলছে। এই যে দুটি দল আছে তারাতো মনে করে দলটি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। সে জায়গা থেকে আমি চাই বৃহ রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চা আসুক। সে গণতান্ত্রিক চর্চা দেশেও ছড়িয়ে পড়ুক। গণতান্ত্রিক চর্চার মধ্য দিয়েই একটা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। দেশে থাকবে দল মত নির্বশেষে কথা বলার অধিকার থাকবে। বেঁচে থাকার অধিকার থাকবে। এবং রাষ্ট্র তার জনগণের প্রতি তার দায়বদ্ধতা থাকবে। নাগরিকরাও তাদের রাষ্ট্রের প্রতি কর্তব্যপরায়ন থাকবে। সেধরনের একটা রাষ্ট্রব্যবস্থা আমরা দেখতে চাই। তার আগে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা ওল্ড জেনারেশনের করাপটেড রাজনীতির সমাপ্ত টানতে হবে। বিদ্যমান স্ট্রাকচারে যদি মানুষের একটা পরিবর্তন হয় তাহলে দেশের জনগণের খুব একটা পরিবর্তন হবে বলে মনে করি না। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক কাঠামোর একটা পরিবর্তন আসতে হবে। 

শেয়ার করুন