২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০১:৩৬:১১ অপরাহ্ন


আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল
শেখ হাসিনা ওবায়দুল কাদেরের উপরই আস্থা
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-১২-২০২২
শেখ হাসিনা ওবায়দুল কাদেরের উপরই আস্থা


বেশকিছুদিন ধরেই চলছিল কানাঘুষা! কে হতে পারেন সাধারন সম্পাদক। সভাপতির পদ নিয়ে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। ফলে আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে পরিবর্তনের সম্ভাবনা ছিলই না। কিন্তু সাধারন সম্পাদকের পদে ছিল প্রতিদ্বন্দিতা। কারন ওবায়দুল কাদের অসুস্থ। কিন্তু প্রতিযোগিতার সে দৌড়ের ধারকাছ দিয়েও যায়নি দলটির নীতিনির্ধারকরা। পুরানো দুইয়েই আস্থা রাখলো দলটি। সভাপতি যথারীতি শেখ হাসিনা ও সাধারন সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরই যথারীতি বহাল। 

অবশ্য সামনেই রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত। ২০২৪ সনের প্রথম দিকে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। এ মুহুর্তে সাধারন সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের কেউ যদি সফল হন অণ্যদের মধ্যে চলে আসতে পারে কিছুটা জড়তা। সব মিলিয়ে পুরানোতেই আস্থা রেখে যেভাবে চলছে সংগঠন তাতেই আস্থা রাখলো জাতীয় সম্মেলন। এতে করে সবাই খুশী। পুরানোতে আস্থা এমনিতেই সবার। সেটা কন্টিনিউ হওয়ায় কারো কোনো অভিযোগও নেই। কারন সাধারন সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদের যথেষ্ট সচেতন। সর্বত্র গ্রহনযোগ্য রয়েছে তার। 

সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা যে দশমবারের মতো পুনঃনির্বাচিত হলেন। আর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদের তৃতীয়বারের মত দ্বায়িত্ব নিলেন এ রাজনীতিবিদ।  


জাতীয় কাউন্সিলে বক্তব্য রাখছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা/ছবি সংগৃহীত 


তবে সভাপতির সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ যান না, বা যাবার সুযোগও নেই। তবুও কিছু কিছু সমস্যা বা গুঞ্জন তো হবেই। এটাই এজিএম বা কাউন্সিলের নিয়ম। যা আওয়ামী লীগেও হচ্ছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেকে বলেছেন, সবই ঠিক থাকলে আর কাউন্সিল করার কি প্রয়োজন ছিল? 

বিশেষ করে ওবায়দুল কাদেরের তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টা। কারন তিনি মারাত্বক এক অসুস্থতার সঙ্গে পাঞ্চা লড়ে দাড়িয়েছেন মাত্র। এখনও তার অনেক বারণ নিষেধ। এরমধ্যে এতবড় একটা দ্বায়িত্ব বিশেষ করে আওয়ামী লীগের মত একটা দলের সাধারন সম্পাদক পদ সামলানো বিরাট বিষয়। 

উল্লেখ্য, উৎসবমুখর পরিবেশে সোহরাওয়াদী উদ্যানে অনুষ্টিত প্রথম পর্বের পর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্টিত হয়। দ্বিতীয়পর্বে শুধু কাউন্সিলরগন অংশ নেন। প্রথম সেসনে সারাদেশ থেকে লক্ষাধিক নেতা কর্মীর সমাগম ঘটে। 

এর আগে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা শান্তির পায়রা উড়িয়ে কাউন্সিলের উদ্ধোধন করেন। 



কমিটিতে যারা রয়েছেন-

দলের ২২তম জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষ্যে গঠিত তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরের নাম ঘোষণা করেন।


পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের অন্যান্য নেতাদের নাম ঘোষণা করেন। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের নামও তিনি ঘোষণা দেন।



সোহরাওয়াদী উদ্যানে অনুষ্টিত প্রথম পর্বের একটি চিত্র/ছবি সংগৃহীত 


২২তম জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হয়েছেন, বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফর উল্লাহ, ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন, শ্রী পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য, ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম), অ্যাড. কামরুল ইসলাম এমপি ও সিমিন হোসেন রিমি।


এছাড়া যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ ও আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম রয়েছেন। পাশাপাশি কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন এইচ এন আশিকুর রহমান এমপি।

এদিকে, আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর মধ্যে অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে ড. শাম্মী আহমেদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক পদে ফরিদুন্নাহার লাইলী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে ড. সেলিম মাহমুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক পদে আমিনুল ইসলাম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি মনোনীত হয়েছেন।

অন্যদিকে বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক পদে দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক পদে শামসুন নাহার চাঁপা, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. সিদ্দিকুর রহমান, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক পদে শ্রী অসীম কুমার উকিল এমপি, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক পদে ডা. রোকেয়া সুলতানা মনোনীত হয়েছেন।


এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন আহমদ হোসেন, বি. এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, এস. এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম এমপি, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং সুজিত রায় নন্দী। এছাড়া উপ-দফতর সম্পাদক হয়েছেন সায়েম খান।

তবে শ্রম, যুব ও ক্রীড়া এবং উপ-প্রচার সম্পাদকের পদ ফাঁকা রাখা হয়েছে। এসব পদ পরে পূরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। আর প্রেসিডিয়াম সভায় সদস্যদের নির্বাচিত করা হবে। 


শেয়ার করুন