০১ মে ২০১২, বুধবার, ০৬:০৬:১৮ অপরাহ্ন


মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায় বিপার ৩০ বছর পূর্তি
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৮-২০২৩
মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায় বিপার ৩০ বছর পূর্তি বিপার ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশনা


‘দেখ, যুগের সীমানা বেয়ে বিপা উড়ছে নতুন এক আশ্বাসে’-এই স্লোগানকে ধারণ করে বিশ্বে বাংলা সংস্কৃতির প্রসার ও অনুশীলন কেন্দ্র বিপার ৩০ বছর পূর্তি চার দিনব্যাপী মনোমুগ্ধকর পরিবেশনার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। বিপা আজ থেকে ৩০ বছর পূর্বে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। প্রবাসে জন্ম নেওয়া এবং বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোরদের বাংলা ভাষা এবং বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করতেই বিপার জন্ম। অনেকটা নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতো। গত ৩০ বছর ধরে এই কাজটি নিষ্ঠার সঙ্গে করছেন সেলিমা আশরাফ, এ্যানি ফেরদৌস ও নিলুফার জাহানসহ অন্যরা। তাদের নেতৃত্বে বিপা থেকে বাংলা ভাষা শিখে, বাংলা সংস্কৃতি মননে, চিন্তায় এবং চেতনায় ধারণ করে এখন তারাই নেতৃত্বের যোগ্য হয়ে উঠেছে। তাদের হাতেই যত্নে বিপার শিক্ষকরা তুলে দিয়েছেন বাঙালির ঐতিহ্যকে। তারাই এখন প্রবাসে বাংলাদেশ। ৩০ বছর একটি সংগঠনকে টেনে নেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বিপার আজ প্রবাসের বৃহৎ এবং স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ষড়যন্ত্রও মোকাবিলা করতে হয়েছে। তারপরেও হাল ছাড়েননি বিপার শিক্ষকরা। অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো মানুষও পেয়েছেন বিপার শিক্ষকরা। যে কারণে বিপা আজ প্রবাস বাঙালির গর্বের প্রতিষ্ঠান, ঐতিহ্য লালনের বাতিঘর।

সেই বিপার চার দিনব্যাপী ৩০ বছর পূর্তির অনিন্দ্য সুন্দর অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়েছে জ্যামাইকার পারফর্মিং আর্ট সেন্টারে। গত ২৭ জুলাই সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশি কমিউনিটির অত্যন্ত পরিচিত মুখ, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি আওলাদ হোসেন খান। অসুস্থ শরীর নিয়েও তিনি এই বার্ণিল অনুষ্ঠান উদ্বোধন করতে আসেন। ফিতা কেটে এবং কেট কেটে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন তিনি। কেক কাটার সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম। আরো ছিলেন বিপার তিন স্তম্ভ সেলিমা আশরাফ, এ্যানি ফেরদৌস এবং নিলুফার জাহান। চমৎকার মঞ্চ সাজানো হয় জ্যামাইকা আর্ট সেন্টারের প্রবেশ মুখেই। খোলা আকাশের নিচে বসেছিলেন প্রবাসের বিশিষ্টজনসহ আগত দর্শক-শ্রোতা।

আওলাদ হোসেন খান বলেন, বিপার সঙ্গে তিনি শুরু থেকেই জড়িত ছিলেন। তিনি তখন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি শিকাগো ফোবানা সম্মেলন করে এসেই তিনি বিপার মতো একটি প্রতিষ্ঠানের অভাব অনুভব করেন। তার ফলশ্রুতিতেই বিপার জন্ম। যাদের হাতে দায়িত্ব দিয়েছিলেন, তাদের এখনো দেখতে পেয়ে তিনি আবেগাপ্লুত। তিনি বলেন, বিপা আজকে প্রবাসে একটি আদর্শ সংগঠনে পরিণত হয়েছে। তার বক্তব্য শেষেই বিপার শিল্পীরা উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করে। প্রত্যয়ের সংগীত-গানে কণ্ঠদান করে বিপার ছাত্রছাত্রীরা। তারপরই ব্লু ফ্লায়ার আর্টসের বাদ্যযন্ত্র নতুন দিগন্তের যেন সূচনা করে। ছিলো বিপার ছাত্রছাত্রীদের গ্রুপ নৃত্য পরিবেশনা। প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্যাহর সঞ্চালনায় টক শো বিপা এবং আপনিতে অংশ নেন কণ্ঠযোদ্ধা শিল্পী শহীদ হাসান। যিনি ছিলেন বিপার আহ্বায়ক কমিটির সাধারণ সম্পাদক। তিনি তার বক্তব্যে বিপার জন্ম এবং তার ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন আবীর আলমগীর, সাবিনা শারমিন এবং নিলুফার জেরিন।

বিপার দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে ছিল মূলত বিপার স্টার ২০২৩ সালের ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশনা। প্রতিটি পরিবেশনাই ছিলো চমৎকার। যার মধ্যে ছিল গান এবং নৃত্য, ছিল বিপার ৩০ বছর নিয়ে আলোচনা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সৈয়দ মোহাম্মদ উল্যাহ, সেলিমা আশরাফ, এ্যানি ফেরদৌস, নিলুফার জাহান, শহীদ হাসান, জাফর ফেরদৌস এবং সোহেল। সেখানে মূলত বিপার সমস্ত কর্মকা- উঠে আসে। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ছিল রোমিও, এস আহমেদ, নবী, সারফিন চৌধুরী, ক্যামেলিয়া, আমেনা, আর্জু, রীনা, শ্রদ্ধা, এস দেব নাথ, এস রয়, জারিয়া, চলন্তিকা, এস নবী, এনাম, এনায়া জামান, এ হোসেন, ফারিবা করিম, ক্যামেলিয়া, মুন জে হাই, ইলমা, দীঘি গোস্বামী, আমেনা ইসলাম, জে ইসলাম, আনিষা, ইসরাত, তাহমিদ, আর্থি, পায়েল, আরিয়ানা, আমিরা, এস আলম, মাহদিয়া, সজিব, কে রয়, পূজা, সায়েম, আপসারা, এম আহমেদ ও এস আহমেদ।

তৃতীয় দিনেও ছিল বিপার ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশনা। শুরুতেই ছিল আজরীন অ্যান্ড ফেন্ডসদের। অসাধারণ ছিল পরিবেশনা। তাসের দেশ-এ অংশগ্রহণ করেন নৃত্যে তাসীন ফেরদৌস, কাজী মুস্তা, সামিয়া ইসলাম, মুন জে হাই, লামিয়া আমিন, ইলমা, মাহিমা আলী, নাহরিন ইসলাম, রাইসা জেরিন, নওশীন চৌধুরী, মুনিয়া আহমেদ, জেরিন ইসলাম, ক্যামেলিয়া, জেরিন মাইশা, মায়েদা জ্যোতি, সানিয়া শারমিন, পোম্পি, চিশতিয়া দেব নাথ, আনিসা হোসাইন, আলবীনা রহমান, আমেনা ইসলাম, শ্রদ্ধা সাহা, রীনা বড়ুয়া, ফারিবা করিম, আরিয়ানা এনাম, আইজা এনাম, নাবিয়া হোসাইন, মাহিথা রশিদ, জান্নাতুল ফেরদৌস, মাশারাত রশিদ, সামিরা আজাদ, শ্রিশতিয়া দেবী, আনায়ানা জামান, মাদিয়া রাফি, সাথিয়া নবী। কণ্ঠে ছিলেন চন্দন চৌধুরী, নিলুফার জাহান, লেমন ইসলাম, জেরিন মাইশা, সাদিয়া চৌধুরী, আহনাফ তাসীন, নিশাত চৌধুরী এবং সেলিমা আশরাফ। ভয়েসওভারে ছিলেন ইফতি চৌধুরী, নাদিম আহমেদ, নাদিয়া ইসলাম, মাফনুন ইফাজ, জাহিদ ইসলাম, রেজওয়ান ইসলাম, নিহাল রহমান, লামিয়া আমিন, আপিয়া জাহান, তানজিলা নেওয়াজ, সায়েন শারমিন, মনিকা খান। সংগীত নির্দেশনায় ছিলেন সেলিমা আশরাফ এবং নৃত্যে এ্যানি ফেরদৌস।

ছিল হৃদয়ে স্বদেশ, আমার বাংলাদেশ-গানে গানে দেশ বন্দনা। অ্যালামইনাদের প্রদান করা হয় সম্মাননা। তৃতীয় দিনে ছিল ফুলকুড়ি আমরা। নতুন প্রজন্মের ছোট্ট বন্ধুদের পরিবেশনা। ধ্রুপদী ছন্দে নৃত্য। এদিন বিপার শিক্ষকদের সম্মাননা প্রদান করা হয়।

শেয়ার করুন