পাকিস্তানের বিপক্ষে আউট হয়ে ফিরছেন সাকিব/ফাইল ছবি
গাদ্দাফীতে চরম ব্যাটিং ব্যর্থতার কী আজ কোনো উন্নতি ঘটবে? পাকিস্তানের পেস অ্যাটাকের বিপক্ষে এতটা নাজেহাল হওয়ার কথা না। তরুনদের নিয়ে গঠিত দলের অনেক ক্রিকেটার এমন পেস খেলে অভ্যস্ত। যাতে বিশ্বের নামী দামীদের সামনে ভড়কে না যায় সে জন্যও অনেকটা তরুনদের স্থান দেয়ার হাতুরার কৌশল। কিন্তু দলের সেই পূরাণো রোগটা ঠিকই দেখা দিয়েছিল। নতুবা একটা ওয়ানডে ম্যাচের স্কোর ২০০ হবে না, তাহলে সে ম্যাচের তো গুরুত্বই নেই। কী ব্যাটিং করছিল সেদিন বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিপক্ষে। কন্ডিশনের দোহাই দেয়ার সুযোগ নেই। তাহলে তো আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন শতাধিক স্কোর ছাড়ানো যেত না।
এ কথা বলার কারন একটাই, আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কী করবেন ব্যাটসম্যানরা। এশিয়া কাপে ফাইনাল খেলার ক্ষীণ সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখতে আজ জিততেই হবে সাকিব মুশফিকদের। কিন্তু কাংখিত সেই ব্যাটিংটা হবে তো আজ? লাখ টাকার প্রশ্ন। কলম্বোতে অনুষ্ঠিতব্য গ্রুপ অফ ফোরের গুরুত্বপূর্ণ খেলায় বৃষ্টি বাগড়া দেয়ার জন্য চোখ রাঙাচ্ছে। বৃষ্টি বিঘ্নিত হয়ে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণেরও সমূহ সম্ভাবনা। একচোখা এসিসি পাকিস্তান ভারতের হাই ভোল্টেজ ম্যাচটির জন্য রিজার্ভ দেয় সংস্থান করলেও বাকি খেলাগুলোকে গুরুত্বই দেয় নি। সময় না থাকায় কলম্বো থেকে ম্যাচ ভেনু হাম্বানটোটায় পরিবর্তনের কথা উঠলেও হয়নি সেটা। আজ অবশ্য দুই দলের জন্যই জয় অপরিহার্য। যে দল হেরে যাবে এশিয়া কাপ থেকে তাদের ছিটকে পড়া অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যাবে। এই পর্বে প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের সঙ্গে শোচনীয় ভাবে হেরে যাওয়া বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মনবল অনেকটাই দুর্বল। তাই এমন পজিশনে ভাল কিছু করা আরো কঠিন।
স্মরণীয় যে গ্রুপ পর্বে শ্রীলংকার সঙ্গে ৫ উইকেটে পরাজিত হয়ে মিশন শুরু করেছিল বাংলাদেশ। সেই খেলায় টস জয় করে মেঘে ঢাকা আকাশের নিচে ব্যাটিং নেয়ার সিদ্ধান্ত , আনকোরা নবীনদের দিয়ে ইনিংস সূচনা, ব্যাটিং অর্ডারে প্রথম চার জন বাম হাতিকে খেলানো সহ অনেক ভুল করেছিল বাংলাদেশ। আর এই ভুলগুলোর সম্মিলিত পরিণতি হয়েছিল শ্রীলংকা দলের ৫ উইকেটে বিশাল জয়ে। খাদের কিনার থেকে দারুন ভাবে বাংলাদেশ ফিরে আসে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ৮৯ রানে জয়ী হয়ে। কিন্তু আবারো বাংলাদেশের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয় পাকিস্তানের সঙ্গে ৭ উইকেটের বিশাল পরাজয়ে। হয়তো ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়েছে। হয়তো আজ বাংলাদেশ বিদ্যমান অবস্থায় সেরা একাদশ নিয়ে খেলবে। যদি তাই হয় বাংলাদেশ জেতার সম্ভাবনা রয়েছে। জিতলে সুযোগ থাকবে নিজেদের শেষ ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে কোমর কষে লড়াই করার।
সমস্যা ওপেনিং ব্যাটিং। মেহেদী মিরাজকে ওপেনিং করানোর জুয়া খেলা ঠিক হবে? সব সময় জুয়া খেলা জয়ী হয় যায় না। পাকিস্তানের বিপক্ষে আমি মনে করি না মোহাম্মদ নাঈম সুযোগের সঠিক ব্যবহার করেছে। আনামুল হক বিজয়কে লিটন দাশের সঙ্গে ইনিংস সূচনা করায়ে দেখা যেতে পারে। ভালো সূচনা হলে বাংলাদেশের সুযোগ হবে স্বাভাবিক ব্যাটিং করে বড় ইনিংস গড়ার।
এ ক্ষেত্রে ১০ ওভারে বিনা উইকেটে ৪০ রান হলেও আপত্তি নাই। দলের এ ক্রান্তিলগ্নে সাকিবকে দায়িত্ত্ব নিয়ে ৩ নম্বরে ব্যাটিং করতে সুপারিশ করবো। সেই ক্ষেত্রে তাওহীদ হৃদয় ,মুশফিক এবং মেহেদী মিরাজ ৮,৫ এবং ৬ নম্বরে ব্যাটিং করতে পারে। অন্য বিকল্প হতে পারে আফিফকে ৪ নম্বরে ব্যাটিং করানোর ঝুঁকি নেয়া। মনে রাখতে হবে শ্রীলংকা দলের বর্তমান লাইন আপে থাকসিনা এবং পাথিরানাকে একটু রয়ে সয়ে খেলতে হবে। ২৭০-২৮০ করতে পারলে বাংলাদেশের বর্তমান বোলিং লাইন আপ ম্যাচ জয় করবে. এই জয়টি বাংলাদেশকে অনেক উজ্জীবিত করবে। হেরে গেলে বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব হবে না ভারতের বিরুদ্ধে নাটকীয় কিছু করার।
শেষ কথা জয় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। হেরে গেলে বাংলাদেশকে স্বপ্নভঙ্গের কষ্ট নিয়ে এশিয়া কাপ থেকে বিদায়ের দিন ক্ষণ গুনতে হবে। যদিও এরপর একটি ম্যাচ বাকী থাকবে, যেটা হবে ভারতের বিপক্ষে। সেখানেও ভাল কিছু আশা করা দুরহ। এতে করে বিশ্বকাপের আগে বিশাল ধাক্কা খাবে বাংলাদেশ। যা বিশ্বকাপ প্রস্তুতির মিশন ভীষন ক্ষতিগ্রস্থ হবে বৈ কি! হাতুরাসিংহ ও টিম মানাজেমেন্টের পরীক্ষা নিরীক্ষা কঠিন জবাবদিহির মুখে পড়বে।
