২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৯:৫৩:৬ পূর্বাহ্ন


আহলে সুন্নাতের অনুষ্ঠানে আলেমবৃন্দ
প্রিয়নবীর শুভাগমন দিবসই ইসলামী স্বাধীনতা দিবস
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-১০-২০২৩
প্রিয়নবীর শুভাগমন দিবসই ইসলামী স্বাধীনতা দিবস মঞ্চে আলেম-ওলামাবৃন্দ


মহান আল্লাহর রাসূল, সর্বশেষ নবী, নূরনবী, প্রথম ও শ্রেষ্ঠ সৃষ্টির এই দুনিয়ায় শুভাগমনের মহাপবিত্র উপলক্ষ ১২ রবিউল আওয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহূ আলাইহে ওয়াসাল্লাম উদযাপন উপলক্ষে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর উদ্যোগে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস্থ নবান্ন রেস্টুরেন্ট হলে গত ১৪ অক্টোবর শনিবার “জশনে ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) মাহফিল” অনুষ্ঠিত হয়। বাদ এশা হতে মধ্য রাত্রি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত মাহফিল পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, সালাতু সালাম ও না’ত শরীফ পাঠের মাধ্যমে শুরু হয়। অত্র জশনে ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর সভাপতি হাফেজ মাওলানা আবদুর রহীম মাহমুদ। মাহফিলে  প্রধান মেহমান হিসেবে তকরীর করেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ড: সৈয়দ মুতাওয়াক্কিল বিল্লাহ রব্বানী ও আরও তকরীর করেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর মহাসচিব মাওলানা আনোয়ারুল হক কাদেরী, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর সহ-সভাপতি মুহাম্মদ নাদের, উপদেষ্টা মুহাম্মদ কাওসার চিশতী, মুহাম্মদ খোকন আশরাফী, মীর মশিউর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদকদ্বয় মাওলানা মুহাম্মদ নুরুন্নবী ফারুকী ও মুহাম্মদ ওমর ফারুক প্রমুখ। 

মাহফিলে বিশিষ্ট আলেমবৃন্দ কোরআন সুন্নাহর আলোকে মহান নূরনবীর পবিত্র শুভাগমনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য্য ব্যাখ্যা করে এ উপলক্ষকে “ঈদ” হিসেবে পালনের জন্য সকল মুসলিমদেরকে আহ্বান জানান। আলেমগণ বলেন, মহান আল্লাহ তা’য়ালা কোরআন শরীফে তাঁর রহমত প্রকাশের উপলক্ষকে খুশির বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে খুশি উদযাপনের নির্দেশ দিয়েছেন এবং মহান আল্লাহ তা’য়ালা মহান নূরনবীর পবিত্র শুভাগমনকে উম্মতের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ খুশীর উপলক্ষ হিসেবে উল্লেখ করেন। সৃষ্টির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় উপলক্ষ সর্বশ্রেষ্ঠ নবীর পবিত্র শুভাগমন ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) তথা ঈদে মাজিউন্নবী (সা.)। মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনের সংবাদ আলোচিত এবং উদযাপিত হয়ে আসছে সর্বকালে। সকল নবীগণ তাঁদের বিশিষ্ট উম্মতদের মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনের সংবাদ দিয়েছেন এবং অনেক নবীগণ তাঁর শুভাগমনের ঘোষণা দিয়েছেন যা কোরআন শরিফের অসংখ্য আয়াতে বর্ণিত রয়েছে। তাই যারা মহান মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনকে ঈদ বা খুশি মনে করে না, তারা নিজেরা বিভ্রান্ত ও মূর্খ। আর যারা এই উপলক্ষ পালনকে বিদআত মনে করে ও তা প্রচার করে তারা পথভ্রষ্ট, নবীদ্রোহী ও উগ্রবাদী বাতেল ফেরকা খারেজী ওহাবীবাদের অনুসারী। 

মাহফিলে আলেমগন বলেন পবিত্র আহলে বায়াত ও সাহাবায়ে কেরাম  মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমন ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন করেছেন। যাঁরা মহান নূরনবীর শুভাগমন ঈদ বা খুশী হিসেবে উদযাপন করে তারা মূলত নূরনবীকে পেয়ে খুশি, নূরনবীর উম্মত হওয়ার জন্য খুশি এবং প্রিয়নবীকে প্রাণের চেয়ে ভালোবাসার কারণে খুশি। এই পৃথিবীতে মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনের খুশি বা আনন্দের উপলক্ষ সকল ঈমানদারগণ সর্বযুগে পারিবারিক সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উদযাপন করেছেন। বিশেষ করে ইসলামী সন গণনার জন্য অন্যতম নির্নায়ক হিসেবে মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনকে অসংখ্য সাহাবাগণ প্রস্তাব করেন, যদিও নূরনবীর প্রেমের আরেকটি উপলক্ষ পবিত্র হিজরতুন্নবী সাল গণনার জন্য প্রাধান্য পায়। হিজরতের স্মরণ ও নবীপ্রেমে নবীর শুভাগমনের ঈদ বা খুশি একাকার ও হিজরত নূরনবীর পবিত্র শুভাগমন ঈদে মিলাদুন্নবীর আনন্দের অংশমাত্র। অতএব ইসলামের ইতিহাসের সর্বকালে সকল দেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঈদে মিলাদুন্নবীর আনন্দ উদযাপিত হয়ে আসছে এবং অনন্তকাল তা হতে থাকবে। মাহফিলে বক্তাগণ বলেন যে, মহান প্রিয় নবীর শুভাগমন ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ)ই ইসলামী স্বাধীনতা দিবস ও মানবতার মুক্তি দিবস। এই দিবসটি কুরআন ও হাদীস শরীফে বিভিন্ন নামে এসেছে। তন্মধ্যে মাজিউন্নবী, নুজুলুন্নবী, জুহুরুন্নবী, মাজিউর রাসূল, নুজুলুর রাসূল ও আমদে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রসিদ্ধ বা মশহুর। 

মাহফিলে বক্তাগণ রাষ্ট্রীয়ভাবে সকল সরকারী প্রতিষ্ঠান ও বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের সকল দূতাবাসে ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) পালনের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে সংগঠনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর পক্ষ থেকে সবাইকে নবীপ্রেমে ইসলামের প্রকৃতধারা আহলে সুন্নাতের পতাকায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুনিয়া ও আখেরাতের প্রকৃত মুক্তি ও সমৃদ্ধি অর্জনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সালাতু সালাম, বিশেষ মুনাজাত ও তবারুক বিতরণের মাধ্যমে জশ্নে ঈদে মাজিউন্নবী (সা.) তথা জশ্নে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) মাহফিল সমাপ্ত হয়।

শেয়ার করুন