বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা কবি কামাল চৌধুরী
একটি সুন্দর এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় এসেছেন। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মেন্যুফেস্টু অনুযায়ী নতুন সরকারের টার্গেট হচ্ছে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে গলে অবশ্যই আমাদের চর্তুথ বিপ্লব করতে হবে। আর সেই চর্তুথ বিপ্লবে প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও অংশগ্রহণ করতে হবে। দেশ হচ্ছে ছায়ার মতো আর সেই দেশকে লালন করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশকে লালন করেন বলেই দেশের উন্নয়নে প্রবাসীরা এগিয়ে আসেন। এই কথা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ও কবি কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট আয়োজিক আন্তরিক সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা কবি কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী প্রবাসী লেখক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ-সুধীজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান, জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি তৌফিক ইসলাম শাতিল, বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ কমিউনিটির বিভিন্ন অঙ্গনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কবি কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী তার বক্তব্যে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বহুমাত্রিকতা ও গভীরতা উল্লেখপূর্বক বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণে সকলকে নিয়ে কাজ করাার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রবাসের মাটিতে বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশে প্রবাসীদের ভূমিকার প্রশংসা করে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে তিনি সেগুলোর চর্চা অব্যাহত রাখা এবং যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার মধ্যে প্রসারের মাধ্যমে ‘সাংস্কৃতিক কূটনীতি’ জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রেক্ষাপট উল্লেখপূর্বক স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে যে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে তা অব্যাহতভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান। ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী প্রবাসীদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিতকরণে তার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রবাসীদের সেবার মান সমুন্নত রাখার আহ্বান জানান। মতবিনিময়কালে আমন্ত্রিত অতিথিরা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। তিনি তাদের বিভিন্ন মন্তব্য ও প্রশ্নের জবাব দেন এবং স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আমাদের দেশ দেওয়ার জন্য। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তাকে উপদেষ্টা নিয়োগের জন্য। প্রধানমন্ত্রী আমাকে সুযোগ দিয়েছেন দেশ গঠনে কাজ করার জন্য। সেজন্য আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। আজকে আপনারা আমাকে যে সম্মান দিয়েছেন তা আমার চলার পথের শক্তি হয়ে থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান তার বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বিরাজমান কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন। নতুন দায়িত্বভার গ্রহণ করায় তিনি উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানান। শিক্ষা ও সংস্কৃতির মতো দুটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে উপদেষ্টার দায়িত্ব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীর মতো একজন যোগ্য ব্যক্তিকে অর্পণ করায় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘে বাংলাদেশের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি তৌফিক ইসলাম শাতিল, সাংবাদিক আকবর হায়দার কিরণ, মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট বিশ্বজিত সাহাও সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন। কবি কামাল নাসেরের জীবনী উপস্থাপন করেন লুৎফুন্নাহার লতা। কবিতা আবৃত্তি করেন মিথুন আহমেদ, গোপন সাহা ও শিবলী সাদিক।
কনসাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা তার স্বাগত বক্তব্যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলাদেশকে অপার সম্ভাবনার দেশ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার রূপকল্পকে বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
মনোমুগ্ধকর আবৃত্তি, সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনা অনুষ্ঠানটিকে প্রাণবন্ত করে তোলে। সবার অংশগ্রহণে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন সেমন্তী ওয়াহেদ, দেশত্মবোধক গান পরিবেশন করেন মাইশা জেরিন ও নৃত্য পরিবেশন করেন নাসিমা চৌধুরী।
