২০ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০১:৩৪:০৭ পূর্বাহ্ন


ভারতবর্ষের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালিত
বিশেষ প্রতিবেদক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৫-২০২৩
ভারতবর্ষের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালিত কর্মসূচিতে নেতৃবৃন্দ


৯ মে ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ দিবস উপলক্ষ্যে ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ রাজধানীর বাহাদুর শাহ পার্কে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ৮টায় ১৮৫৭ সালের বীর শহীদদের রক্তদানের স্মৃতিবিজড়িত শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পমাল্য অর্পণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি শ্যামল কুমার ভৌমিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি চৌধুরী আশিকুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ব্রি. জেনারেল (অব.) ডা. এম জাহাঙ্গীর হোসাইন, সহ-সভাপতি খলীলুর রহমান খান, বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান কবির, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম ভুইয়া, বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট মিষ্টি বেকারী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আক্তারুজ্জামান খান প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন এনডিএফ’র সহ-সম্পাদক প্রকাশ দত্ত।

সভায় বক্তারা বলেন, ৯ মে আজকের এই দিনেই শুরু হয়েছিল ভারত কাপানো মহাবিদ্রোহ বা ভারতবর্ষের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ। এই যুদ্ধে যোগ দিয়েছিল ভারতবর্ষের সর্বস্তরের মানুষ। এই বিদ্রোহে আত্মদানকারী যোদ্ধাদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে পুরাণ ঢাকার জগন্নাথ কলেজ বাংলাবাজারের কাছে। যার সঙ্গে রয়েছে ছোট্ট একটি সবুজ চত্বর। এটি একটি রক্তাক্ত প্রান্তর একটি বধ্যভূমি। বিদ্রোহী সেনাদের গাছে ঝুলিয়ে পিটিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। অনেককে জীবিত অবস্থায় গাছে ঝুলিয়ে অত্যাচার করে হত্যা করা হয়েছিল। কথিত আছে পানি চেয়েও পানি পায়নি স্বাধীনতাকামী যোদ্ধারা। এই ইতিহাস মুছে ফেলতেই এখানকার নাম করা হয়েল ভিক্টোরিয়া পার্ক। দীর্ঘ সময় ধরে সবাই ভিক্টোরিয়া পার্ক হিসাবে জানতো। রাণী ভিক্টোরিয়ার নাম মুছে গিয়ে এখন নাম হয়েছে বাহাদুর শাহ পার্ক। এই নামেই ঢাকাা শহরের অনেক মানুষই জায়গাটি চিনে। কিন্তু জানেনা এই ছোট্ট পার্কটির ইতিহাস। অনেকেই জানে না এই পার্কে স্থাপিত বিশাল একটি স্মৃতিস্তম্ভের ইতিহাস। এটি নিছক কোন পার্ক নয়। এটি আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের এক জ্বলন্ত স্বাক্ষী। যার সঙ্গে মিশে আছে স্বাধীনতাকামী সৈনিকদের আত্মদানের এক মহান ইতিহাস। এটি আজ আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অনন্য ঐতিহ্য।

সভায় বক্তারা আরো বলেন, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী লড়াইয়ের এই স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলার জন্য সাম্রাজ্যবাদের এই প্রজন্মের দোসররা উঠে পড়ে লেগেছে। অথচ বিশ্বব্যাপী আজ সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই অগ্রসর হচ্ছে। পৃথিবীর বুক থেকে সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের উচ্ছেদ করে অতীতের সকল বিদ্রোহ ও বিপ্লবে আত্মাহুতি দানকারী সকল বীর শহীদদের রক্তদানের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করবে। বক্তারা বলেন, প্রায় দেড়-দুইশো বছর আগে থেকে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ভারতীয় উপমহাদেশে স্বাধীনতার লড়াই শুরু হয়ে সেসব লড়াইয়ে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি ঘটলেও জাতীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠিত হয় নি। ফলে সাম্রাজ্যবাদ ও সামন্তবাদবিরোধী জাতীয় গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অব্যাহত রয়েছে। ১৮৫৭ সালের বীর শহীদদের রক্তদানের সংগ্রামী ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমান প্রজন্মকে জাতীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে অগ্রসর করতে হবে বলে বক্তারা আলোচনা সভায় উল্লেখ করেন। সভার সভাপতি শ্যামল কুমার ভৌমিক প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতিধন্য বধ্যভূমি বাহাদুর শাহ পার্কের মর্যাদা সংবলিত স্মৃতিস্তম্ভের শীর্ষদেশে ১৮৫৭ সালের “বীর শহীদদের স্মরণে” লেখাটি পুনলিখন এবং বাহাদুর শাহ পার্কে বেআইনিভাবে স্থাপিত ফুডকোর্ট সরিয়ে নেয়ার আহবান জানান। 

শেয়ার করুন