২৭ জুলাই ২০১২, শনিবার, ০১:২৮:৫২ অপরাহ্ন


তাৎক্ষণিক বাজেট প্রতিক্রিয়া মির্জা ফখরুল
‘নতুন করে লুট করার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে’
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০৬-২০২৪
‘নতুন করে লুট করার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে’


প্রস্তাবিত বাজেট ‘সাধারণ মানুষের জন্য নয়, লুটেরাদের জন্য’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে সংসদে অর্থ মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর উপস্থাপিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের ওপরে তাক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ এটা তো হচ্ছে লুটেরাদের দেশে পরিণত হয়েছে, এই সরকার লুটেরায় পরিণত হয়েছে। লুটেরা বাজেট হবে কি জন্য? লুট করার জন্যে….এটাই আমি দেখতে পারছি যে, আবার একটা নতুন করে লুট করার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে।”

‘‘ অর্থাৎ তথাকথিত বাজেট যেটা উপস্থাপন করা হয়েছে… এই বাজেটে দেখবেন, আয়ের চেয়ে ব্যয় অনেক বেশি। যে সমস্ত জায়গাগুলো আয়ের অংশ দেখানো হচ্ছে তাতে করে সাধারণ মানুষের ওপরে সমস্ত বোঝাটা গিয়ে পড়ে যাচ্ছে এবং এই ব্যয়টা মিটানোর জন্য তারা(সরকার) যেটা করবে সেটাও সাধারণ মানুষের ওপরে গিয়েই পড়বে। অর্থা এটা আনছে বিদেশ থেকে অনুদান কিংবা ঋণ আর সেই সঙ্গে ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নেয়া। সবটাই গিয়ে আল্টিমেটলি গিয়ে পড়ছে মানুষের ওপরে। মানুষ তো বোঝা টানতে টানতে এখন আর পারছে না আরকি।”

‘কোনো কর্মসংস্থা নেই’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ এই বাজেটের মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে এ্যাম্প্রয়মেন্ট(কর্মসংস্থান) জেনারেট করার, ক্রিয়েট করার মতো কিছু নাই। নতুন করে কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা নাই।”

‘‘ পুরো বাজেটটা যেন মেগা মেগা প্রজেক্টের মেগাচুরি, মেগা দুর্নীতির জন্য করা হয়েছে। এই বাজেটকে শুধুমাত্র তথাকথিত ভাষা গণবিরোধী বলব না, এটা বাংলাদেশ বিরোধী বাজেট হয়েছে।”

‘মানুষের অবস্থা নাভিশ্বাস’

মূল্যস্ফীতির ক্রমাগত বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ একদিকে মূল্যস্ফীতি ইনফ্লেশন চরমভাবে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে খা্দ্যপন্য বিশেষ করে দ্রব্যমূল্য যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এটা তাদের জন্য আর সহনীয় পর্যায় নেই এখন আর।”

‘‘ কয়েকদিন আগে বাড়লো পেট্রোল ও ডিজেলের দাম… জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেলো। বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলো। এখন বাজেটের সঙ্গে সঙ্গে আবার দাম বাড়বে। আইএমএফের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে তাতে বছরে চারবার করে বাড়বে। আমরা এই পয়সা কি জন্য দিচ্ছি? বিদ্যুথাতে যে চুরি হয়েছে, জ্বালানি খাতে যে চুরি হয়েছে সেটা সবাই জানে… কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট থেকে শুরু করে, ভারতের আদানি কাছ থেকে বিদ্যুৎ আনা থেকে শুরু করে সবগুলোতে তাদের পকেট ভারী করেছে।”

‘কোথায় রুপপুর বিদ্যু প্লান্ট? কোথায় পায়রা বন্দর কাজ? আর ফ্লাইওভার, এ্যালিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে… তো ভালো কথা। ….ইন ওয়াট ওয়ে আপনি সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলো কিভাবে সমাধান করছেন’ প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘‘ বহু মানুষ আসলে আর পারছে না, তারা শহর থেকে গ্রামে চলে যাচ্ছে। কারণ তারা ঢাকা শহরে এখন আর টিকতে পারছে না। গ্রামে গিয়েও তারা বিপদে পড়ছে কারণ কর্মসংস্থান নাই।”

বাজেটে কালো টাকা সাদা করতে ১৫% ভ্যাট আরোপ এবং বৈধ উপার্জনের ওপরে ৩০ শতাংশ করারোপ করা হয়েছে… এটা কার জন্য করা হয়েছে এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ যারা পে করে, যারা ন্যায়ের পথে চলে তাদের ওপরে চাপটা পড়বে। যারা অন্যায় করে তাদের ওপরে কোনো কিছু হয় না।”

‘‘ আপনারা(সাংবাদিকরা) লিখছেন প্রতিদিন… কি করে একজন সরকারি কর্মকর্তা সে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি করে ? কিভাবে? কি করে একজন সাবেক সেনা বাহিনীর প্রধান সে কি করে এতো সম্পত্তির মালিক হয়… এটা তো দুইটা ঘটনা।এরকম প্রত্য্যেকটা ঘটনা আছে… চারদিকে তাঁকান।এই যে মালযেশিয়ায় কর্মরত কর্মীরা যেতে পারলো না কেনো? সরকারের ব্যর্থতার জন্য, গর্ভানেন্সের চরম ব্যর্থতা্। অথচ দেখেন পত্রিকায় লিখেছেন , ৪/৫ জন সংসদ সদস্য জড়িত তারা ২০ হাজার, ২৫ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। কোথায় যাবে মানুষ?

‘কার পার্লামেন্ট’

তিনি বলেন, ‘‘ মানুষের দাঁড়াবার জায়গা নাই। যে কারণে আমরা যেটা সব সময় বলছি, জনগনের সরকার না থাকলে জবাবদিহিদতা না থাকে আজকে সেই অবস্থা তৈরি হয়েছে।

‘‘  পার্লামেন্টে বাজেট উপস্থাপন হয়। এই পার্লামেন্ট কার? তারাই সরকারি দল, তারাই বিরোধী দল, তারাই স্বতন্ত্র। একটা ডামি নির্বাচন হয়েছে… একজন সংসদ সদস্য আলোচনা শুরু করেছিলেন বেনজীরের(বেনজীর আহমেদ)ওপরে। তাকে ধামিয়ে দেয়া হয়েছে… এটা পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনা করা যাবে না। তার মানে সেগুলো বার্নিং ইস্যুজ যেগুলো জনগনের কাছে আলোচিত সেগুলো আলোচনা হবে না। সেখানে স্তুতি স্তুতি ।”

শেয়ার করুন