২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৪:১৫:১২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


ব্রঙ্কসে বাকার বিজয় উৎসবে ড. আবু জাফর মাহমুদ
দেশ রক্ষায় সবাইকে এক প্ল্যাটফর্মে দাঁড়াতে হবে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-১২-২০২৩
দেশ রক্ষায় সবাইকে এক প্ল্যাটফর্মে দাঁড়াতে হবে বিজয় দিবসের র‌্যালি


মহান মুক্তিযুদ্ধের মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন কমান্ডার, বীর মুক্তিযোদ্ধা, গ্লোবাল পিস অ্যাম্বাসেডর স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ আগামীর নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও মানবিক বাংলাদেশ রচনার জন্য জাতীয় ঐক্যের নতুন ডাক দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যে প্রশ্নে সব মানুষের মত ও চিন্তা এক সেই দিকটাকে বিবেচনায় রেখেই সবাইকে এক হতে হবে। যারা বাংলা ভাষায় কথা বলি, ভাষার প্রশ্নে সবাই এক। এই একটি বৈশিষ্ট্য নিয়ে হলেও প্রতিটি মানুষকে এক হতে হবে। বাংলাদেশ ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশ। জাতীয় একতার জন্যে সব মুসলমানদের একতা গড়ার উদ্যোগ নেওয়া একটি রাজনৈতিক সমাধান। বহিঃশত্রু থেকে দেশ রক্ষার জন্য দেশপ্রেমিকদের একতার কোনো বিকল্প নেই। দেশ রক্ষায় অনৈক্য ও বিভেদের মেরুদণ্ডে আঘাত হানতে হবে। সবাইকে এক ও অভিন্ন প্ল্যাটফর্মে দাঁড়াতে হবে। এর উদ্যোগ নিতে হবে রাষ্ট্রকে। অংশীদার হতে হবে রাজনৈতিক দলসহ-সব সমাজশক্তিকে। তিনি নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে বাংলাদেশি আমেরিকান কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত বিজয় উৎসব ও সংগঠনের অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যেই লাল সবুজের পতাকা উড়িয়ে জাতীয় সংগীত গেয়ে বিজয় শোভাযাত্রায় অংশ নেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, সংস্কৃতিককর্মী ও সাধারণ নারী-পুরুষ। ব্রঙ্কসের গোল্ডেন প্যালেসে প্রথমবারের মতো বৃহদাকার এলইডি মনিটর স্থাপন করে সেখানে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনসহ বিভিন্ন আয়োজন এক নতুন মাত্রা যুক্ত করে। ‍এই আয়োজনগুলো মুগ্ধ করে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সব দর্শককে।

দুটি পর্বে বিভক্ত প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বিদায়ী সভাপতি রাজনীতিক ও লেখক আহবাব চৌধুরী খোকন ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সারওয়ার চৌধুরী। দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন নবনির্বাচিত সভাপতি সারওয়ার চৌধুরী ও সঞ্চালনা করেন নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক শাহ বদরুজ্জামান রুহেল।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ও বাংলাদেশ সোসাইটির বোর্ড অব ট্রাস্টি আব্দুল হাসিম হাসনু, বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মনসুর আহমদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান, বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকি, সিলেট বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি অ্যাডভোকেট এ টি এম ফয়েজ, বাংলাদেশ সোসাইটির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম, প্রাক্তনসহ-সাধারণ সম্পাদক সিরাজ উদ্দিন আহমদ সোহাগ, রাজনীতিবিদ আব্দুর রহিম বাদশা, ফয়েজ চৌধুরী, এ জি এম জাহাঙ্গির হোসাইন, আবুল লেইছ চৌধুরী চেয়ারম্যান, আনোয়ারুল আলম ভূইয়া।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ বলেন, আল্লাহর কসম আমি এখনো যুদ্ধে আছি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষার যুদ্ধে। আমার এই স্বরূপ এখনো দেখানোর সময় হয়নি। যারা সংগঠন করেন তারা আমার ভাই। ভিন্ন ভিন্ন দল, ভিন্ন ভিন্ন মতামতের ভেতরেও ভালোবাসা ও কল্যাণ থাকে। আমাদের দেশে একদল করলে আরেক দলের লোককে হত্যা করা হয়। এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নয়, বরং এই ধারা বৈদেশিক শক্তিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের জন্য। মুক্তিযুদ্ধ আমরা সমগ্র দেশবাসীর জন্য করেছি। আমরা ব্যক্তিগত জীবনাচারে যদি এক হই, একই হাট-বাজারে যদি বাজার করি, একই রাস্তায় চলাচল করি, নামাজের জায়গায় যদি এক হই, তাহলে দেশের প্রশ্নে কথা বলতে গিয়ে কেন আমরা একটি অভিন্ন নীতিতে এক থাকতে পারি না। ড. আবু জাফর মাহমুদ অতীত ও বর্তমান অবস্থার ভেতরে থেকে দ্বন্দ্ব সৃষ্টির সমালোচনা করে বলেন, ভবিষ্যৎ ও আগামী নিয়ে আমাদের কোনো অঙ্গীকার ও কার্যক্রম নেই। তিনি বলেন, আমাদের সীমান্ত রক্ষা করতে হবে, প্রতিরক্ষা বাহিনীকে রক্ষা করতে হবে। কারণ, তারাই দেশ রক্ষা করবে। সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যেকটি কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে রাজনৈতিক লেজুরবৃত্তি দূর করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যারা অভিজ্ঞ ও দক্ষ শিক্ষক তাদের দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালাতে হবে। রাজনৈতিক দলের লেজুড় ও কোনো ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে।

তিনি ব্রঙ্কসে বাংলা সিডিপ্যাপ সার্ভিসেস ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের নতুন অফিসে সব জনকল্যাণমুখী কাজের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, আমাদের কাচারি ঘরে প্রত্যেক উন্নয়ন সংগঠনের কর্মীদের আমন্ত্রণ। মায়েরা, বোনেরা, যারা মূলধারার রাজনীতি করছেন, নিজেদের সামাজিক ও সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যে রাখছেন, তাদের জন্য কাচারি ঘর হবে আপন একটি ক্ষেত্র।

বাংলাদেশি-আমেরিকান কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন ইনকের নবনির্বাচিত কর্মকর্তাদের শপথ বাক্য পাঠ করান সংগঠনটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক গ্লোবাল পিস অ্যাম্বাসেডর স্যার আবু জাফর মাহমুদ। তিনি সংগঠনের এ যাবৎকালের সব কর্মকর্তা ও বর্তমান কর্মকর্তাদের একসঙ্গে জনকল্যাণমুখী কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সমাজকর্মে সাবেক শব্দের কোনো জায়গা নেই। এই সংগঠনের কেউ সাবেক হবেন না। সবাই এক হয়েই সমাজ পরিবর্তনে অবদান রাখবেন।

সাংস্কৃতিক আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধের কবিতা আবৃত্তি করেন বাপার শিশুশিল্পীরা। আগামী প্রজন্মের বাংলাদেশি আমেরিকান শিশুদের নৃত্য মুগ্ধ করে অতিথিদের। প্রবাসের বিশিষ্ট শিল্পীদের মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের গান উপভোগ্য করে তোলে শীতের সন্ধ্যা।

অনুষ্ঠানে শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও সংগঠনের সহ-সভাপতি মাকসুদা আহমদ। বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সিনিয়র সদস্য ও জ্যামাইকা ফ্রেন্ডস সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক জে মোল্লা সানী, উদযাপন কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী লিয়াকত আলী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সোসাইটির প্রাক্তন ক্রীড়া সম্পাদক মখন মিয়া, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সাংগঠনিক সম্পাদক মানিক আহমদ। অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন মায়া অ্যাঞ্জেলিনা, নজরুল কবির, কবি জুলি রহমান, সামসুন ফওজিয়া মায়া, সামিরা। সংগীত পরিবেশন করেন মোশাফির মুক্তা, রোজি আজাদ ও কালা মিয়া। নৃত্যু পরিবেশন করেন মায়া অ্যাঞ্জেলিনা, ইশরাক সামিরা, লামিয়া নিহা, সিমরিন মজুমদার, প্রান্তি ভদ্র।

বাংলাদেশি আমেরিকান কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটির কর্মকর্তারা হচ্ছেন সভাপতি সারওয়ার চৌধুরী, সহ-সভাপতি লোকমান আহমদ, মোহাম্মদ সাদি মিন্টু, সৈয়দ ইলিয়াস খছরু, আহমদ ফয়ছল, মাকসুদা আহমদ, সাধারণ সম্পাদক শাহ বদরুজ্জামান রহেল, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহ কামাল উদ্দিন, এম ডি আলাউদ্দিন, সোহেল আহমদ, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ রনি, সাংগঠনিক সম্পাদক সহিদুল ইসলাম ভূইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ হোসেন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রায়হান জামান রানা, প্রচার ও গণসংযোগ সম্পাদক লিয়াকত আলী, স্কুল শিক্ষা ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সালমা সুমি, ক্রীড়া ও বিনোদন শাহ ইকবাল রাজু, আইন ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক আব্দুর রহমান দুলাল, সদস্য আব্দুল হাসিম হাসনু, আহবাব চৌধুরী খোকন, জে মোল্লা সানি, রেহানুজ্জামান রেহান ও চৌধুরী মোমিত তানিম।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন জালাল চৌধুরী।

শেয়ার করুন