২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৯:০৩:২২ পূর্বাহ্ন


ইভিএম নিয়ে ইসির মতবিনিময়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি যাবে না
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৬-২০২২
ইভিএম  নিয়ে ইসির মতবিনিময়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি যাবে না


আগামীকাল  ২৮ জুন  ইভিএম  এর কারিগরি ও ভোটদান বিষয়ে নির্বাচন কমিশন আহুত মতবিনিময় সভায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি অংশ নেবে না।

এর বদলে তারা আগামী  জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতি চালু করার কোন অবকাশ নেই জানিয়ে দিয়ে  ইভিএম  সম্পর্কে নির্বাচন কমিশন বরাবর বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ৭ দফা বক্তব্য পেশ করেছে।  

আজ দুপুরে পার্টির সাধারণ সম্পাদক  সাইফুল হক  নির্বাচন কমিশন সচিব বরাবর পাঠানো চিঠিতে সভায় অংশ নিতে পার্টির অপারগতা জানিয়ে ইভিএম সম্পর্কে পার্টির ৭ দফা মতামত জানিয়েছেন।

জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতি চালু না করার পক্ষে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মতামরত বণ্ হয় দেশের ভোটারেরা ইভিএম এ ভোট দেবার জন্য এখনও প্রস্তুত নয়। ইভিএম পদ্ধতি নিয়ে ভোটারদের সন্দেহ অবিশ্বাস এখনও প্রবল। ভোটারদের ধারণা ইভিএম এ কোন না কোন কারসাজি আছে ;

ইভিএম পদ্ধতিতে সরকারি দল নিজেদের পক্ষে নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে আসতে কিছু না কিছু করতে পারে। এই পদ্ধতি সম্পর্কে জনগণের মনোভাব এখনও খুবই নেতিবাচক। সদ্যসমাপ্ত কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে এই নেতিবাচক মনভাব  আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

জনগণের এক বড় অংশের ধারণা ইভিএম পদ্ধতি নির্বাচনে ডিজিটাল কারচুপির অত্যাধুনিক যন্ত্র। যেহেতু নির্বাচন কমিশন ইভিএম নিয়ন্ত্রণ করবে সেখানে সফটওয়্যার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ভোটের ফলাফল নিয়ন্ত্রণের সুযোগ থাকে। এসব অনাস্থার কারণে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস  আয়ারল্যান্ড, জার্মানী, মালয়েশিয়া, ভেনিজুয়েলাসহ অনেক দেশ ইভিএম পদ্ধতি থেকে সরে এসেছে।  ব্যালট পেপারে ভোট গ্রহণের পর কেউ ফলাফল নিয়ে অনাস্থা প্রকাশ করলে পুনরায় ব্যালট গননার সুযাগ রয়েছে,

যা ইভিএম পদ্ধতিতে নেই। নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে ইভিএম পরিচালনা করলেও হ্যাকিং এর মাধ্যমে ফলাফল উলটপালট হতে পারে। বিশ্বের উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন দেশে হ্যাকিং এর ঘটনা অহরহ ঘটছে।মতামতে আরো বলা হয় দেশের আর্থ সামাজিক বাস্তবতা, ভোটারদের শিক্ষা ও চেতনার ঘাটতি, ভোটকেন্দ্রে পেশীশক্তির উপস্থিতি ইভিএম ব্যবস্থার সংকট। এছাড়া ২০১৪ ও  ২০১৮ সালে নজিরবিহীন দুটি নির্বাচনী তামাশার পর  দেশে নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন ব্যবস্থার কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই।গোটা নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি গণহতাশা ও গণঅনাস্থা তৈরী হয়েছে।

সরকারি দলের পক্ষে কাজ করতে যেয়ে নির্বাচন  কমিশনও একদিকে তাদের নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করেছে , আর অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সম্মান ও মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত করেছে।এই প্রেক্ষিতে  নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা - বিশ্বাস ফিরিয়ে আনাটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। ইভিএম নিয়ে  নির্বাচন কমিশনের তৎপরতা ও মাতামাতি  নতুন নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাকে কেবল আরও প্রশ্নবিদ্ধই  করবে।

সর্বোপরি বিরোধী সকল রাজনৈতিক দলসহ অধিকাংশ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল যেখানে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতির বিরুদ্ধে সেখানে আগামী জাতীয় নির্বাচনে কোন যুক্তিতেই ইভিএম পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়া ও ইভিএম পদ্ধতিতে  ভোট  গ্রহণের কোন অবকাশ নেই। আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে  নির্বাচন কমিশনের ইভিএম বিতর্কে জড়িয়ে পড়া বর্তমান নির্বাচন কমিশনকেও কেবল আরও প্রশ্নবিদ্ধই করবে।


বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি  আশা করে  সমুদয় অবস্থা বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশন ইভিএম নিয়ে তাদের তৎপরতা থেকে সরে আসবেন এবং ভেঙ্গেপড়া নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা  ফিরিয়ে আনতে মনোযোগী হবেন।

শেয়ার করুন