২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৭:৩৩:২৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


লংআইল্যান্ডে প্রথম মেলায় প্রাণের উচ্ছ্বাস
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৮-২০২৩
লংআইল্যান্ডে প্রথম মেলায় প্রাণের উচ্ছ্বাস লংআইল্যান্ডে বাংলাদেশ ফেস্টিভালে কর্মকর্তাবৃন্দ


লংআইল্যান্ডে বাংলাদেশিদের বসবাস দীর্ঘদিন থেকেই। কিন্তু অনুষ্ঠানের দিক থেকে তারা অনেক পিছিয়ে। মাঝে মধ্যে হলের মধ্যে অনুষ্ঠান করে তাও সীমিত আকারে। কিন্তু এবারই প্রথম লংআইল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশিরা ফেস্টিভালের আয়োজন করেছিলেন। তার খোলা আকাশের নিচে। নাম দেওয়া হয় লংআইল্যান্ড ফেস্টিভাল। আয়োজকরা অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিশাল বাজেটের ফেস্টিভালের আয়োজন করেন। শঙ্কা ছিল মানুষ হবে কি না, জমজমাট হবে কি না? কিন্তু তাদের ধারণাকে পাল্টে দিয়েছেন মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি। আর এই আয়োজন সফল না হয়ে পারে না। কারণ এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন বাংলাদেশি কমিউনিটির পরিচিম মুখ এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা। সঙ্গে যোগ করেছেন লংআইল্যান্ডে যেসব বাংলাদেশি মুরব্বি আছেন তাদের। এই মেলা কি ছিল না, বলা যায় সবই ছিল। মেলায় উপস্থাপন করা হয় বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের সংস্কৃতি, কৃষ্টি-কালচারকে। পুরো আয়োজনেই ছিল বাংলা সংস্কৃতির জয়গান। এই মেলায় সব বয়সী বাংলাদেশি বাঙালিয়ানায় অংশগ্রহণ করেন। ছিল স্টল, ছিল গান-বাজনা, ছিল আলোচনা, ছিল নাচ, ছিল প্রবাসে জন্ম নেওয়া এবং বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ। তাদের অংশগ্রহণে পুরো এলাকা যেন একখণ্ড বাংলাদেশে রূপ নেয়। দিনের প্রথম অংশে মানুষের উপস্থিতি একটু কম থাকলেও শেষ বিকেলে মানুষের যেন ঢল নামে। মেলায় এসে তারা স্টল থেকে নিজেদের পছন্দের কেনাকাটা করেছেন, গান শুনেছেন, চুটিয়ে আড্ডা মেরেছেন। নতুন প্রজন্মের জন্য ছিল খেলাধুলার বিশেষ আয়োজন। সবশেষে বলা যায় মেলা শেষে আয়োজকদের চোখে মুখে ছিল তৃপ্তির হাসি, যা প্রমাণ করে তারা সফল ও সার্থক। প্রথম মেলাতেই তারা বাজিমাত করেছেন।

গত ১৯ আগস্ট শনিবার দিনব্যাপী এই মেলার আয়োজন করা হয় লংআইল্যান্ডের বেবিলন টাউন হলে। ফিতা কেটে এবং বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন বেবিলন টাউন হলের সুপারভাইজার রিড শেফার্ড, স্টেট সিনেটের মনিকা গঞ্জালেস এবং মেলার আহ্বায়ক গিয়াস আহমেদ। এই সময় উপস্থিত ছিলেন মেলার সদস্যসচিব রিয়াজ মাহমুদ, প্রধান সমন্বয়কারী গোলাম ফারুক শাহীন, উপদেষ্টা ডা. ওয়াদুদ ভূইয়া, নাফিউল ইসলাম পান্না, নাসির আলী খান পল, কো- কনভেনর আসিফ বারী টুটুল, মোহাম্মদ মহসীন, মিয়া আলম পাখি, আসাদুল বারী আসাদ, কালচারাল চেয়ারম্যান ইশতিয়াক রুমি।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির প্রতিনিধি জিম কারেন্ট, ডেপুটি স্পিকারের প্রতিনিধি ক্রিস্টান মার্গেজ, কাউন্সিলম্যান ডুয়েন গেগি, অ্যাসেম্বলিওম্যান ক্যাম্বেলি জিম প্যারির প্রতিনিধি জেনিফার এল মার্থিন, জন ওয়ার্ড, সাফোক কাউন্ট্রির ইলেকশন কমিশনার ক্যাভিন মারফি, শো টাইম মিউজিকের প্রেসিডেন্ট আলমগীর খান আলম, বিশিষ্ট বিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী নূরুল আজিম, জেবিবিএর সাবেক সভাপতি আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম, ডা. মাসুদুর রহমান, বারী হোম কেয়ারের ভাইস প্রেসিডেন্ট মুনমুন হাসিনা বারী, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তা আহসান হাবিব, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, নবযুগ পত্রিকার সম্পাদক শাহাব উদ্দিন সাগর, আব্দুস সবুর, মিজানুর রহমান, জাহাঙ্গীর সরোয়ার্দী, শাহাদাত হোসেন রাজু, মহিউদ্দিন আহমেদ, মজিব চৌধুরী রানা, নিপা আহমেদ, নাজমুন আলিম, জিয়াউল ইসলাম জুয়েল, আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।

গিয়াস আহমেদ মেলায় আগত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা প্রথমবারের মতো এই মেলার আয়োজন করেছি। আপনাদের সহযোগিতায় আজকে মেলা সফল হয়েছে। আগামী দিনে আমরা এই ধরনের মেলার আয়োজন করবো। তিনি মেলায় যারা সহযোগিতা করেছেন এবং স্পন্সর করেছেন, তাদের ধন্যবাদ জানান।

রিচ শেপার্ড বলেন, আমাদের এলাকায় বাংলাদেশিদের সংখ্যা বাড়ছে। আজকের অনুষ্ঠানে এসে আমার কাছে ভালো লাগছে। তিনি বাংলাদেশিদের মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।

মনিকা মার্টিনেজও বাংলাদেশিদের মূলধারায় সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশিরা অত্যন্ত পরিশ্রমী। আপনাদের জন্য আমার অফিসের দরজা সব সময় খোলা।

আসিফ বারী টুটুল বলেন, আমরা প্রথমবারের মতো এই মেলার আয়োজন করছি। আগামী দিনে আরো এই ধরনের মেলার আয়োজন করবো।

ডা. ওয়াদুদ ভুইয়া এই ধরনের সুন্দর আয়োজনের জন্য আয়োজক কমিটির সব সদস্যতে ধন্যবাদ জানান।

রিয়াজ মাহমুদ মেলা সফল এবং সার্থক করার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

গোলাম ফারুক শাহীনও সবাইকে ধন্যবাদ জানান, তাদের প্রথম আয়োজনের সহযোগিতা করার জন্য।

আবু ফজল দিদারুল ইসলাম বলেন, প্রথম আয়োজন সুন্দর হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো সুন্দর সুন্দর মেলা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে কনভেনর গিয়াস আহমেদ এবং প্রধান সমন্বয়কারী গোলাম ফারুক শাহীদকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন জেনিফার এল মার্টিন।

আশরাফুল হাসান বুলবুল, শারমিন রেজা ইভা এবং নিম্মির উপস্থাপনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী বেবী নাজনীন, রিজিয়া পারভীন, রবি চৌধুরী, প্রতীক হাসান, বিন্দু করা, প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী নাভিন, কৃষ্ণাতিথি, রায়হান তাজ, প্রমি তাজ, শামীম সিদ্দিকী, ত্রিনিয়া হাসান, হীরা এবং মীম।

মেলাটি সন্ধ্যায় শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শেষ হয় মধ্যরাতে। কারণ শিল্পীর একের পর পরিবেশনা হাজার হাজার দর্শক উপভোগ করেন। তারা কোনোভাবেই চেয়ার ছাড়তে চাইছেন না, বারবার সময় বাড়ানো হয়। অবশেষে র‌্যাফেল ড্রর মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। র‌্যাফেল ড্রর প্রথম পুরস্কার ছিল সিলেট মোটরসের সৌজন্যে গাড়ি, দ্বিতীয় পুরস্কার ছিল ডায়মন্ডের রিং, তৃতীয় পুরস্কার ছিল স্বর্ণের চেইন, চতুর্থ পুরস্কার ছিল ল্যাপটপ এবং পঞ্চম পুরস্কার ছিল আইপ্যাড।

মেলা উপলক্ষে গোলাম ফারুক শাহীনের সম্পাদনায় প্রকাশ করা হয় হৃদয়ে লংআইল্যান্ড নামে একটি ম্যাগাজিন। মেলার আয়োজনে ছিল লংআইল্যান্ড বাংলাদেশ সোসাইটি।

শেয়ার করুন