০৩ অক্টোবর ২০২৫, শুক্রবার, ১১:২৯:৫৮ পূর্বাহ্ন


জাতিসংঘের সামনে পরস্পরবিরোধী সমাবেশ
আ.লীগের দুই নেতার ওপর হামলা : বিএনপির একজন গ্রেফতার
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-১০-২০২৫
আ.লীগের দুই নেতার ওপর হামলা : বিএনপির একজন গ্রেফতার


জাতিসংঘে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণের প্রতিবাদ ও সমর্থনের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে কেন্দ্র করে গত ২৬ সেপ্টেম্বর গোটা এলাকা উত্তাল হয়ে উঠেছিল। এ পরস্পরবিরোধী জমায়েত একপর্যায়ে সহিংস রূপ নেয় এবং গোটা এলাকায় সৃষ্টি হয় চরম উত্তেজনা। 

নিউইয়র্ক পুলিশের বেষ্টনীর ভেতরে পৃথক স্থানে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা জড়ো হয়ে এ বিক্ষোভ ও শান্তি সমাবেশ করেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পূর্বঘোষিত ‘যেখানে ইউনূস-সেখানেই প্রতিরোধ’ কর্মসূচি পালন করেছিল। অপরদিকে, ইউনূসের ভাষণের সমর্থনে বিএনপির ‘শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শান্তি সমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। 

শান্তি সমাবেশে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে ছিলেন আন্তর্জাতিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল লতিফ সম্রাট, গিয়াস আহমেদ এবং জিল্লুর রহমান জিল্লু, বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য গোলাম ফারুক শাহীন এবং বিএনপি নেতা মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি আলহাজ বাবর উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রহমান, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির সভাপতি অলিউল্যাহ আতিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান সাইদ, উত্তর বিএনপির সভাপতি আহবাব চৌধুরী খোকন, সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ চৌধুরী, দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, যুবদলের সাবেক সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র জাসাসের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সায়েম রহমান, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সরওয়ারর্দী, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এমএ বাতিন, বদরুল হক আজাদ, মযহারুল ইসলাম জনি, মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম। 

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি, নিউইয়র্ক স্টেট ও মহানগর বিএনপি ছাড়াও শ্রমিক দল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলের নেতাকর্মীরা স্লোগানে নেতৃত্ব দেন। তারা ফ্যাসিবাদের চির অবসানে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আরো কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান। স্লোগানে তারেক রহমানকে বাংলাদেশের পরবর্তী অবিসংবাদিত নেতা হিসেবেও অভিহিত করা হয়। 

মুহাম্মদ ইউনূসকে স্বাগত ও অবিলম্বে তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রত্যাশা জানিয়ে বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা আকতার হোসেন বাদল, আলহাজ সোলায়মান ভূইয়া, আলহাজ বাবরউদ্দিন, জসীম ভুইয়া, এমএ বাতিন, পারভেজ সাজ্জাদ, এমএ সবুর, কাজী আসাদউল্লাহ, আবু সুফিয়ান, গিয়াসউদ্দিন, আনিসুর রহমান প্রমুখ। 

অন্যদিকে বিক্ষোভ সমাবেশে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন ড. সিদ্দিকুর রহমান, এম ফজলুর রহমান, ডা. মোহাম্মদ আলী মানিক, ড. প্রদীপ কর, এম এ সালাম, শামসুদ্দিন আজাদ, আব্দুল কাদের মিয়া, ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, সামাদ আজাদ, এম এ করিম জাহাঙ্গির, ইমদাদ চৌধুরী, সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল, মহিউদ্দিন দেওয়ান, আবুল হাসিব মামুন, মজিবর রহমান মিয়া, শাহিন আজমল, শেখ আতিক, সোলায়মান আলী, সাখাওয়াত বিশ্বাস, নুরুজ্জামান সর্দার, শাহনাজ মমতাজ, সাহানারা রহমান, জালালউদ্দিন জলিল, মিসবাহ আহমেদ, ফরিদ আলম, নূরল ইসলাম, এন আমিন, তানভির আলম, অ্যাডভোকেট জহির, মুজিবউদ্দিন, জিআই রাসেল, শেখ সেলিম, সেবুল মিয়া, জেড চৌধুরী জয়, জাহিদ খন্দকার, জাহিদ হোসেন, হৃদয় মিয়া প্রমুখ। 

আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন যে, বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের সস্তা অঙ্গীকারে ক্ষমতা দখলকারী মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার বাংলাদেশে চরম বৈষম্য তৈরি করেছে। তারা আরো দাবি করেন যে, হত্যা, লুট, অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি ধর্ষণের ঘটনাও অবিশ্বাস্যরকম বেড়েছে এবং যারা এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন, তারাই হত্যা বা গ্রেফতারের শিকার হচ্ছেন। তারা অবিলম্বে মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ দাবি করেছেন। 

পুলিশ বিক্ষোভ ও শান্তি সমাবেশের জন্য ব্যারিকেড দিয়ে এলাকা চিহ্নিত করে দিলেও পরস্পরের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য-স্লোগানে কোনো কমতি পরিলক্ষিত হয়নি। এ উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতেই একপর্যায়ে বিএনপি কর্মীরা ভার্জিনিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি জিআই রাসেলকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। 

রাসেল ভুলবশত বিএনপির বেষ্টনীতে ঢুকে পড়েছিলেন ইউনূসের ব্যঙ্গচিত্র সংবলিত ‘গার্বেজ ক্যান’ হাতে নিয়ে। এ সময় বিএনপিকর্মীরা ইউনূসের সমর্থনে স্লোগান দিয়ে রাসেলের ওপর হামলা চালালে তিনি আহত হন। তবে অকুস্থল থেকে কাউকে গ্রেফতারের তথ্য জানা যায়নি। 

পরস্পরবিরোধী সমাবেশ শেষে ঘরে ফেরার সময় যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগের নেতা হৃদয় মিয়ার ওপর হামলে পড়েন বিএনপিকর্মী রিয়াজ রহমান। এ অতর্কিত হামলায় সবাই সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। যদিও হৃদয় মিয়া রিয়াজের মাকে গালি দিলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। 

কর্তব্যরত পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে রিয়াজকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে জামিন দেওয়া হয়। 

শেয়ার করুন