সংবর্ধিত অতিথিকে বিভিন্ন সংগঠনের ফুল দিয়ে অভিনন্দন
বাংলাদেশের মানুষের ভোটে যদি বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় যায় তাহলে আমরা প্রবাসী বাংলাদেশীদের নিয়ে গ্লোবাল প্রবাসী কাউন্সিল করতে চাই। যার মধ্যমে সরকার পরিচালনায় এবং দেশের উন্নয়নে আমরা প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাজে লাগাতে পারি, আমরা তাদের সহযোগিতা চাই। প্রবাসে যে সব বাংলাদেশী এক্সপাটির্জ রয়েছেন তাদের কাজে লাগাতে চাই। প্রবাসী বাংলাদেশীদের যদি দেশের উন্নয়নে বা দেশ পরিচালনার সাথে সম্পৃক্ত করা না যায় এক সময় তাদের প্রজন্ম তাদের শিকড় ভুলে যাবে। যা হবে আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় ক্ষতির। গত ২০ অক্টোবর সন্ধ্যায় বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এবং সিলেট-১ আসনের বিএনপির প্রার্থী খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির এ সব কথা বলেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য এবং যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লুর তত্ত্বাবধানে সংবর্ধনা সভাটি উডসাইডের গুলশান টেরেসে অনুষ্ঠিত হয়। সিলেট বিভাগীয় নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত চমৎকার সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি আজমাল হোসেন কুনু। গোলাপগঞ্জ সোসাইটির সভাপতি ও বিএনপি নেতা এবাদ চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের (একাংশের) সভাপতি বদরুল হোসেন খান, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি বদরুন নাহার খান মিতা, বাংলাদেশ লীগ অব আমেরিকার সাবেক সভাপতি বেদরুল ইসলাম বাবলা।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দেওয়ান শাহেদ চৌধুরী, তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী, এডভোকেট নাসির উদ্দিন, সালেহ চৌধুরী, নিউইয়র্ক উত্তর বিএনপির সভাপতি আহবাব চৌধুরী খোকন।
খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বিএনপি ১৫ বছরে একটি স্বৈরাচারি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। আমরা পরিবর্তন চাই বলেই আন্দোলন করেছি, সংস্কার চাই বলেই আন্দোলন করেছি- যে কারণে সরকারের নানা জুলুম নির্যাতনের পরও কেউ দল ছেড়ে যায়নি। এটা একটি বিরল ঘটনা। তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের এক ক্রান্তিকালে ক্ষমতায় এসেছিলেন। তিনিই দুর্ভিক্ষপীড়ত দেশকে স্বাভলম্বী করেছেন, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। দেশ ধ্বংসস্তুপ থেকে সম্মানের দেশে পরিণত করেছিলেন। আবার আরেক ক্রান্তিকালে ক্ষমতায় এসেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনিও বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, সংসদীয় গণতন্ত্র উপহার দিয়েছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারও দিয়েছিলেন।
তিনি আরো বলেন, ৫ আগস্টের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দল পরিচালনায় প্রশংসসীয় উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তার নিদের্শের কারণেই নেতাকর্মীরা প্রতিশোধ পরায়ণ হয়নি। যারা চাঁদাবাজি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছেন। এত কঠোর বাংলাদেশে আর কোন রাজনৈতিক দল তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নেয়নি। কিন্তু সরকারের অসহযোগিতার কারণেই অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বিএনপি মানুষের ভোটে ক্ষমতায় গেলে আরো কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক পরিবর্তন চাই। শেখ হাসিনা ভোটার ব্যবস্থা হাইজ্যাক করেছিলেন আমরা তা করতে চাই না। আমরা চাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্বেই নির্বাচন হবে। সংবিধানে ৭০ ধারা পরিবর্তন করা হবে। সংসদীয় কমিটিতে প্রেসিডেন্ট থাকবে বিরোধী দলীয় নেতা, স্পীকার ক্ষমতাসীন দলের হলে ডেপুটি স্পীকার হবে বিরোধী দল থেকে। এর ফলে বাংলাদেশে আবার ফ্যাসিস্ট সরকার আসতে পারবে না। তিনি হাসিনার আমলের দুর্নীতির উদারহরণ টেনে বলেন, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও কর্ণফুলি ট্যানেলের কথা। তিনি বলেন, অর্থ হাতিয়ে নেয়ার জন্যই এগুলো করা হয়েছে। রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১২.৬ বিলিয়নের মধ্যে ১১ বিলিয়ন রাশিয়ার বিনিয়োগ। আমাদের কোন লোকও নেই। অন্যদিকে কর্ণফুলি ট্যানেলে কেয়ামতের আগ পর্যন্ত কোন লাভ হবে না। তিনি বলেন, আমরা প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিনিয়োগ চাই, তাদের দেশের উন্নয়নে সম্পৃক্ত করতে চাই। প্রবাসীদের সাথে আমাদের সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে হবে। প্রবাসীদের জন্য এফস থাকবে এবং সহযোগিতার জন্য টিম থাকবে। আমি সিলেট ১ আসনের বিএনপির প্রার্থী হিসাবে বলতে চাই, আমি নির্বাচিত হলে সিলেটের জলাবন্ধতা দূর করা হবে। জুয়া খেলা বন্ধ করা হবে, ড্রাগ বন্ধ করা হবে, মাস্তানী বন্ধ করা হবে, থাকবে না হোন্ডা বাহিনী এবং কারিগরি শিক্ষা চালু করা হবে।
অনুষ্ঠানে তিনি সবার কাছে তার জন্য ভোট প্রার্থনা করেন। সবাইকে ভোটের সময় দেশে যাবার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরকে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিলাল চৌধুরী, ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, আকিব হোসেন, সাইফুর খান হারুন, মিজানুর রহমান মিজান। এ ছাড়াও নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপি, উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির নেতৃবৃন্দ তাকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উত্তর বিএনপির সভাপতি আহবাব চৌধুরী খোকন, সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ চৌধুরী, আনোয়ার জাহিদ, এজিএম জাহাঙ্গীর, আব্দুর রহিম, শরিফুল খালিশদার, সোয়েব আহমেদ, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির ভিপি জসীম, হুমায়ুন কবীর, দেওয়ান কাউছার, মনির হোসেন, দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা, সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, খলকুর রহমান প্রমুখ।