২৯ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার, ১০:৫৬:৫৭ অপরাহ্ন


তরুণ প্রজন্মের লিডারশিপ আগের তুলনায় উন্নত
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-১০-২০২৫
তরুণ প্রজন্মের লিডারশিপ আগের তুলনায় উন্নত সম্প্রীতির সংলাপে মঞ্চে অতিথিবৃন্দ


বাংলাদেশে আমরা সবসময় দেখে আসছি তরুণ প্রজন্মের কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের লিডারশিপ আগের তুলনায় অনেক উন্নত হয়েছে।

ঢাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের (কেআইবি) কনভেনশন হল-১ এ নাগরিক, ধর্মীয় এবং তরুণ নেতৃবৃন্দসহ স্বেচ্ছাব্রতীদের প্রতিনিধিবৃন্দদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ‘সম্প্রীতি সংলাপ’ এ আলোচকরা এসব কথা বলেন। 

বাংলাদেশে ধর্ম, বিশ্বাস ও সম্প্রীতির সুদীর্ঘ ঐতিহ্য লালনে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ যুক্তরাজ্য সরকারের সহায়তায় ‘এজেন্টস অফ চেঞ্জ: এ বাংলাদেশ ফ্রিডম অফ রিলিজিওন অর বিলিফ লিডারশিপ ইনিশিয়েটিভ’ কার্যক্রমটি পরিচালনা করছে। তারই অংশ হিসেবে দেশের নয়টি জেলায় ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতা এবং সামাজিক সম্প্রীতি সুরক্ষায় তরু স্বেচ্ছাব্রতীদের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। কর্মসূচিসমূহে সংশ্লিষ্ট এলাকার নাগরিক, রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ সহায়তা করছেন। 

সংলাপ অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মুহাম্মদ রফিক-উল ইসলাম; ফোর্ব এজন্টেস অফ চেঞ্জ প্রজেক্টের ডিরেক্টর, অপারেশন্স ও চার্চ অফ ইংল্যান্ডের পলিসি অ্যাডভাইজার ড. চার্লস রীড; ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও), ব্রিটিশ হাই কমিশন, ঢাকার সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাডভাইজার তাহেরা জাবীন; এফসিডিও, ব্রিটিশ হাই কমিশন, ঢাকার গভর্নেন্স অ্যাডভাইজার ড. শাহনাজ করীম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর প্রশান্ত ত্রিপুরা। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ-এর সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শশাঙ্ক বরণ রায়।

প্রশান্ত ত্রিপুরা বলেন, তরুণদের সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে ‘সমাজে নানান জাতি, ধর্ম ও বর্ণের মানুষের বসবাস থাকে, সমাজে নানা বৈচিত্র্য রয়েছে। মানুষ মানুষে ভেদাভেদ ও অসমতা কমিয়ে এই বৈচিত্র্যকে সম্মান দেখাতে হবে। সমাজ ও রাষ্ট্র যদি সম্প্রীতিকে যদি হারিয়ে যেতে না দেয়, তাহলে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন একটি ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে ওঠবে, যেখানে সবাই সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ থাকবে।

ড. শাহনাজ করীম বলেন, মেয়েদেরকে এবং সংখ্যালঘুদেরকে বাদ দিয়ে সামাজিক সম্প্রীতি সুরক্ষা এবং ধর্মীয় ও সামাজিক নেতৃত্ব দেওয়া সম্ভব নয়। বাংলাদেশের সকল ধর্মের শান্তির ও হাতিয়ার হলো সমতা ও সম্প্রীতি। এর জন্য সিভিল সোসাইটির মাধ্যমে তরুণদেরকে কাজে লাগাতে হবে।

মুহাম্মদ রফিক-উল ইসলাম বলেন, ‘প্রত্যেক ধর্মের মূল বাণী হলো সম্প্রীতি, কল্যাণ, শান্তি ও ভালোবাসা। সমাজ বিনির্মাণের জন্য প্রয়োজন মানবিক মর্যাদাকে অক্ষুণ্ণ রাখা। সকল ধর্মের মমার্থ অনুযায়ী অহিংসার সমাজ গড়তে পারলে সমাজে সম্প্রীতি বজায় থাকবে। আর ইসলাম ধর্মে আজানের মাধ্যমে কল্যাণময় সমাজ গঠনের আহ্বান জানানো হয়। তিনি আরও বলেন, ‘ইসলাম ধর্মে ভিন্ন ধর্মের মানুষ ও প্রতিবেশীদের অধিকার রক্ষার কথা বারবার ব্যক্ত করা হয়েছে। আমাদের সব ধর্মেই মানুষের অধিকারের কথা বলা হয়েছে। ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও তরুণরা সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় একটি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ড. চার্লস রীড বলেন, বাংলাদেশে আমরা সবসময় দেখে আসছি তরুণ প্রজন্মের কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের লিডারশিপ আগের তুলনায় অনেক উন্নত হয়েছে। এখন সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি ন্যাশনাল ফোরাম গঠিত হয়েছে। যেসব কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে তা দেখে সত্যিই আমরা অনুপ্রাণিত ও মুগ্ধ। আমি আশা করি, এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং আমরা আমাদের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।’ 

তাহেরা জাবীন বলেন, আমরা নিজ নিজ ধর্ম সবার জন্য সম-অংশদারিত্বের ভিত্তিতে কমিউনিটির সকলকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় পর্যায় ও জাতীয় পর্যায়ে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে পারলে অসমতা দূর করা সম্ভব বলে বিশ্বাস করি।

শেয়ার করুন