০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০২:০৫:৩৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


বিদ্যুৎ-জ্বলানিতে দুশ্চিন্তা
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৭-২০২২
বিদ্যুৎ-জ্বলানিতে দুশ্চিন্তা


বিদ্যুৎ সঙ্কটের কূল দেখা যাচ্ছেনা। বর্তমান সরকারের মেয়াদ ১৩ বছর ছাড়িয়ে। এ টানা তিন টার্মের প্রথমে দায়িত্ব নিয়েই বর্তমান সরকার নজর দিয়েছিল বিদ্যুতে। এনে দিয়েছিল মানুষকে স্বস্থি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কিছু উদ্যোগ ও কাজ করেন এ সেক্টরে। এ সময় একটা শ্লোগানও দেয়া হয়েছে। ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’।

বলতে গেলে দেশের আনাচে কানাচে সর্বত্র ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়া হয় বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ পেতে অবশিষ্ট কেউ থাকলে বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের কৈফিয়ত তলব করতে হতো। স্বয়ং সম্পন্ন বিদ্যুতে বাংলাদেশ। সবই ছিল ঠিক। কিন্তু সমস্যার কারণ হয়ে গেছে ‘ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ। শুধু সমস্যাই নয় ভয়ানক সমস্যার মুখে বাংলাদেশ। যেমনটা সর্বশেষ বিএনপি সরকারের আমলেও বিদ্যুতে অবহেলা ছিল।

লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ্য হয়ে উঠেছিল মানুষ। বিএনপিতে বিরক্তি ও বর্জনের কারণগুলোর অন্যতম ছিল বিদ্যুৎ। এ সরকারের তৃতীয় টার্মের শেষ মুহূর্তে এসে এমন সমস্যা খোদ সরকারি দলেও কিছুটা অস্বস্থি। যদিও সর্বমহল থেকে মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা চলছে। তবুও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যাবহার করে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া মানুষ লোডশেডিংটা স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করছে না। 

তবে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানোতে ভর্তুকি ছিল। গত ২০২০ সনের ২০ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নোত্তরে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ যে তথ্য প্রদান করেছিলেন তা নিম্নরূপ- ‘সরকার বিদ্যুৎ খাতে গত ১০ বছরে ৫২ হাজার ২৬০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। জাতীয় সংসদে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম-৪ আসনের দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য দিয়েছিলেন তিনি। সেসময় নসরুল হামিদ আরো বলেন, সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় ফার্নেস অয়েলভিত্তিক গড়ে ১৩-১৪ টাকা, ডিজেলভিক্তিক ২৫-৩০ টাকা, গ্যাসভিত্তিক ২.৫-৩.০ টাকা। এর বিপরীতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বাল্ক পর্যায়ে সরবরাহ ব্যয় প্রতি ইউনিট ৫ দশমিক ৮২ টাকা এবং বাল্ক পর্যায়ে গড় বিক্রয় মূল্য ৪ দশমিক ৮০ টাকা।’

এরপর অদ্যাবদি ওই ভর্তুকি বিদ্যমান। ২০২২ এ এসে সে সংখ্যা বেড়ে কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে? এ প্রশ্ন অনেকেরই। জনগণের রাজস্ব থেকে এসব ভর্তুকিতে সব ঠিকঠাক চললেও সমস্যা তৈরি ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে জ্বালানি বাজারে অস্থিরতা। রিজার্ভ থেকে ভর্তুকি দিলেও অন্যখাত থেকে সেভাবে আসছেনা রেমিটেন্স, রপ্তানী আয়। ফলে রিজার্ভের উপর চাপ। এমনিতে মুহূর্তে ভর্তুকি ভিত্তিক বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ জরুরি হয়ে পড়েছে সরকারের উপর। কারণ বেশি মূল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে কম মূল্যে আর পর্যাপ্ত খাওয়ানো সম্ভবনা। তাই সরকার উদ্যোগ নিয়েছে এ খাতে ভর্তুকি কমিয়ে রিজার্ভের উপর চাপটা কমিয়ে রাখতে।

এ জন্য সরকার ঘোষণা দিয়ে লোডশেডিং শুরু করেছে। এটা অবশ্য নজীরবিহীন। খোদ সরকার পর্যায় থেকে লোড শেডিংয়ের সিডিউল করে লোডশেডিংয়ের চিন্তা আগে কেউ কখনও করেনি। ফলে হঠাৎ করেই এমন একটা পরিস্থিতিতে দেশের আম জনতা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ভোগ করা মানুষ, ভয়ার্ত দৃষ্টিতে এ সেক্টরের দিকে দৃষ্টিপাত করছে। যে ক্রাইসিসটা শুরু হলো, সেটা কী দীর্ঘদিন থাকবে, নাকি সরকার অতিশীগ্রই সব সমাধান করে ফেলতে পারবেন। কারণ এ সমস্যার মূল যেটা দেখানো হচ্ছে সেটা যেহেতু ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। সে যুদ্ধ তো থামারই কোনো লক্ষণ্য নেই। তাহলে ওই যুদ্ধের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্বের অন্যসব অনেক দেশের সঙ্গে কী বাংলাদেশেও সঙ্কট জিইয়ে থাকবে?    

এদিকে মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) থেকে প্রতিদিন এক সপ্তাহ জোনভিত্তিক এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং শুরু। বিভিন্ন জেলা থেকে লোডশেডিংয়ের তথ্য শেয়ার করছে মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে এতে যদি সাশ্রয় কম হয়, তাহলে আরও এক ঘণ্টা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সাশ্রয়ের জন্য ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখা হবে। 

এছাড়াও বেশ কিছু উদ্যোগ সরকার নিয়েছে। এর মধ্যে রাত ৮টার পর দেশের সকল শপিং মলসহ দোকানপাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত কার্যকর এবং উপাসনালয়ে প্রার্থনার সময় ছাড়া এসি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ সংক্রান্ত তথ্য দেয়া হয় সোমবার,  মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে। সেখানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এসব কথা বলেন। এর আগে ওইদিন সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকের পর প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। বৈঠকের পর বিভিন্ন এলাকার জন্য লোডশেডিংয়ের শিডিউল প্রকাশ করেছে ঢাকা শহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জরুরি বৈঠক 

সোমবার (১৮ জুলাই) সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিদ্যুতের বর্তমান ক্রাইসিসকালীন সময়ে কিভাবে সামাল দেয়া যাবে সেটা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে সরকার এ মুহূর্তে বিদ্যুৎতের দাম বাড়াবে না। 

জ্বালনি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী 

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সভা শেষে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংসহ নানা সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী। এ সময় উপদেষ্টা কেন বিদ্যুৎজনতি সমস্যাগুলোর সুষ্ঠু সমাধান করা যায় সে বিষয়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও  কেন এমনটা হচ্ছে তার স্পষ্ট কারণগুলো সাংবাদিকদের তুলে ধরেন।

তিনি এ সময় বলেন, ‘মূলত খরচ কমাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ১৮ জুলাই সোমবার থেকে সাময়িক বন্ধ থাকবে। এ সিদ্ধান্ত সাময়িক। বিশ্ব পরিস্থিতির উত্তরণ হলে আগের অবস্থানে ফিরে আসা হবে। জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, পৃথিবীতে একটা যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। ইউক্রেনের যে যুদ্ধ, সে যুদ্ধ কিন্তু আমাদেরও যুদ্ধ। ওই যুদ্ধের প্রভাব পড়ছে আমাদের ওপর। তিনি আরও বলেন, যাদের অর্থের অভাব নেই, তারাও কিন্তু লোডশেডিং করছে। যুক্তরাজ্যে হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ায় হচ্ছে।

উৎপাদনকে কমিয়ে খরচ যাতে সহনশীল হয়, সে পর্যায়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। ডিজেলের বিদ্যুৎ উৎপাদন আপাতত স্থগিত করলাম, তাতে অনেক টাকা সাশ্রয় হবে। মনে রাখতে হবে, ডিজেলের দাম আকাশচুম্বী হয়ে গেছে। তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বলেন, আমাদের ধারণা, এক থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি হবে। এতে দিনে এক থেকে দেড় ঘণ্টা এবং কোনো কোনো জায়গায় দুই ঘণ্টাও লোডশেডিং হতে পারে। কিন্তু দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এবং পৃথিবীর এই দুর্যোগপূর্ণ সময়ে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এসময় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নাসরুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেণ। 

ডিজেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন সাময়িক বন্ধ 

পরবর্তিতে মন্ত্রনালয়ে আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে বিস্তারিত বিষয় নিয়ে ব্রিফিংয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ওই বৈঠকের নানা দিক তুলে ধরেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘ ১৯ জুলাই মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে এক ঘণ্টা করে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং করা হবে। আমরা এক সপ্তাহ এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং দিয়ে পরিস্থিতি দেখবো। এভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়া না গেলে পরে দুই ঘণ্টা করে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং দেয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে। ডিজেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন আজ মঙ্গলবার থেকে বন্ধ থাকবে।’

মসজিদ সহ উপসনালয়ে এসি বন্ধ  

দেশের প্রতিটি মসজিদসহ উপসনালয়ে এসি ব্যাবহার সীমিত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী উপাসনালয়ে এসি বন্ধের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, শুধু মসজিদ নয়, উপাসনালয়ে (মসজিদ, মন্দির ও গির্জা) সবখানে প্রচুর এসি লাগানো হয়েছে। তারা যেন মিতব্যয়ী হয়ে এসিটি চালান।প্রার্থনা শেষ হলে তারা যেন এসি সময়মতো বন্ধ করেন, আমার সাজেশন এটাই থাকবে। আমাদের এভাবে আলোচনা হয়েছে। মসজিদে নামাজের সময় ছাড়া এসি বন্ধ রাখার অনুরোধ জানান প্রতিমন্ত্রী। মসজিদে এসি বন্ধ করতে বলা হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কঠোর সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মসজিদে সবসময়ের জন্য এসি বন্ধ রাখতে বলা হয়নি। নামাজের সময় এসি চালু রাখা যাবে। আসলে উপাসনালয়গুলোতে আমরা বিপুলসংখ্যক এসি ব্যবহার করছি, এক্ষেত্রে কিছুটা সাশ্রয়ী হওয়া দরকার। আপনারা কেবল নামাজের সময়টুকুতে এসি ব্যবহার করুন, বাকি সময়ে বন্ধ রাখুন। এক প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, অনেক জায়গায় দেখেছি, নামাজের সময় বাদেও এসি চালানো হয়। এ জন্য আমি অনুরোধ করবো, আপনারা একটি নির্দিষ্ট সময়ে এসি ছাড়ুন। পরবর্তী সময়ে যতটুকু সম্ভব বিদ্যুৎ সাশ্রয় করুন, এটিই আমার অনুরোধ।’

পেট্রোলপাম্প একদিন বন্ধ 

সারাদেশে একদিন পেট্রোলপাম্প বন্ধ রাখার কথা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সরকারি সেবাদানকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ রপ্তানিপণ্য ব্যাবহারকারী বাহন প্রচন্ড সঙ্কটে পড়বে। এ ব্যাপারে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, পেট্রোল পাম্প সপ্তাহে একদিন বন্ধ রাখার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। বিপিসি পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসোসিয়েশনের সঙ্গে বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। বিশ্বে জ্বালানি সংকটের কথা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকটের কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ নানা রকম সাশ্রয়ী নীতি গ্রহণ করেছে। কিছু কিছু দেশ দাম বৃদ্ধি করেছে। কেউ কেউ সাশ্রয়ী নীতি নিয়েছে। তিনি বলেন, দেশে যে পরিমাণ ডিজেল আমদানি হয়, তার ১০ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার হয়। আর বাকি ৯০ ভাগ ব্যবহার হয় অন্য খাতে। এখন যদি আমরা ১০ ভাগ বিদ্যুৎ বন্ধ করার পর যদি অন্য খাত থেকে আরও ১০ ভাগ বাঁচাতে পারি তাহলে আমাদের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। ডিজেলের বিদ্যুতের দামের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুতের ইউনিট প্রতি উৎপাদন ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৪০ টাকা। কিন্তু আমরা বিক্রি করে এই অর্থ পাচ্ছি না। তিনি বলেন, আমরা এখন গ্যাস প্রতি এমএমবিটিইউ ৩৯ ডলারে কিনে এনে ৭ টাকায় বিক্রি করছি।

শপিংমলগুলো রাত আটটার পর বন্ধ 

আলোকসজ্জাও করা যাবে না

দেশের বিশেষ করে শহরাঞ্চলে বিরাজমান বেশিরভাগ শপিংমলগুলো সেন্ট্রাল এসিতে পরিচালিত। এছাড়াও দোকানপাট,রেস্টুরেন্টও এসি ব্যাবহার করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, রাত ৮টার পর দোকানপাট, মার্কেট, শপিংমল খোলা থাকলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে। তবে এখানে উল্লেখ্য, সকাল থেকে রাত আটটা পর্যন্ত তারা তাদের এসি নিয়মিতই ব্যাবহার করতে পারবেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, রাত ৮টা থেকে কোনোরকম দোকানপাট, শপিংমল, আলোকসজ্জা-সব বন্ধ থাকবে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ বিভাগকে বলা হয়েছে, তারা খুব কঠিনভাবে এ বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবেন। যদি কেউ অমান্য করেন তাদের বিদ্যুতের লাইন আমরা বিচ্ছিন্ন করে দেবো। প্রতিমন্ত্রী বলেন, অফিস সময়ের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এটা নিয়ে এখনো পুরোপুরি সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা নোটিশ আকারে যাবে।

সরকারি অফিস সমুহে বিদ্যুৎ 

ব্যাবহার কমাতে বিভিন্ন চিন্তা 

দেশের বিভিন্ন সরকারি ও আধাসরকারি,স্বায়ত্বশাসিত,ব্যাক্তিমালিকানাধীন অফিসসমূহে জ্বালানি তেল সাশ্রয়েরও চিন্তা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী প্রথমেই উল্লেখ করেন সরকারি অফিস সমূহের কথা। তিনি বলেন, আমরা যদি যানবাহনগুলো খুব হিসাব করে ব্যবহার করি, আমাদের সরকারি মিটিং যতগুলো হয়, আমাদের মন্ত্রণালয়ে বা অন্য অফিসে হয়, সেগুলো যদি আমরা অনলাইন করে ফেলি। এরই মধ্যে আমরা এতে অভ্যস্ত। গত দুই বছর তো আমরা করেছি। এতে আমাদের বাহনে অনেকখানি (জ্বালানি তেল) সাশ্রয় হবে।’ এর বাইরেও অফিস সমুহের সময় কমিয়ে আনা যায় কি-না এ ব্যাপারেও একটা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। সাথে এ সব অফিস সমূহে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের বিষয়টাও। 

লোড শেডিংয়ের রোটেশন 

প্রধানমন্ত্রীর লোড শেডিংয়ের এলাকাভিত্তিক সিডিউল করা যায় কি-না সে কথা অনেক আগেই বলেছিলেন। সে ধারাবাহিকতায় এখন রোটেশন করা হচ্ছে। সাংবাদিক সম্মেলনে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোন এলাকায় বিদ্যুতের লোডশেডিং হবে, তা আগে থেকে গ্রাহককে জানিয়ে দেয়া হবে। আমরা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি শিল্প খাতকে। বন্দর এলাকায় সপ্তাহে দুইদিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। সভায় বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকারি-বেসরকারি অফিস ভার্চ্যুয়ালি করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকারি অফিসগুলোয় কীভাবে সময় কমিয়ে আনা যায়, সেটাও ভাবা হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। বৈঠকে জানানো হয়, সরকারি অফিসগুলো ভার্চ্যুয়ালি পরিচালনার বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সমন্বয় করবে।


শেয়ার করুন