০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১০:৩৪:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব
আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে রাজনীতি করি-মির্জা ফখরুল
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-১০-২০২২
আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে রাজনীতি করি-মির্জা ফখরুল


ক্ষমতাসীনরা হঠাত করে রাতারাতি ‘আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ’ হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।


আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে রোববার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এরকম মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘‘ আপনারা(আওয়ামী লীগ) কি করেন, না করেন এটা বাংলাদেশ সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে এদেশের মানুষ জানে। হঠাত করে তারা রাতারাতি ‘আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ’ হয়ে যাচ্ছেন।”

 

‘‘ আপনাদের কে কোথায় হাজার হাজার কোটি টাকার বাড়ি করছেন, কে কোথায় ব্যাংকের লোন দিয়ে পাচার করে দিচ্ছেন। আপনার সেই কানাডাতে বেগম পাড়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াতে সেকেন্ড হোম করছেন এগুলো বাংলাদেশের মানুষ সব খবর রা্খে।”

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ কে কয়টা ব্যাংকের মালিক হলেন, কারা কোথায় আমেরিকাতে কতগুলো বাড়ি করেছন।আর এমনিতে দেশের মানুষের টাকা দিয়ে, ৪৩ কোটি টাকা দিয়ে আপনারা সচিবদের বাড়ি তৈরি করতে চান।”

 

‘‘ কার টাকা? এই দে্শের মানুষের টাকা, এদেশের মানুষের ট্যাক্সের পয়সা। সেগুলো নিয়ে আজকে আপনাদের চেহারার দিকে তাঁকানো যায় না।”

 


‘অযথা বেশি ঘাটাবেন না, কাঁদা থেকে কেঁচো বেরিয়ে যাবে’

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল(শনিবার) কতগুলো আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। সমস্ত নৈতিক শিষ্টাচারের বাইরে গিয়ে তিনি না ধরে কথাগুলো বলেছেন এবং আমাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমন করেছেন। সেই আক্রমনে তিনি বলেছেন, আমরা নাকী দুবাই থেকে টাকা পাই আর আমি নাকী টাকার ওপর শুয়ে আছি।”

 

‘‘ আমি ওবায়দুল কাদের সাহেবকে শুধু এইটুকু বলতে চাই, অযথা বেশি ঘাটাবেন না। কাঁদা থেকে কিন্তু কেঁচো বেরিয়ে আসে কাঁদা ঘাটতে গেলে। আপনারা কি করেন না করেন গোটা বাংলাদেশের মানুষ জানে। কিভাবে অর্থ উপার্জন করেন সবাই জানে। আমরা আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে রাজনীতি করি। আমরা কারো পয়সায় রাজনীতি করি না।"

 

তিনি বলেন, ‘‘ দিস ইজ ভেরি আনফুরচুনেট। আমরা আশা করি না এতো বড় রাজনৈতিক দলের একজন সাধারণ সম্পাদক তার মুখ থেকে এই ধরনের অশালীন এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ে আক্রমন আসবে।”

 

‘‘ ব্যক্তিগত পর্যায়ে আক্রমন করলে সামাল দিতে পারবেন না। প্লিজ এটা আমি আপনাদের (গণমাধ্যম) মাধ্যমে বলছি যে, প্লিজ তখন কেউ বাদ যাবে না। কার কোথায় কত বাড়ি ঘর আছে, কত টাকা সরিয়েছেন, কিভাবে সরিয়েছেন, কিভাবে নিয়ে গেছেন সব এদেশের মানুষ জানে এবং তা প্রকাশিত হবে।”

 

শনিবার বিকালে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল টাকার বস্তার ওপর শুয়ে আছেন। ফখরুল এখন চাঙ্গা হয়ে গেছেন। টাকা পাচ্ছেন তো। টাকারে টাকা। আরব আমিরাতের টাকা, দুবাইয়ের টাকা। এই তো এল টাকা। ফখরুল মহাখুশি।”

 

নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপযাপনে দল ও অঙ্গসংগঠনের এক যৌথ সভার পর দুপুরে এই সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি মহাসচিব।

 


‘বিএনপি কারো পয়সায় রাজনীতি করে না’

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমরা আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে রাজনীতি করি, আমরা কারো পয়সায় রাজনীতি করি না। আমাদের দলের মানুষেরা প্রত্যেকটি সদস্য তারা নিজেরা চাঁদা দিয়ে এই যে দেখছেন প্রতিটি অনুষ্ঠান,প্রত্যেকে নিজেরা নিজেদের পয়সা দিয়ে তারা এই সমস্ত সমাবেশ করছে, জনগনের কাছে দাঁড়াচ্ছেন-এটাই হচ্ছে আমাদের বিশিষ্ট।”

 

‘‘ আমরা যারা রাজনীতি করি, আমরা কোনোদিনই কারো কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়ে রাজনীতি করি না। আমরা নিজের উপার্জনের টাকা, পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে আমরা রাজনীতি করি।”

 


‘বড় বড় কথা বলেন, কি দেখব?’

 

মির্জা ফখরুল তিনি বলেন, ‘‘ আর বড় বড় কথা বলছেন যে, দেখে যান। কি দেখব?”

 

‘‘ আপনারা সমস্ত সরকারি গাড়ি-ঘোড়া, সরকারি টাকা ব্যবহার করে যে লোকজন নিয়ে আসলেন বিশাল নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে, সরকারি জায়গার মধ্যে সেখানেও তো সেভাবে চেয়ার পর্যন্ত পূর্ণ করতে পারলেন না। ২২ হাজার চেয়ার ছিল পত্রিকায় আসলো। তো সেই ২২ হাজার চেয়ারই যদি পূর্ণ না হয় তাহলে কত লোক হয়েছে আপনারাই নিরুপন করবেন।”

 

 

 

‘শক্তিশালী হলে ভয় পায় কেনো?’

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আপনারা তাদের(সরকারের মন্ত্রীদের) বক্তব্য শুনছেন। এতোই যদি শক্তিশালী হোন, জনগনের প্রতি এতোই যদি আস্থা থাকে। এই যে উন্নয়ন, মেগা উন্নয়ন ঘটিয়েছেন, মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়েছেন, আর কিছুদিন হলে উন্নত দেশ হয়ে যাবেন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া তো হয়েই গেছে। তাহলে এতো ভয় পান কেনো?”

 

‘‘ আপনারা বিরোধী দলকে সভা-সমাবেশ করতে দেন না কেনো, কেনো আপনারা পরিবহন বন্ধ করে দেন, কেনো আপনারা গুন্ডাদেরকে লেলিয়ে দিয়ে সাধারণ মানুষরা সভায় আসতে চায় তাদেরকে আঘাত করেন কি কারণে? একটাই মাত্র কারণ তারা জানে যে, গণতন্ত্র যদি ঠিকমতো চলে, জনগন যদি ভোট দিতে পারে, রাজনৈতিক দলগুলো যদি কাজ করতে পারে তাহলে তারা কোনো দিনই ক্ষমতায় ফিরে আসতে পারবে না।”

 


‘খেলা হবে-এই কথায় বিশ্বাস করি না’

 

খেলা হবে- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এহেন বক্তৃব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমি ‘খেলা হবে, খেলা হবে’ কথায় বিশ্বাস করি না। এই ধরনের প্রশ্নের উত্তর আমি দিতে চাই না।”

 

‘‘ আপনরা নিজেরাই দেখছেন আমরা কেমন প্রস্তুত হচ্ছি। তা আপনাদের জানা উচিত।”

 

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, খায়রুল কবির খোকন,শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর নেওয়াজ আলী,  এবিএম

মোশাররফ হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু, আবদুস সাত্তার পাটোয়োরি, তারিকুল ইসলাম তেনজিং, মহানগর বিএনপির রফিকুল

আলম মজনু,  আমিনুল হক, যুব দলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের এস এম জিলানী, শ্রমিক দলের

মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, মুক্তিযোদ্ধা

দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, উলামা দলের শাহ নেছারুল হক, নজরুল ইসলাম তালুকদার, তাঁতী দলের

আবুল কালাম আজাদ, মজিবুর রহমান, মতস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, আবদুর রহিম, জাসাসের জাকির হোসেন

রোকন, লিয়াকত আলী, ছাত্র দলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব উপস্থিত ছিলেন।

 

শেয়ার করুন