২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৮:১৬:১৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী অনুমোদনে প্রজ্ঞা-আত্মা’র অভিনন্দন, দ্রুত গেজেট প্রকাশের দাবি বাংলাদেশের মাটি স্পর্শ করলেন তারেক রহমান ফুজি ফিফথ স্টেশন ইতিহাস গড়ে বিচারপতি হলেন বাংলাদেশি আমেরিকান সোমা হাদির খুনিদের শাস্তির দাবিতে স্মারকলিপি ও গায়েবানা জানাজা মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘স্যাংচুয়ারি ক্যাম্পাস’ ঘোষণার দাবি শিক্ষার্থীদের কিউনি ও সুইনি ছাত্রছাত্রীদের জন্য এক্সেলসিয়র স্কলারশিপ ২০২৬-এর আবেদন প্রক্রিয়া শুরু তৃতীয় দেশে ফেরত পাঠানোর যুক্তিতে আশ্রয় আবেদন বাতিলের উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রে ন্যাচারালাইজড নাগরিকত্ব বাতিলের নতুন নির্দেশনা ট্রাম্পের নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় ৩৯ দেশ


স্বেচ্ছাসেবক দলের সভায় নেতৃবৃন্দ
স্বৈরাচারী সরকার পালিয়ে যাবারও সুযোগ পাবে না
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-১১-২০২২
স্বৈরাচারী সরকার পালিয়ে যাবারও সুযোগ পাবে না বক্তব্য রাখছেন বেবী নাজনীন


বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। সরকার হরতাল দিয়েও বিএনপির গণসমাবেশে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে। দুর্নীতি করতে করতে এখন রিজার্ভের অর্থ পর্যন্ত গিলে খেয়ে ফেলেছে। মানুষ এই দুর্নীতির হিসাব নেবে এবং নব্য এই স্বৈরাচারকে পালিয়ে যাবারও সুযোগ দেবে না। গত ১০ নভেম্বর নিউইয়র্ক স্টেট স্বেচ্ছাসেবক দলের ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বরের বিপ্লব ও সংহতি দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং বাংলাদেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন এসব কথা বলেন।

নিউইয়র্ক স্টেট স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি খোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক হারুণ মিয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদ আহমেদের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বেবী নাজনীন, বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সহ-সভাপতি নাজমুন নাহার বেবি। প্রধান বক্তা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াস আহমেদ, গেস্ট অব অর্নার ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী কমিটির সদস্য সচিব, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মিজানুর রহমান মিল্টন ভুইয়া। অন্যদের মধ্যে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা আব্দুস সবুর, মোশাররফ হোসেন সবুজ, ফারুক হোসেন মজুমদার, বাবুল চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুল হক চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি তারিক চৌধুরী দীপু, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা শাহ আলম ও নিউইয়র্ক বিএনপি দক্ষিণের সদস্য সচিব বদিউল আলম।

আব্দুল আজিজের কোরআন তেলাওয়াতের পর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জাতীয় এবং দলীয় সংগীত বাজানো হয়। এ ছাড়াও দোয়া করা হয় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যারা আহত হয়েছেন তাদের জন্য। সেই সাথে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, আরাফাত রহমান কোকোসহ আরো যারা নিহত হয়েছেন তাদের রুহের মাগফিরাম কামনা করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন গিয়াস আহমেদ।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মশিউর রহমান, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মাযহারুল ইসলাম জনি, মামুনুর রশীদ মামুস, আহমেদ সোহেল, নূরে আলম, মাজহারুল ইসলাম মিরন, সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান হোসাইন, শফিকুর রহমান প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পী বেবী নাজনীন বলেন, শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমাদের একটি দেশ দিয়েছেন। সেই সাথে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। আজকের এই দিনে আমি শ্রদ্ধার সাথে তাকে স্মরণ করছি। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়াকে এবং সারা বাংলাদেশে বিএনপিকে যিনি দূরে বসে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং গণজোয়ার সৃষ্টি করেছেন আমাদের সেই নেতা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে। তিনি আরো বলেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। সরকার হরতাল দিয়েও বিএনপির গণসমাবেশে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে। সরকার হরতাল করেও গণজোয়ার ঠেকাতে পারছে না। তিনি বলেন, দুর্নীতি করতে করতে এখন রিজার্ভের অর্থ পর্যন্ত গিলে খেয়ে ফেলেছে। মানুষ এই দুর্নীতির হিসাব নেবে এবং নব্য এই স্বৈরাচারকে পালিয়ে যাবারও সুযোগ দেবে না। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, খালেদা জিয়াকে জেলে নেয়ার ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। কারণ এখন সারা বাংলাদেশ আপনাদের দুঃশাসনে কারাগারে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আপনার মনে রাখা উচিত বাংলাদেশের মানুষ দেশমাতাকে পীরের মতো ভালোবাসে। তিনি বলেন, আমাদের এখন প্রধান হবে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচা।

বিশেষ অতিথি নাজমুন নাহার বেবি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭ নভেম্বরকে বলেছেন সৈয়নিক হত্যা দিবস। আমি তার এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। তিনি কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে বলেন, পুলিশ নিজেই ককটেল ফোটায়, আর মামলা দেয় আমাদের কর্মীদের নামে। আমার নিজের বাড়িতেও একই অবস্থা করেছে। পুলিশের সামনেই আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী আমাদের বাড়িতে অবস্থান নেয় এবং হামলা করে কিন্তু মামলা দেয়া হয় আমাদের নামে, আর সাক্ষী রাখা হয় সেই সব সন্ত্রাসীদের, যারা অস্ত্র নিয়ে এসেছিলো। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের মানুষকে টিকিয়ে রাখতে হলে এই সরকার হটানোর বিকল্প নেই। এই সরকারকে হটাতে হবে এবং দেশ বাঁচাতে হবে।

প্রধান বক্তা গিয়াস আহমেদ বলেন, শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কারো বাণী পাঠ করেননি, তিনি নিজে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, যুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন। ওই সময় শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানিদের কাছে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তান চলে গিয়েছিলেন, আর আওয়ামী লীগের নেতারা ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন। দেশ স্বাধীন করে জিয়াউর রহমান আবারো ব্যারাকে ফিরে গিয়েছিলেন। সিপাহী জনতা তাকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে আবারো দেশের দায়িত্ব অর্পণ করেন। তিনি আরো বলেন, জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর লোক হয়েও বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ হলো গণতন্ত্র হত্যাকারী দল। শেখ মুজিবও গণতন্ত্র হত্যা করে একদলীয় শাসন কায়েম করেছিলেন। তার কন্যাও ভোট চুরি এবং ভোট ডাকাতি করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। তিনি আরো বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে আপসহীন নেত্রীর টাইটেল বাংলাদেশের মানুষই দিয়েছে। তিনি বলেন, স্বৈরাচার এরশাদকে আমরা হটিয়েছি, ১/১১-এর অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে তাদের পরাজয় নিশ্চিত করেছি। নব্য স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারেরও পতনে হবে আমাদের আন্দোলনের মাধ্যমে। শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

গেস্ট অব অর্নার মিজানুর রহমান মিল্টন ভূইয়া বলেন, ৭ নভেম্বর হচ্ছে জাতির মুক্তির সনদ। এই দিনেই আমরা স্বাধীনতা এবং দেশের সার্বভৌমত্ব পেয়েছি। এই দিনেই সিপাহী জনতা জিয়াউর রহমানকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে দেশের দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন। মাত্র কয়েক বছরে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তলাবিহীন ঝুলিকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলেন। তিনি আরো বলেন, দেশ এবং দেশের মানুষকে রক্ষা করতে হলে আমাদের অবশ্যই আরেকটি বিপ্লব করতে হবে। তবে আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি স্বৈরাচারী সরকারের দিন শেষ।

মাকসুদুল হক চৌধুরী বলেন, আমরা নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে চাই। তাদের হাতেই আগামীর নেতৃত্ব তুলে দিতে চাই। যে কারণে তাদের নেতৃত্বেই আজকের অনুষ্ঠান। অনেকেই তার এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন। কারণ এই অনুষ্ঠানে বিপুলসংখ্যক নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন এবং তারাই অনুষ্ঠান সফল করেন।

সভাপতি খোরশেদ আলম অনুষ্ঠানকে সফল করার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়।

শেয়ার করুন