০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, সোমবার, ৬:৩৬:৪৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্টিত , সহজ গ্রুপে ব্রাজিল - যুক্তরাষ্ট্র ডি গ্রুপে স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া


‘মুক্ত স্বাধীন’ খালেদা জিয়া কী নির্বাচন করবেন?
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০২-২০২৩
‘মুক্ত স্বাধীন’ খালেদা জিয়া কী নির্বাচন করবেন? খালেদা জিয়া


খালেদা জিয়াকে নিয়ে আইনমন্ত্রীর এক বক্তব্যে এখন তোলপাড়। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ১৯ ফেব্রুয়ারি রোববার জজদের এক ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম বলেছেন, ‘তার (খালেদা জিয়া) মুক্তির (২৫ মার্চ ২০২০ সনে) আদেশে এমন কোনো শর্ত ছিল না যে, তিনি (খালেদা জিয়া) রাজনীতি করতে পারবেন না। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ৪০১ ধারায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সাজা স্থগিত করেছেন। তিনি (খালেদা জিয়া) একজন স্বাধীন ব্যক্তি, তাই তার রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে কোনো বাধা নেই।’

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আরো বলেন, সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি যদি কোনো নৈতিক স্খলনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ২ বছর বা ২ বছরের বেশি কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন, তাহলে তিনি সাজা ভোগের পর ৫ বছরের মধ্যে কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। আনিসুল হক মূলত জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় মামলায় খালেদা জিয়ার ৭ বছরের এবং জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর কারাদণ্ড প্রসঙ্গে সাজা হওয়ার কথা বলেছেন। 

আইনমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে বিএনপিতেই নয়, জনসাধারণে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। যদি আইমন্ত্রীর কথাই সত্যি হয়, তাহলে একজন মুক্ত স্বাধীন মানুষ আর দশটা স্বাধীন মুক্ত মানুষের মত চলাফেরা বা বিদেশে যেতে পারবেন। 

অথচ খালেদা জিয়া প্রচণ্ডরকম অসুস্থ হওয়ার পর তাকে দেশের বাইরে নিয়ে চিকিৎসা দেয়ার জন্য তার ফ্যামিলি আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় তাদের আবেদনে সাড়া দেয়নি। ফলে বেশ কয়েকটি জটিল রোগে আক্রান্ত খালেদা জিয়াকে দেশেই চিকিৎসা নিতে হয়েছে। যা ছিল অপর্যাপ্ত। কারণ তার চিকিৎসকগণ বারবার বলেছেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। কারণ তার যে জটিল অসুখসমূহ, সেটা সম্মিলিত চিকিৎসা বাংলাদেশে নেই। তার জীবন সঙ্কটাপন্ন। কিন্তু সরকার তার আবেদনে সারা দেয়নি। আইনমন্ত্রীর কথা যদি যথার্থই হয়, তাহলে তো খালেদা জিয়ার সবধরনের সুযোগ সুবিধা যা একজন নাগরিক হিসেবে সবার অধিকার সেটা তো তিনি পাবেন। পাওয়ার কথা। কেন তিনি পেলেন না? তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন অন্যকথা। তাদের ভাষ্য দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। বাংলাদেশে যেমন বিএনপি একের পর এক শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছে, তেমনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নয়ন সহযোগী বা দাতা দেশসমূহ বাংলাদেশে একটি সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বারবার চাপ দিয়ে আসছেন। ক্রমশ সে চাপটা প্রকট আকার ধারণ করেছে। যা সর্বশেষ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সিনিয়র উপদেষ্টা ডেরেক শোলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সম্পূর্ণ স্বাধীন হওয়ায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আগামী সাধারণ নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে তাঁর দল দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করবে। তিনি বলেন, ‘আমি কখনোই ভোট কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চাই না।’  

প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এর আগে ডোনাল্ড লু সফর করে গেছেন। তার সঙ্গে দেখা সাক্ষাত হয়নি তার। কিন্তু ডোনাল্ড লু’র চেয়েও উপরস্থ কর্মকর্তা শোলে। যেহেতু মার্কিন প্রশাসন ও উন্নয়ন সহযোগীদের একটা চাপ রয়েছে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে, সে জন্যই ডেরেক শোলের সঙ্গে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী ওই কথা বলেছেন। যা গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারও হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অন্য দেশের একজন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তার কাছে নিজ দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে উপরোক্ত কথাগুলো বলার কথা নয়। যেহেতু তিনি বলেছেন, তার অর্থ বাংলাদেশের নির্বাচনের বিষয় নিয়ে ডেরেক শোলে প্রধানমন্ত্রীর মত জানতে চেয়েছেন বা ওই সংক্রান্ত আলোচনা হয়েছে। 

যা হোক, এতে করে সব দলের অংশগ্রহণ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে হয়তো খালেদা জিয়াও ওই নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। কারণ বিএনপির দাবি দাওয়ার মধ্যেও কিন্তু খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টা রয়েছে। সে কারণেই ডেরেক শোলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পরপরই আইমন্ত্রী খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে উপরোক্ত বক্তব্য প্রদান করেছেন। যা ইতিপূর্বে আর কেউ কখনই বলেনি। 

এদিকে খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের আইনী দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার। তার বিশ্লেষণ ও আইনী ব্যাখ্যায় খালেদা জিয়া যেহেতু মুক্ত ও স্বাধীন, রাজনীতিতে অংশ নিতেও কোনো বাধা নেই বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এবং তিনি যে সংবিধানের ধারা দেখিয়ে কিছুটা অ্যাডভান্স হয়ে খালেদা জিয়া কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলেছেন। তাই আইনমন্ত্রী যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রসঙ্গে সেটার তিনি (মাসুদ তালুকদার) বিরোধিতা করেছেন। সাংবিধানের ধারার ব্যাখ্যা দিতে গিয়েই তিনি বলেন, ‘২৫ মার্চ ২০২০ সালে সাজা স্থগিত করে ৬ মাসের জন্য যখন মুক্তি দেয়া হয়, এবং সেখানে দুটি শর্ত ছিল ম্যাডামকে বাসায় অবস্থান করতে হবে, দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। 

এরপর বিভিন্ন সময়ে রাজনীতিতে উত্তাপ তৈরি হয়েছে সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের প্রায় সব মন্ত্রী আর আইনমন্ত্রী মহোদয় তো হরহামেশা বলতেন, থ্রেড দিতেন যে, তার মুক্তির শর্তের যদি বরখেলাপ হয়, তাহলে মুক্তির আদেশ স্থগিত করে তাকে আবার জেলে নেয়া হবে। অর্থাৎ মানুষের কাছে একটি এমন একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, যে খালেদা জিয়া সরকারের আরোপিত ওই শর্তের বাইরে কোনো কিছুই করতে পারবে না। এর মধ্যেই সীমাবদ্ধতা ছিল। শুধু তাই নয়, কেউ কেউ এমনো বলতেন যে ম্যাডাম খালেদা জিয়া তো মুচলেকা দিয়ে বের (জেল থেকে) হয়েছেন। কেউ কেউ পার্লামেন্টে এ কথাও বলেছেন যে, তার পরিবারের কেউ কেউ মুচলেকা দিয়েছেন।’

জনাব তালুকদার বলেন, ‘ওনার (আনিসুল হক, আইনমন্ত্রী) বক্তব্য যদি বিশ্লেষণ করি তাহলে কী পাচ্ছি, যে এতোদিন সংসদে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রীরা যেসব কথা বলেছেন সেগুলো কি সঠিক ছিল তো? না কি আইনমন্ত্রীর এ বক্তব্যে আজ আমাদের কাছে সব পরিষ্কার হয়ে গেল। তাহলে তারা কী কারণে এসব কথা বলে আসছেন? নিতান্তই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এসব কথা বলেছেন। আইনমন্ত্রী আর কী বলেছেন, ম্যাডাম খালেদা জিয়া মুক্ত। তিনি স্বাধীন। দুটি শব্দকে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন। যেহেতু তিনি (খালেদা জিয়া) মুক্ত ও স্বাধীন। তাহলে তো তার (খালেদা জিয়ার) স্বাধীনভাবে সবকিছু করারই অধিকার আছে। মাননীয় আইনমন্ত্রীর বক্তব্য অনুসারে। এছাড়া আইনমন্ত্রী আরো বলেছেন যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কারো ব্যাক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেন না।’  

মাসুদ তালুকদার বলেন, ‘আমি মাননীয় আইনমন্ত্রীর কথায় ধরে নেব, কারণ তার কথা তো অযৌক্তিক ভাবার সুযোগই নেই। তাহলে তার বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে এ কথাটা দাঁড়ায় যে, আমরা (সরকার) এতোদিন যে কথাটা বলে এসেছিলাম, সেটা খালেদা জিয়া মুক্ত। আর মুক্ত খালেদা জিয়ার অবাধ চলাফেরা ও অবাধ স্বাধীনতার ওপর অন্যায়ভাবে হোক, আর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হোক, কিছুটা শর্ত আরোপ করেছিলেন। সরকারের কাছে এখন সেটা মনে হয়েছে যে সেটা অযৌক্তিক ছিল।

সে কারণেই আইনমন্ত্রী স্বীকার করে নিলেন, ম্যাডাম খালেদা জিয়া মুক্ত ও স্বাধীনতার ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। আর তিনি রাজনীতি করতে পারবেন বলার অর্থটা কী দাঁড়ায় যে, একজন মুক্ত মানুষ যা করতে পারেন, সেক্ষেত্রে খালেদা জিয়াও রাজনীতি করার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই এবং একজন মুক্ত মানুষ যা কিছু করার অধিকার রাখেন, সেভাবেই খালেদা জিয়াও  সবকিছু করার যোগ্যতা রাখেন। এ গেলো একটা। দ্বিতীয় কথা হলো-আইনমন্ত্রী আরো একটা কথা বলেছেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) নির্বাচন করতে পারবেন না।’ 

মাসুদ আহমেদ বলেন, ‘মাননীয় আইনমন্ত্রীর এ বক্তব্যের সঙ্গে আমি দ্বিমত প্রকাশ করছি। এক্ষেত্রে আমি উদাহরণ দিচ্ছি, নজির হিসেবে আমাদের দেশে যে বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত যে, বর্তমান সরকার অর্থাৎ এ আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর, ২০০৮ থেকে ২০১২ পর্যন্ত সরকারের যারা মন্ত্রী ছিলেন তাদের একের অধিক এমন দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর তাদের আপিল আদালতে চলমান ছিল। তারপর তারা সংসদ নির্বাচন করেছেন, মন্ত্রী হয়েছেন। এখন মজার ব্যাপারটা হলো, ম্যাডাম খালেদা জিয়া যখন নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করলেন, তখন তার মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশন বাতিল ঘোষণা করলেন। অর্থাৎ অবৈধ ঘোষণা করলেন। এখন আইন কী বলে? আইনমন্ত্রী সংবিধানের আর্টিকেল ৬৬ বাই সাবআর্টিকেল ২ কোড করেছেন। এই সাবআর্টিকেল ২-এ কী বলা আছে যে এই, যে কোনো ব্যক্তি যদি সাজাপ্রাপ্ত হন। তার সাজা যদি সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত নির্ধারিত হয় আদালত কর্তৃক, তাহলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। তাহলে এ কথাটা কী দাঁড়ায়, যে ম্যাডাম খালেদা জিয়ার সাজা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে ম্যাডাম খালেদা জিয়া আপিল করেছেন। আপিলের অর্থ হলো, বিচারে যে সাজা হয়েছে, আপিল করার পর সে মামলাটা ওপেন হয়ে যায়। অর্থাৎ ধরে নিতে হয় মামলাটির আবার বিচার চলছে। আর মামলা চলমান হওয়ার অর্থ দাঁড়ালো সাজা চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়নি। আপিল করার সঙ্গে সঙ্গে মামলা আবার ওপেন হয়ে গেছে। তাহলে আর্টিকেল ৬৬-এর সাবআর্টিকেল ২-এ অনুসারে সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্ট ম্যাডাম খালেদা জিয়ার এ মামলার সাজা হয়তো বহাল রাখবেন বা বাড়িয়ে দেবেন।’ 

তিনি বলেন, ‘ফলে ম্যাডাম খালেদা জিয়ার এ আপিল সর্বোচ্চ আদালতে এখন পেনডিং। আমি আরো ক্লিয়ার করছি, ম্যাডাম খালেদা জিয়ার আপিল যদি আপিল বিভাগ না মঞ্জুর করে দেন, খারিজ করে দেন, সেখানে যদি তার সাজার পরিমাণ দুই বছরের অধিক হয়, কমপক্ষে দুই বছরের অধিক হতে হবে। আর ম্যাডামের যদি আইনি প্রক্রিয়ার আর কোনো পথ না থাকে, অর্থাৎ সর্বোচ্চ আদালত যখন বলবে তার এ সাজা যথার্থ ও সঠিক এটাই বহাল থাকবে, কেবল তখনই তিনি (খালেদা জিয়া) আর্টিকেল ৬৬ সাবআর্টিকেল ২ অনুসারে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য হবেন।’

খালেদা জিয়ার আইনজীবী বলেন, ‘তাহলে বিষয়টা হলো এই যে ম্যাডাম খালেদা জিয়ার আপিল বা বিচারকার্য সর্বোচ্চ আদালত এখনও কনফার্ম করেননি। ওটা এখনও পেনডিং সর্বোচ্চ আদালতে। ফলে যেহেতু চূড়ান্তই করেনি সাজা সর্বোচ্চ আদালত তাই ‘ম্যাডাম খালেদা জিয়া চূড়ান্তভাবে সাজাপ্রাপ্ত’ সেটা আর্টিকেল ৬৬ সাবআর্টিকেল ২ অনুসারে বলা চলে না। যখন ম্যাডাম খালেদা জিয়ার সাজা চূড়ান্ত বলে সর্বোচ্চ আদালত ঘোষণা দেবেন তখনই কেবল বলা যাবে আর্টিকেল ৬৬ সাবআর্টিকেল ২ অনুসারে ম্যাডাম খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য অযোগ্য। 

সুতরাং, এখন যেমন আইনমন্ত্রী গ্রহণযোগ্য বক্তব্য দিয়েছেন যে খালেদা জিয়া মুক্ত ও স্বাধীন, তার রাজনীতি করার কোনো বাধা নেই, ঠিক পরে হলেও তিনি ম্যাডাম খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে সঠিকটাই বলবেন। অর্থাৎ একসঙ্গে সবকিছু ছাড় দিতে চাইছেন না। সে কারণেই তিনি হয়তো বলতে চাইছেন যে তিনি (খালেদা জিয়া) ইলেকশন করতে পারবেন না এমন একটা কথা বলে চাপ রেখে দিতে চাইছেন।’ 

মাসুদ তালুকদার আরো বলেন, ‘আসলে আমি যে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দিলাম এটা যাছাই বাছাই করার দায়িত্ব কিন্তু নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন কমিশনের। ফলে এ মুহূর্তে বিজ্ঞ আইনমন্ত্রী মহোদয় যেটা বলেছেন, সেটা গ্রহণযোগ্য না। ফলে সাংবিধানের ৬৬ আর্টিকেলের সাবআর্টিকেল ২ অনুসারে নির্বাচন কমিশন যাছাই বাছাই করে যেহেতু সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক চূড়ান্ত রায় আসে নেই, তাই অবশ্যই খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নিতে কোনো বাধা বিপত্তি থাকবে না।’

শেয়ার করুন