০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৩:৩৭:৩১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


জামায়াত কার স্বার্থে কি চায়?
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০৬-২০২৩
জামায়াত কার স্বার্থে কি চায়?


৫ জুন সোমবার ভোর ছয়টা। স্থান জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে মতিঝিল এলাকা। মোড়ে মোড়ে আইন শৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর কড়া পাহারা। সর্তক অবস্থায় রায়ট কার আর জলকামান। কোথায় কোথায় উঁচু ভবনের ছাদে দাঁডিয়ে দূরবিণ নিয়ে দূর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করছে বিশেষ বাহিনী। রাজধানী এ-কয়েকটি এলাকা ছাড়াও আরো কিছু সড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ছিল কঠোর পুলিশ পাহারা। এমনকি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিনবাজার এলাকায় ঢাকাগামী লেনে চেকপোস্ট বসিয়ে সকাল থেকেই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা। সন্দেহভাজন কোন গাড়ি কিংবা ব্যক্তিকে দেখলেই তল্লাাশি চালানো হচ্ছে। কারও গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে তাকে রাজধানীতে প্রবেশ করতে না দিয়ে উল্টোদিকে ঘুরিয়ে দিতে দেখা গেছে। ৫ জুন ভোর থেকেই রাজধানী ও তার আশপাশ জুড়ে এমন সর্তকতার কারণ ছিল জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ কর্মসূচি। তবে বেলা সাড়ে এগায়টা বাজতেই আইন শৃংখলা বাহিনী রাজধানীতে তাদের সর্তকাবস্থা সরিয়ে নেয়। রাস্তায় রাস্তায় জলকামান ও রায়ট গাড়িও সরিয়ে নেয়। কারণ জামায়াতে ইসলামী তাদের ৫ জুন সোমবারের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি স্থগিত করার ঘোষণা দেয় ঔইদিনে বেলা এগারটায়। এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মতিউর রহমান আকন্দ তাঁদের কর্মসূচি স্থগিত করার এই ঘোষণা দেন। এর পাশাপাশি জানান জামায়াত ১০ জুন (শনিবার) ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। এর কারণ হিসাবে দলটির নেতারা বলেছেন, পুলিশ যেহেতু আজ কর্মদিবস ও অফিস আদালত সবকিছু খোলা থাকার যুক্তি দেখিয়ে তাদের কর্মসূচির অনুমতি দেয়নি, সে কারণে জামায়াত আজকের কর্মসূচি স্থগিত করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আগামী শনিবার ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করবে। এর আগে জামায়াতকে সমাবেশ ও মিছিলের অনুমতি না দেওয়ার কথা জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ গত ৪ জুন রোববার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও পাঠিয়েছিল। তবে এর বিপরীতেও জামায়াত জানায় জামায়াত অনুমতি না পেলেও ৫ জুন রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করবেই। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার রাতে পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছিল, পুলিশের নিষেধ অমান্য করে আইনশৃঙ্খলার বিগ্ন ঘটিয়ে সমাবেশ করতে চাইলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে। অনুমতি ছাড়াই জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যে কোনো নৈরাজ্য ঠেকাতে রাজধানীর প্রবেশপথ আমিনবাজার ও বিরুলিয়া এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়েছে ঢাকা জেলা পুলিশ।  আর রাজধানীর কেন্দ্রে সেকারণেই ৫জুন রাজধানীতে সর্তক অবস্থান নেয় পুলিশ। 

হঠাৎ জামায়াতের এ্যাকশন কেনো?

রাজনীতির মাঠে জামায়াতের দীর্ঘদিনের মিত্র বা বন্ধু অন্যদিকে রাজনৈতিক জোটের অন্যতম শরিক বিএনপি বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে টানা ১৪ বছর ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছে। কখনওবা সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে। কখনও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তীব্র আন্দোলন করে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের অনেকেই বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে। দল অনেক নেতাকর্মী হারিয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি’র অভিযোগ অনেকে এখন পর্যন্ত গুমের খাতায় আছেন। এমন ইস্যুতে আন্দোলনে বিএনপি’র একের পর নেতাকর্মী কারাগারে যাচ্ছেন। বলা হয় জন্মের পর সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে বিএনপি। দলের নেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামে অনেকগুলো মামলা। রায় হয়েছে, সাজা হয়েছে। কারাগারে ছিলেন, জামিনে মুক্ত হয়ে এখন গৃহ অন্তরীণ। শারীরিকভাবেও অসুস্থ। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান লন্ডনে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল বিভিন্ন সময়েও বলেছেন, বিএনপির প্রায় ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর নামে লক্ষাধিক মামলা। তার নিজের নামে প্রায় ৮৬টি মামলা আছে। তারমধ্যে ৩৫টি মামলা হাইকোর্ট থেকে স্টে করেছে বলে জানান। সেগুলো আবার চালু করতে সরকার চেষ্টা করছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত কিছু মামলা স্টে করা আছে বলে গণমাধ্যমে। আর এত্তোসব ঘটনায় বিএনপি’র সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র বলে দাবিদার জামায়াতে ইসলামীর সব পর্যায়ের নেতাকর্মী ছিল নিশ্চুপ। এমনকি অতি সম্প্রতিও তাদের ভূমিকা সকলকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। মাত্র কয়েকমাস আগে রাজপথে বিএনপি যুগপৎ কর্মসূচি দিলেও জামায়াত সেখান থেকেও সরে দাঁড়ায়। পিছুটানই দেয় বলা চলে। এনিয়ে মাঠে প্রচুর আলোচনা আছে। আর সেই জামায়াত এখন কি মনে করে গত ৫ জুনে বিক্ষোভ করার কর্মসূচি দিলো? তাদের উদ্দেশ্যই বা কি? তারা কাকে রক্ষায় মূলত মাঠে তাদের অবস্থান জানান দিতে মাঠে নেমেছে? তারা কি করে এখন কার সাহসে মাঠে নামতে চায়? তার আগে দেখা যেতে পারে অতিসম্প্রতি ক্ষমতাসীন দলটি জামায়াতের নেয়া সর্ম্পকে কি কি বলেছেন..

জামায়াত প্রসঙ্গে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সাম্প্রতিক বক্তব্য

প্রায় সাত দিন আগে ঘোষণা দেয় যে ৫ জুন সোমবার বেলা ৩টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে বিক্ষোভ মিছিল করবে বলে ঘোষণা দেয় জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ। অন্যদিকে কর্মসূচি পালনের আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অনুমতি না পেলেও ৫ জুন সোমবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে বিক্ষোভ সমাবেশ কার ঘোষণা দেয় জামায়াতে ইসলামী। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অনুমতি চেয়ে দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, সমাবেশে বাধা দেওয়া মানে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বাধা দেওয়া, গণতন্ত্রের পথে বাধা দেওয়া। আর একর্মসূচি পালনের অনুমতি চাইতে গিয়েও তাদের কয়েকজন নেতা প্রথমে আটক হন। পুরো বিষয়গুলি নিয়ে দেখা যাক কে কি বলেছেন বিশেষ করে ক্ষমতাসীন মহল থেকে। ৫ জুনে জামায়াতের এমন কর্মসূচির ব্যাপারে সরকার কোনো সমাবেশে বাধা দিচ্ছে না উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, নির্বাচন কমিশন থেকে ঘোষিত অনিবন্ধিত সংগঠন জামায়াতে ইসলামী। তাই কর্মসূচি পালন করতে হলে তাদের অবশ্যই পুলিশের অনুমতি নিতে হবে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর চার নেতাকে আটকের ব্যাপারে তিনি বলেন, পুলিশের কাছে তাদের গোপন বৈঠকের তথ্য থাকায় ৫ জুন সোমবার বিকেলে চার নেতাকে আটক করা হয়। তবে এ বিষয়ে পরবর্তীতে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হওয়ায় ছেড়ে দেয় পুলিশ। এরও আগে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার করতে আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, জামায়াতের বিচারে সরকারের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই। ২০১৪ সাল থেকে দীর্ঘসময় ধরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার ঝুলিয়ে রাখার বিষয়ে সরকারের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আপনাদের (সাংবাদিকদের) এটা মনে হওয়াটাও তো আমাদের (আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার) জন্য দুঃখের। কারণ এই সরকারই কিন্তু মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করেছে এবং তারা (সাজাপ্রাপ্তরা) কিন্তু জামায়াতের হোতা ছিল, প্রতিষ্ঠাতা ছিল। সেই ক্ষেত্রে আপনারা যদি মনে করেন আমরা উদ্যোগী (বিচারে) নই, তাহলে সেটি আমাদের জন্য দুঃখজনক।

জামায়াত আসলে কি চায়?

৫ জুনের কর্মসূচি পালনে জামায়াতকে পুলিশের অনুমতি না দেওয়াকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার প্রয়োগে বাধা হিসেবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দেখাতে চায় বলে জানিয়েছের দলের নেতারা। দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাাহ মোহাম্মদ তাহের গণমাধ্যমে রোববারে রাতেই বলেছেন সমাবেশের অনুমতি না দেওয়া অসাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকারবিরোধী। জামায়াত শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল সমাবেশ করতে অনুমতি চেয়েছে। এখনও আশা করছি অনুমতি দেবে পুলিশ। নয়তো তাদের কার্যক্রম, মার্কিন ভিসা নীতি অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার প্রয়োগে বাধা হিসেবে গণ্য হবে। প্রশ্ন হচ্ছে জামায়াত কি মার্কিন ভিসা নীতির সুযোগটি এই সময়ে কৌশলে বাগিয়ে নিতে চায়। তারা কি মনে করে মার্কিনীরা তাদের পক্ষে কাজ করবে? জামায়াতের সাথে তাহলে কি মার্কিনীদের হট কানেকশান। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল বিষয়টিকে এতো সহজভাবে নিচ্ছে না। তারা মনে করেন জামায়াত আসলে মাঠে বিএনপি’র আন্দোলনকে বির্তকিত করতেই কোনো একটি শক্তিশালি পক্ষের হয়ে কাজ করছে। যার পেছনে অবশ্যই সরকারের সমর্থন আছে বলেই মনে অনেকের ধারণা। মুখে জামায়াতে ইসলামীকে অনিবন্ধিত সংগঠন বলে দাবি করলেও নানান কারণে দলটির সাথে বিভিন্ন ধরনের সর্ম্পক আছে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করেন। কেননা সরকারের আন্তরিকতা না থাকলে জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার মতো বিষয়টি এই সরকারের আমলে ফয়সালা করে নিতো পারতো। কিন্তু তারা এখনো তা ঝুলিয়ে রেখেছে সরকারেরই দীর্ঘ পরিকল্পনার অংশ হিসাবে বলে কেউ কেউ মনে করেন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, জামায়াতকে বাদ দিয়ে এবং একা রাজনৈতিক মাঠে রেখেই বিএনপি প্রায় অর্ধশত রাজনৈতিক দলেকে এক কাতারে এসেছে। এখন চলছে এসব দলগুলি সাথে বিএনপি’র যুগপৎ কর্মসূচি। অখচ এর ধারে কাছেও নেই জামায়াত। এমনকি বিভিন্ন বিভিন্ন ইসলামী দলগুলি ও মৌলবাদি শক্তি বলে জামায়াতকে এড়িয়ে চলছে। আর অন্যদিকে ইতোমধ্যে বিএনপি জামায়াতকে দূরে রেখে নিজেদেরকে একটি অসাম্প্রদায়িক দল হিসাবে ইমেজ গড়তে সক্ষম হয়েছে। এমন অবস্থাতে রাজনীতির মাঠে চলে আসে মার্কিন নয়া ভিসা নীতি। যার সবচেয়ে বেশি সুফল পেতে যাচ্ছে বিএনপি-এমনটাই ধারণা অনেকের। আর ঠিক এমন মুহূর্তে ঝোপ বুঝে কোপ মারার মতো জামায়াত রাজনৈতিক মাঠে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার ঘোষণা সব মহলেই বির্তকই সৃষ্টি করেছে। কেননা নির্বাচন ও আন্দোলন ইস্যুতে দুই মেরুতে বিএনপি ও জামায়াতের অবস্থান। বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার নীতিতে বিএনপি দিনের পর দিন কঠোর করতে হচ্ছে, অন্যদিকে জামায়াতের কর্মকান্ড এব্যাপারে নমনীয়। এর বাস্তব প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে চার সিটি করপোরেশনে কাউন্সিলর প্রার্থীতে। বিএনপির যুগপৎ আন্দোলন থেকেও সরে গেছে দলটি জামায়াত নির্বাচনী মাঠে অবস্থান করছে। অন্যদিকে ভোটে অংশগ্রহণ এবং সমাবেশের অনুমতি চাইতে গিয়ে গত ৫ জুন সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কার্যালয়ের ফটক থেকে জামায়াতের চার নেতা আটকের তিন ঘণ্টার মধ্যে ছাড়া পাওয়ায় নতুন আলোচনা তৈরি হয়েছে। এমনও শোনা যাচ্ছে আগামী সংসদ নির্বাচনেরও প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত। আর এজন্য বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি বিশৃংখল অবস্থা তৈরি করে মার্কিন ভিসা নীতির পাশাপাশি বিএনপি’র আন্দোলকে বির্তর্কিত করতেই জামায়াত মাঠে নেমেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ২৪ মে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছেন। এতে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ঔই দিনে বলেছেন, আজ আমি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সমর্থন করার জন্য ইমিগ্রেশন এন্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের ধারা ২১২ (এ) (৩) (সি) (৩ সি) এর অধীনে একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করছি। এসময় তিনি জানান, এই নীতির অধীনে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে। প্রশ্ন হচ্ছে জামায়াত কি এর সুযোগ নিতে চায়? এমন প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। গেলো কয়েক মাস আগে জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি অনুষ্ঠানে এসে বিএনপি’র একজন সিনিয়র নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন জামায়াত প্রসঙ্গে রেগে গিয়ে কিছু কমেন্ট করেছিলেন। সেই অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন এই বলে যে, ’এই জামায়াত বাংলাদেশকে আজকের এই জায়গায় এনেছে। এই জামায়াতের ফাজলামোর কারণে। একই অনুষ্ঠানে পাশে থেকে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। রাজনৈতিক মহলে এখন সত্যিই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জামায়াতের এমন আচমকা গর্জে উঠা দেশে আবার কি কোনো ফাজলামো পরিস্থিতি তৈরি হতে যাচ্ছে কি-না। স্বাধীনতা বিরোধী এই দলটি কি নতুন কোনো ন্যাস্টি গেমে নেমেছে? তবে কেউ কেউ মনে করেন মাঠে একটি নয়া ইসলামী জোট ধীরে ধীরে শক্ত অবস্থান নিচ্ছে। জামায়াত এটা ঠেকাতেও সরকারে সহায়তায় মরিয়া হয়ে উঠেছে কি তা সময় বলে দেবে।

শেয়ার করুন