যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান মাতিয়ে গেলেন এই সময়ের বাংলা গানের জনপ্রিয় শিল্পী অদিতি মুন্সী। সুরের ইন্দ্রজালে মোহিত করলেন শত শত দর্শক শ্রোতাদের। শিল্পীর পরিবেশনায় গানের মূর্ছনায় বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে নেচে গেয়ে আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠেন নারী-পুরুষ ও শিশুরা। গত ২৮ অক্টোবর রোববার বিকালে মিশিগানের ওয়ারেন শহরের কালীবাড়ি মন্দিরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন হালের জনপ্রিয় শিল্পী কলকাতার কীর্তন কন্যা অদিতি মুন্সী।
দুর্গাপূজা পরবর্তী উৎসব উদযাপনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যৌথভাবে আয়োজন করে বিচিত্রা ও কালীবাড়ি মন্দির কমিটি।
হলরুমের বাহিরে হালকা শীতের ইমেজ। প্রকৃতির রূপ বদলের সন্ধিক্ষণে মন্দিরের আশপাশের গাছপালার নানা রঙের ঝরাপাতাগুলো জমিনে যেন কীর্তন কন্যাকে স্বাগত জানাতে লাল গালিচায় পরিণত হয়েছে। বাইরে ঠান্ডা থাকলেও হলরুমের ভেতরটা শিল্পীর আগমনের অপেক্ষায় চারদিকে উষ্ণতা ছড়িয়ে পড়ে। অনুষ্ঠান শুরুর পূর্বেই হলরুমের সাত শতাধিক আসন দর্শকে পূর্ণ হয়ে যায়। আলো ঝলসানো সাজানো মঞ্চে বিকাল সাড়ে চারটায় দর্শকদের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে কালীবাড়ি মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি শ্যামা বি হালদার মঞ্চে কীর্তন কন্যার আগমনী বার্তা ঘোষণা করলে নারী শ্রোতারা শঙ্খ বাজিয়ে উলুধ্বনি দিয়ে শিল্পী অদিতি মুন্সীকে মঞ্চে বরণ করে নেয়। এ সময় মন্দির কমিটির সভাপতি শ্যামা বি হালদার শিল্পীকে পুস্পস্তবক প্রদান করে কালীবাড়িতে স্বাগত জানান। ভক্তিমূলক সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় অদিতি মুন্সীর পরিবেশনা। তারপর একে একে পরিবেশন করেন কৃষ্ণলীলা, কীর্তন, সিলেটি গান ও বাউল শাহ আব্দুল করিমের জনপ্রিয় গান। কীর্তনের শাখা-প্রশাখায় সুর আর কথার জাদুতে দর্শক কথোপকথনে গানে গানে শ্রোতাদের অন্য জগতে নিয়ে যান অদিতি মুন্সী। যেন শ্রোতারা গানের মাঝে প্রাণের সন্ধান খুঁজে পান। কীর্তন কন্যার আড়াই ঘণ্টার পরিবেশনা বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে সফল সমাপ্তি ঘটেভ তৃপ্তি নিয়ে ঘরে ফিরেন উপস্থিত দর্শক শ্রোতারা। অদিতি মুন্সীর গান উপভোগের কথা বলতে গিয়ে ওয়ারেন শহরের বাসিন্দা অসিত বরণ চৌধুরী বলেন, তার কণ্ঠে জাদু আছে। গল্পে গল্পে গানে গানে শ্রোতাদের অন্য জগতে নিয়ে যান এটা তার বড় গুণ। এতো বড়মাপের শিল্পী তার বিনয় প্রকাশ এই প্রজন্মের শিল্পদের অনেক কিছু শিখার আছে। শিল্পী অদিতি মুন্সী বলেন, বিদেশের মাটিতে বাংলা সংস্কৃতি যারা চর্চা করছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। এত দর্শক মনে হয়নি বিদেশ গান করছি।
এ বিষয়ে কালীবাড়ি মন্দির কমিটির সভাপতি শ্যামা বি হালদার বলেন, আমাদের ভক্তবৃন্দের চাহিদাকে আমরা প্রাধান্য দিয়ে থাকি। আগামীতেও আমরা এই ধারা অব্যাহত রাখবো।