০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৪:১০:৪৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


শেকড়ের সন্ধানে
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-১২-২০২৩
শেকড়ের সন্ধানে


আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম তাদের ব্যার্থতা নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থের কাছে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে বিসর্জন দেয়া।  যে আদর্শ এবং লক্ষ্য নিয়ে নিরস্ত্র নিরীহ বাংলাদেশিরা গণহত্যায় মত্ত হিংস্র পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনযুদ্ধ ,জীবন যুদ্ধে জয়ী হয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল তার প্রতিফলন নেই আজকের বাংলাদেশে। দুর্নীতিগ্রস্থ ,অসৎ জনগোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলো হাইজ্যাক করে নিয়ে দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে দেশকে মহাসংকটে ফেলেছে।


বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে প্রবাসী সরকার নানা মত পথের পারস্পরিক বিপরীত মুখী স্রোতকে নিয়ন্ত্রণ করে যেভাবে যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও তার স্বরূপ সঠিকভাবে উন্মোচিত হয়নি। মুক্তিযুদ্ধে কিন্তু ৯৮% বাংলাদেশী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে অবদান রেখেছে। সেখানে  কিন্তু মত ,পথ ,পুরুষ ,মহিলা ,ধর্ম ,বর্ণের বিভাজন ছিল না। তবে শুরু থেকেই মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ ,যুব লীগ ,ছাত্রলীগ নেতৃত্রের একটি অংশ বঙ্গবন্ধুর আদর্শে পরিচালিত মুজিবনগর সরকারের কর্তৃত্ব অস্বীকার করে নানা সংকটের সৃষ্টি করে।  আওয়ামী নেতৃত্বের  একটি অংশ কয়েকজনের সুবিধাবাদী আমলাদের সঙ্গে জোট বেঁধে আত্মবিনাশী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়. এই চক্রের ষড়যন্ত্রের কারণেই মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাজউদ্দিন আহমদের ব্যাবধান সৃষ্টি হয়।  এক সময় সুবিধাবাদী চক্র সফলভাবে মুক্তিযুদ্ধে প্রধান নেতৃত্ব দানকারী সৈয়াদ তাজউদ্দিন আহমেদ এবং তার সাথে ঘনিষ্ট ভাবে কাজ করা দেশপ্রেমিক গোষ্ঠীকে অপসারণ করতে সফল হয়।


এই চক্রের হোতাদের ষড়যন্ত্রে ১৫ অগাস্ট কালো রাতে পরিবার পরিজন সহ বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড এবং ৩ নভেম্বর  জেল খানায় চার প্রধান নেতার লজ্জাজনক হত্যাকান্ড ঘটে। স্বাধীনতা থমকে দাঁড়ায়।  ১৯৭৫ -১৯৯০ ধীরে ধীরে স্বাধীনতার মূল আদর্শ বিচ্যুত হয়ে পরে দেশ। আর এখন মুজানা জরুরি। মুক্তিযুদ্ধ একটি দল এবং কিছু মানুষের পারিবারিক বা ব্যাক্তিগত সম্পদে পরিণত। আমি তরুণ প্রজন্মকে আহবান জানাই বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান করে প্রকৃত তথ্য আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে।


১৯৭১ নয় মাস রক্তস্নাত মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকারের ঘনিষ্ট কয়েকজন এখনো জীবিত আছেন। কলকাতায় কিছু মানুষের সঙ্গে আমার ২০১৮,,২০১৯  সেখানে সফরের সময় যোগাযোগ হয়েছে। বেশ কিছু মূল্যবান কিন্তু অপ্রকাশিত তথ্য দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। শুধুমাত্র প্রবাসী সরকারের দিনলিপি ,চ্যালেঞ্জ এবং পরিণতি নিয়েই বিশাল উপাখ্যান রচিত হতে পারে। সেখান থেকেই বঙ্গবন্ধু হত্যা, জেল হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাদের চিন্নিত করা যেতে পারে। বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে তাজউদ্দীন আহমেদকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে প্রথম সাফল্য পেয়েছিলো মীরজাফর গোষ্ঠী। নাহলে বাংলাদেশের ইতিহাস ভিন্ন ভাবে রচিত হত। হোটেল শ্রীনিকেতনে  থেকে আনন্দ ফুর্তিতে দিন কাটানো তথাকথিত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বরূপ উন্মোচিত হত।


পড়ছিলাম সিদ্দিক সালিকের লেখা "উইটনেস টু সারেন্ডার " জেনারেল নিয়াজির আত্মসমর্পনের দলিল।  সেদিন সৌভাগ্যক্রমে আমিও উপস্থিত ছিলাম। আমার মনে আজ প্রশ্ন আছে কেন যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসম্পর্পনের সময় বাংলাদেশের সেনাপতি জেনারেল ওসমানী উপস্থিত ছিলেন না। কেন তরীঘড়ি করে যুদ্ধ শেষ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে নিরাপদে দেশ ত্যাগের সুযোগ করে দেয়া হলো? সবকিছু জানা জরুরি।

শেয়ার করুন