৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ৬:৫৫:০৩ অপরাহ্ন


এরা বেনজির-দরবেশ-এস আলমের সরকার : সাকি
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০৫-২০২৪
এরা বেনজির-দরবেশ-এস আলমের সরকার : সাকি পুলিশি বাধায় জোনায়েদ সাকি


গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জননেতা জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ চায় বাংলাদেশের ব্যাংক ও ব্যাংকের সম্পদ সুরক্ষিত থাকুক। কিন্তু যারা ব্যাংকগুলোকে ভেতর থেকে ফোকলা বানিয়ে ফেলতেছে। আমরা এসেছি সেগুলোর প্রতিবাদ করতে। আমরা পুলিশ বা সরকারের বাধাকে মানি না। আর, যখন একটা দেশে ‘সরকার বৈধ’ হয় তখন ‘আইন’ মানার প্রশ্ন আসে কিন্তু এই ‘সরকার অবৈধ’, এই সরকারের সমস্ত নির্দেশ অবৈধ, এই সরকারের কোনো নির্দশ মানতে জনগণ বাধ্য নয়। এই সরকার যত আইনই দেখাক, মানুষের ভোটেও তো এরা নির্বাচিত নয়।

গত ২১মে মঙ্গলবার ‘ব্যাংকলোপাট ও অর্থপাচার রুখে দাঁড়ান, ঋণখেলাপি ও অর্থপাচারকারিদের তালিকা প্রকাশ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন, জবাবদিহিতা দিতে হবে’ এই দাবিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনতিদূরে ওভারব্রিজের পাশে বিক্ষোভ-সমাবেশে তিনি একথা বলেন। জোনায়েদ সাকি আরো বলেন, দেশের সমস্ত সম্পদ দখল হয়ে যাচ্ছে সেটা দেশবাসীকে পরিষ্কার করে জানাতে আজ আমাদের এই বিক্ষোভ। ব্যাংক লোপাটকারীদের নাম দেশের জনগণকে জানাতে হবে। যদি কোনো ব্যবস্থা না নেয়া হয় আমরা এখানে আবার বিশাল বিক্ষোভ নিয়ে আসবো।

গত পনের বছরে ঋণখেলাপি কত বেড়েছে? আপনারা বলেন, ঋণখেলাপির পরিমাণ ১লক্ষ ৫৬ হাজার কোটি টাকা কিন্তু সেটা আসলে চার লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। ব্যাংকের পরিচালকরা পরস্পর পরস্পরের ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়। কিন্তু ঋণখেলাপিদেরকে পুনঃতফসিলের মধ্য দিয়ে আবারো ঋণ দিয়ে দেয়। ঋণ ফেরত দেয়ার চাপ না দিয়ে বাংলাদশে ব্যাংক সরকারের নির্দেশে নাকি ঋণ মাফ করে দেয়। আসলে এরা নানারকম ফন্দিফিকির করে ঋণ মওকুফ করে দেয়। জনগণের কাছে এগুলোর কোনো পরিসংখ্যান নেই। জনগণের সঞ্চিত টাকাকে লুট করে নিয়ে যাচ্ছে কতিপয় ‘চিহ্নিত’ লুটেরা। অন্যদিকে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সাথে সরকার মিলিয়ে দিয়ে নতুন ব্যাংকলোপাটের পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। দুর্বল ব্যাংকের লোপাটকারী পরিচালকদের শাস্তিতো হয়নি বরং নতুন প্রমোশন পেয়ে তারা সবল ব্যাংকের পরিচালক হচ্ছে। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সমস্ত কিছুর হিসেব আছে, লুটপাটের পরিমাণেরও হিসাব আছে- আমরা সকল ঋণখেলাপির হিসাব চাই।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বে একটি মিছিল বাংলাদেশ ব্যাংক অভিমুখে আসতে থাকলে পুলিশ বাধা ও হামলে পড়ে মিছিলের পথরোধ করে। গণসংহতি আন্দোলনের মূল জমায়েত তখন রাস্তার পাশে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত করে।

এ সময়ে বিক্ষোভ ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তৃতা করেন গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সমম্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য হাসান মারুফ রুমী, তাসলিমা আখ্তার, মনির উদ্দীন পাপ্পু, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, দীপক রায়, তরিকুল সুজন এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলিফ দেওয়ান, অঞ্জন দাস, মিজানুর রহমান মোল্লা, ঢাকা দক্ষিণের সদস্য সচিব সেলিমুজ্জামান প্রমুখ।

সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা বলেন, সীমাহীন দুর্নীতি, ব্যাংক লোপাট, ঋণ অবলোপনের নামে পুনরায় লোপাট এবং সে সমস্ত জনগণের টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করে দেশের রিজার্ভ পর্যন্ত খেয়ে ফেলেছে। এরা বড় বড় প্রকল্পের নামে বড় বড় দাও মারছে। এমন কোনো পদ্ধতি ও জবাবদিহিতা নেই যার মধ্য দিয়ে টাকালোপাট বন্ধ হবে। কিংবা টাকালোপাটকারী চিহ্নিত হওয়ার মধ্য দিয়ে শাস্তি পাবে। পৃথিবীর কোন কোন দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেয়া হয়, কি কতটুকু দেয়া হয় না- সেটা আমরা জানি। ওবায়দুল কাদের সাহেব উলটা-সিধা কথা বলা বন্ধ করেন। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ভোট ডাকাত এই সরকার উন্নয়নের নাম দিয়ে দেশের টাকা নয়ছয় করে বিদুৎকেন্দ্রের মালিকদের পকেটে তুলে দিয়েছে। দেশে গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে, বাজারকে অস্থিতিশীল করে জনগণের জীবনে নাভিশ্বাস নিয়ে এসেছে। যেহেতু সরকার জোরপূর্বক ক্ষমতায় বসে আছে সেহেতু জনগণের প্রতি তাদের বিন্দুমাত্র দায়বদ্ধতা নেই।

নেতৃবৃন্দ জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশকে সামগ্রিক বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষার জন্য জনগণের রাজনৈতিক শক্তিকে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য নির্বাচিত করতে হবে। আমরা গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় এই অবৈধ সরকারের পদত্যাগ চাই। জনগণের ব্যাপক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এদের ক্ষমতা থেকে নামাতে হবে। জনগণের বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে। জনগণের সম্মিলিত জাগরণের মুখে ফ্যাসিবাদের পতন অবশ্যম্ভাবী।

শেয়ার করুন